ক্রিকেট যখন নাটকীয়তা ছুঁয়ে যায়, তখন রেকর্ড নিজে থেকেই গড়ে ওঠে। স্কটল্যান্ডে চলমান ত্রিদেশীয় সিরিজের একটি ম্যাচ যেন তারই উজ্জ্বল প্রমাণ। গ্লাসগোতে সোমবার (১৬ জুন) অনুষ্ঠিত নেদারল্যান্ডস ও নেপাল ম্যাচে যা ঘটল, তা শুধু স্মরণীয় নয়; টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের পাতায় চিরকাল স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কারণ, এক ম্যাচেই দেখা মিলল তিন-তিনটি সুপার ওভারের, যা এই ফরম্যাটে এই প্রথম।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট করে ডাচরা তোলে ১৫২ রানের লড়াকু সংগ্রহ। নেপালও হাল ছাড়ে না। শেষ ওভারে প্রয়োজন পড়ে ১৬ রান। যা তুলেই ম্যাচকে তারা ঠেলে দেয় প্রথম সুপার ওভারে। সেখানেও নাটক কম নয়। নেপালের কুশল ভুর্তেল মেরে বসেন দুটি ছক্কা আর এক চার। তুলে নেন ১৯ রান। নেদারল্যান্ডসও জবাবে তুলে নেয় সমান রান, মাইকেল লেভিট ও ম্যাক্স ও’ডাউডের সাহসী ব্যাটে আবারও সমতা!
এরপর আসে দ্বিতীয় সুপার ওভার। লেভিট আবারো ছক্কা হাঁকান, ও’ডাউড শেষ দুই বলে ছক্কা ও চার। তাতে দল তোলে ১৭ রান। নেপালও দমে না। রোহিত পাউডেল প্রথম বলেই ছক্কা, দীপেন্দ্র এয়ারির ব্যাটে চারের পর শেষ বলে দরকার পড়ে ৭ রান। এয়ারি ছয় মেরে আবারও সমতা ফেরান! ম্যাচ ঢুকে পড়ে তৃতীয় সুপার ওভারে, এক অবিশ্বাস্য স্ক্রিপ্টে।
তবে তৃতীয় সুপার ওভারে ভাগ্য বদলায়। নেদারল্যান্ডসের অফস্পিনার জ্যাক লায়ন-ক্যাশে ম্যাচের রূপান্তর ঘটান। মাত্র দুই বলেই দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নেয়ার পর নেপাল কোনো রান সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে নেদারল্যান্ডসের সামনে মাত্র এক রান লক্ষ্য ছিল। মাইকেল লেভিট সেই রান তোলার জন্য প্রথম বলেই লং অন থেকে বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে অসাধারণ এক জয় উপহার দেন।
এটি কেবল একটি ক্রিকেট ম্যাচ ছিল না, বরং এটি ছিল উত্তেজনা, ধৈর্য্য এবং মনোবলের এক অসাধারণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। যা বিশ্ব ক্রিকেটের ইতিহাসে অনন্য স্থান করে নিলো। নেপাল ও নেদারল্যান্ডসের এই দুর্দান্ত লড়াই ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে দীর্ঘদিন স্মরণীয় হয়ে থাকবে।