ভারতের
দ্বিতীয় ইনিংসেও শেষের দিকের ধসে যে সুযোগ তৈরি হয়, সেটা পুরোপুরি কাজে
লাগাল ইংল্যান্ড। হেডিংলিতে রান তাড়ার দারুণ সব গল্পে যোগ হলো আরেকটি। বেন
ডাকেটের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর জো রুটের দৃঢ়তায় অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার
ট্রফিতে এগিয়ে গেল বেন স্টোকসের দল।
হেডিংলিতে মঙ্গলবার প্রথম টেস্টের
পঞ্চম ও শেষ দিনের তৃতীয় সেশনে ৫ উইকেটে জিতেছে ইংল্যান্ড। জয় দিয়ে টেস্ট
চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্রও শুরু হলো তাদের।
জয়ের জন্য শেষ দিন ৩৫০ রান
প্রয়োজন ছিল ইংল্যান্ডের, ভারতের ১০ উইকেট। ছিল বৃষ্টির চোখ রাঙানি। সব
মিলিয়ে সবরকম ফলেরই সম্ভাবনা ছিল। ডাকেটের চমৎকার ইনিংসের পর রুটের
দায়িত্বশীল ইনিংসে শেষ পর্যন্ত সহজ জয়ই পেল স্টোকসের দল।
প্রতিপক্ষকে
সাড়ে তিনশর বেশি রানের লক্ষ্য দেওয়ার ৬০ ম্যাচে এ নিয়ে কেবল দুইবার হারল
ভারত। আগের হারটিও ছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। ২০২২ সালে এজবাস্টনে সেই
ম্যাচে ৩৭৮ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৭ উইকেটে জিতেছিল ইংলিশরা।
সকালে ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার ছিলেন সাবধানী। জাসপ্রিত বুমরাহ ও মোহাম্মদ সিরাজের বলে কোনো ঝুঁকি নেননি তারা।
দুই পেসার আক্রমণ থেকে সরে যাওয়ার পর সহজেই রান করতে থাকেন দুই ওপেনার। লাঞ্চ পর্যন্ত তাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারেননি ভারতীয় বোলাররা।
৯৯
বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে উদ্বোধনী জুটি। এরপর গতি বাড়িয়ে একশতে যায় কেবল ১৪৯
বলে। বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে ১২১ বলে তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ডাকেট।
১৫
বছরের মধ্যে ইংল্যান্ডের প্রথম ওপেনার হিসেবে টেস্টর চতুর্থ ইনিংসে
সেঞ্চুরি করেন ডাকেট। সবশেষ এই কীর্তি গড়েছিলেন অ্যালেস্টার কুক, ২০১০ সালে
বাংলাদেশের বিপক্ষে মিরপুরে।
১১১ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে বেশিদূর যেতে
পারেননি ক্রলি। তাকে ফিরিয়ে ১৮৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন প্রাসিধ কৃষ্ণা।
পরের ওভারে অলি পোপকেও বিদায় করেন তিনি।
নিজের মতো করে খেলে এগিয়ে যেতে থাকেন ডাকেট। পরপর দুই বলে তাকে ও হ্যারি ব্রুককে ফিরিয়ে ভারতের আশা জাগান শার্দুল ঠাকুর।
১৭০ বলে ২১ চার ও ১ ছক্কায় ১৪৯ রান করে কাভারে ক্যাচ দেন বাঁহাতি ওপেনার ডাকেট। গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান ব্রুক।
২৫৩
রানে ৪ উইকেট হারানো ইংল্যান্ডকে সেখান থেকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান রুট।
পঞ্চম উইকেটে অধিনায়ক স্টোকসের সঙ্গে তিনি গড়েন ৪৯ রানের জুটি।
৩৩ রান
করে স্টোকসের বিদায়ের পর উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান জেমি স্মিথের সঙ্গে
অবিচ্ছিন্ন ৭১ রানের জুটিতে বাকিটা সারেন রুট। ৬ চারে ৮৪ বলে ৫৩ রানে
অপরাজিত থাকেন তিনি। ছক্কায় ম্যাচ শেষ করে দেওয়া স্মিথ ৫৫ বলে করেন ৪৪ রান।
প্রথম
ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া বুমরাহ এবার কোনো উইকেট পাননি, সিরাজও উইকেটশূন্য।
দুটি করে উইকেট নেন শার্দুল ও কৃষ্ণা। আগামী ২ জুলাই বার্মিংহ্যামে শুরু
হবে দ্বিতীয় টেস্ট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত ১ম ইনিংস: ৪৭১
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৪৬৫
ভারত ২য় ইনিংস: ৩৬৪
ইংল্যান্ড
২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৭১, আগের দিন ২১/০) ৮২ ওভারে ৩৭৫/৫ (ক্রলি ৬৫, ডাকেট
১৪৯, পোপ ৮, রুট ৫৩, ব্রুক ০, স্টোকস ৩৩, স্মিথ ৪৪; বুমরাহ ১৯-৩-৫৭-০,
সিরাজ ১৪-১-৫১-০, জাদেজা ২৪-১-১০৪-১, কৃষ্ণা ১৫-০-৯২-২, শার্দুল ১০-০-৫১-২)