প্রকাশ: রোববার, ২৭ জুলাই, ২০২৫, ১:৩১ এএম আপডেট: ২৭.০৭.২০২৫ ২:৩০ এএম |

দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পেন্নাই বাসস্ট্যান্ডে ২৩ মামলার আসামি মোঃ আল-মামুন ওরফে মামুন সম্রাটকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শুক্রবার (২৫ জুলাই) রাত আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পেন্নাই বাসষ্ট্যান্ডে কুমিল্লামুখী লেনে এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত আল-মামুন ওরফে মামুন সম্রাট কুমিল্লা জেলার তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের শোলাকান্দি গ্রামের মোশাররফ হোসেন ওরফে মুকবুল মেম্বারের ছেলে। সে গৌরীপুর বাজারের পাশে ভুলিরপাড় এলাকায় পরিবার নিয়ে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন।
দাউদকান্দি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ জুনায়েত চৌধুরী বলেন, ‘শুক্রবার রাতে আল মামুন তিন নারীকে সঙ্গে নিয়ে কক্সবাজার যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে একটি বাসে ওঠেন। বাসটি গৌরীপুর স্টেশনে থামলে তিনি পানি কিনতে নিচে নামেন। ঠিক তখনই ৩-৪ জন দুর্বৃত্ত ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মামুনের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে।
তিনি জানান, মামুন ৩ নারীসহ বাসে কক্সবাজার যাওয়া ও গৌরীপুর বাসষ্ট্যান্ডে গাড়ি থেকে নামার পরিকল্পনার বিষয়ে হয়তো আগেই জানতো দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় ৩ নারীকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ৩ নারীর একজন মুক্তা আকতার নিজেকে মামুনের স্ত্রী পরিচয় দিয়েছেন। বাড়িতেও তার স্ত্রী সন্তান আছে।
২৬ জুলাই শনিবার সকালে ওই ৩ নারীকে থানায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। নারীকে নিয়ে মামুনের কক্সবাজার যাওয়ার খবর আগে থেকেই কীভাবে দুর্বৃত্তরা জেনেছে সে বিষয়টি সামনে রেখে তদন্ত চলছে।
হত্যাকাণ্ডটি পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। ঘটনাস্থলের কিছু সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। তবে দুর্বৃত্তদের মুখে মাস্ক থাকায় শনাক্ত করা যাচ্ছে না।তবে পুলিশের তথ্য মতে, আল মামুনের বিরুদ্ধে দাউদকান্দি, তিতাসসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, মাদক ও চাঁদাবাজিসহ মোট ২৩টি মামলা রয়েছে।
এদিকে মামুনের এমন মৃত্যুর সংবাদে শনিবার গৌরীপুর বাজার ও বাস স্ট্যান্ডে মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক মিষ্টি বিতরণকারীরা জানান, নাম আল মামুন হলেও এলাকায় তিনি মামুন সম্রাট নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। তিতাস ছাড়াও দাউদকান্দির গৌরীপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে খুন, চাঁদাবাজি, টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র ও মাদক ব্যবসায়সহ কিশোর গ্যাং পরিচালনা করতেন। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের পদে না থাকলেও যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সে সরকারের নেতাদের আশ্রয়ে এলাকায় তিনি ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতেন।
মানুষকে ভয় ভীতি দেখিয়ে তাদের অর্থ সম্পদ হাতিয়ে নিতেন। তার আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে থাকত এলাকাবাসী। আজ তার মৃত্যুতে এলাকাবাসী স্বাচ্ছন্দ বোধ করছে। আজ আমরা আনন্দিত। তাই খুশিতে মিষ্টি বিতরণ করছি।