বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫
১২ আষাঢ় ১৪৩২
জুলাই স্মৃতি উদযাপনে 'কুবির ১১ জুলাই’ অন্তর্ভুক্তির দাবী
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন, ২০২৫, ১:৪৪ এএম আপডেট: ২৬.০৬.২০২৫ ২:০২ এএম |


   জুলাই স্মৃতি উদযাপনে  'কুবির ১১ জুলাই’ অন্তর্ভুক্তির দাবীনিজস্ব প্রতিবেদক: জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আগামী ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে আয়োজিত হতে যাচ্ছে ‘জুলাই স্মৃতি উদযাপন’। অনুষ্ঠানমালার হাইলাইটসে আন্দোলন চালকালীন '১১ জুলাই সারাদেশে প্রথম শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধে হামালার শিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা- চট্টগ্রাম মহাসড়ক ব্লকেড'কে অন্তর্ভুক্তির দাবী জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন- কুমিল্লা জেলা শাখা ও কুমিলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
‘জুলাই স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালা’ নামে ৩৬ দিন ধরে এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করবে সরকার। মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের ফেইসবুক পেইজের এক পোস্টে দিন অনুযায়ী অনুষ্ঠানের সূচি ঘোষণা করা হয়। এসব অনুষ্ঠানসূচি তালিকাভুক্ত করে একটি বিশেষ ক্যালেন্ডারও প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালায় ১১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা ও মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ। তারা দাবি করেন, জুলাই আন্দোলনে ১১ জুলাই দিনটিতে সারাদেশে কুমিল্লায় শিক্ষার্থীরা প্রথম পুলিশী হামলার শিকার হয়েও মধ্যরাত অবধি মহাসড়কে আন্দোলন চালিয়ে যায়। ওইদিন হামলায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন আহতও হয়।
১১ জুলাই পুলিশি হামলায় হাত ভেঙে যায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সমন্বয়ক মো. এমরানের। তিনি বলেন, ‘অন্তর্র্বতীকালীন সরকার আগামী ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত জুলাই স্মৃতি উদযাপন অনুষ্ঠানমালা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানমালার ক্যালেন্ডারে কই সেই ১১ জুলাই? যেদিন সর্বপ্রথম হামলা হয় কুমিল্লা তথা আমাদের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর এবং এই জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। স্বৈরাচার পুলিশ বাহিনী সেদিন আমাদের ওপর নির্মম হামলা চালিয়েছিল, যা সমগ্র বাংলাদেশ দেখেছিল। আমিসহ অসংখ্য কুবি শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল সেদিন। হামলার পরবর্তীতে সারা বাংলাদেশে সকলের কণ্ঠে আওয়াজ ছিল, "কুবিতে হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই! আমার ভাই আহত কেন প্রশাসন জবাব চাই!" অথচ কই সেই ১১ জুলাইয়ের মত ঐতিহ্যবাহী কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিনটি?’
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও কুমিল্লা জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আরাফ ভূইয়া বলেন, ‘যদি এক কথায় বলি আমরা হতাশ! গত ১০ মাসে আমরা এক ডজনের বেশি প্রোগ্রাম করেছি যেখানে জুলাইয়ের সম্মুখ যোদ্ধা এবং বর্তমান সরকারের একাধিক উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। প্রতিটি প্রোগ্রামে আমরা ১১ জুলাইয়ের প্রথম পুলিশি আক্রমণ, ১২ জুলাইয়ের ছাত্রলীগের প্রথম আক্রমণ এবং ১৮ জুলাইয়ের দীর্ঘ ৬ ঘণ্টা বুলেটের সামনে বুক চিতিয়ে লড়াই করার ইতিহাস উল্লেখযোগ্যভাবে বলেছি। একাধিকবার আলাদা করে বলছি যেন ১১ জুলাইকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু সেটা এখনো দেয়া হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সন্দেহ করছি, তারা হয়তো জুলাইয়ের ইতিহাস ঢাকা কেন্দ্রিক রাখতে চায়। তাদের এই ইতিহাস বিকৃতি এবং ইতিহাসকে ঢাকা কেন্দ্রিক ফ্রেমিং করার অপচেষ্টা আমাদের ব্যথিত করেছে। আমরা কুমিল্লাকে অন্তর্ভুক্ত করার জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। কুমিল্লার বুক চিতিয়ে লড়াই করার ইতিহাস হারিয়ে যেতে দিব না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা জেলার আহ্বায়ক মুহাম্মদ সাকিব হুসাইন বলেন, ১১ জুলাই! জুলাই বিপ্লবে যে দিনটিতে সারা বাংলাদেশে প্রথম হামলা কুমিল্লায় হয়। এবং প্রথম প্রতিরোধও কুমিল্লা থেকে শুরু হয়। সেদিন আমরা রাত ১১:৪৫ পর্যন্ত ঢাকা চট্টগ্রাম ব্লকেড করেছিলাম।আমাদের উপর হামলার প্রতিবাদে সারাদেশে সেদিন এবং পরেরদিন প্রোগ্রাম ঘোষণা করে পুরো বাংলাদেশ। "কুমিল্লায় হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই"। তার পরের দিন অর্থাৎ ১৩ জুলাই হাসনাত আব্দুল্লাহ ভাই এবং সার্জিস আলম ভাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেন। ১১ তারিখ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয় এবং পরে আমরা তিনজন কুমিল্লার এসপি-এর সাথে এ বিষয়ে অভিযোগ করি এবং আলোচনা হয়। এমনকি এমন্যাস্টি ইন্টার্নেশনাল এ হামলার প্রতিবাদ জানায়। তাহলে কেন এ দিনটিকে বাদ দিয়ে জুলাই কেন্দ্রীক পোগ্রাম ঘোষণা করা হলো? কিন্তু জুলাই বিপ্লবের এমন তাৎপর্যপূর্ণ দিনটিকে কেন বাদ দেয়া হলো! অথচ কথা ছিল, জুলাই বিপ্লবে প্রথম আক্রমণ এবং প্রথম প্রতিরোধ দিবস হিসেবে পালন করা। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ দিনটিকে এবং সেই স্থানটিকে যথাযথ মর্যাদাস্থানে প্রতিস্থাপন করার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলদের অনুরোধ করছি।
জুলাই আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, কুমিল্লা মহানগরের সদস্য সচিব মুহাম্মাদ রাশেদুল হাসান বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শুরুটা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনা থেকে কিন্তু এই আন্দোলনের প্রথম হামলার শিকার হয় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ১১ জুলাই। পরদিন ১২ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমার সহযোদ্ধা ভাই-বোনেরা স্লোগান তুলেছিল—কুবিতে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই! কিন্তু দুঃখজনক বিষয়, আজকে প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে জুলাই স্মৃতি উদযাপনের অনুষ্ঠানসূচিতে ১১ জুলাইয়ে কুমিল্লার অবদানকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। বিষয়টি ছাত্র উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে জানানো হয়েছে। আশা করি এই বিষয়ে শীঘ্রই তার মতামত জানতে পারবো।'














সর্বশেষ সংবাদ
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু আজ
ঘরেই জন্মাচ্ছে এডিস মশার লার্ভা
অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন কুমিল্লার কৃতি সন্তান ডাঃ মহিউদ্দিন মাসুম
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘এক্সকিউজ’ দেয়ায় ট্রেনিংপ্রাপ্ত : হাসনাত আব্দুল্লাহ
জুলাই স্মৃতি উদযাপনে 'কুবির ১১ জুলাই’ অন্তর্ভুক্তির দাবী
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
রাইস কুকারে রান্না করতে গিয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু
কুমিল্লায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের পর গ্রেপ্তার ৬
কুমিল্লায় এ বছর এইচএসসিতে ঝরে গেছে ২৫ হাজার শিক্ষার্থী
কুমিল্লায় ৬ হাজার ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গা জব্দ, আটক ১
কুমিল্লায় ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু, স্ত্রী হাসপাতালে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২