কুমিল্লার একটি স্কুলের এডহক কমিটির নামের তালিকায় ইউএনও’র পছন্দের প্রার্থীর নাম না থাকায় গত পাঁচ মাসেও ওই বিদ্যালয়ের কমিটি চূড়ান্ত হয়নি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৩ জনের নাম প্রস্তাবনা দিলেও তা ইউএনও’র টেবিলেই পড়ে আছে গত পাঁচ মাস। পরে গত বুধবার প্রধান শিক্ষককে নতুন করে তালিকা প্রেরণের নির্দেশ দেন ইউএনও। ঘটনাটি দেবিদ্বার উপজেলার রাজামেহার ইউনিয়নের মরিচা ছায়েদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের। ইউএনও ওই বিদ্যালয়ের বর্তমান এডহক কমিটির সভাপতি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে এবং জেলা প্রশাসক বরাবরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সোলেমান শিকদার স্বাক্ষরিত এক পত্রে প্রস্তাবিত সভাপতি হিসেবে মোহাম্মদ ছালাহ উদ্দিন, সুলতান আহমেদ ভূইয়া ও মো. মোশারফ হোসাইনের নাম প্রেরণ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ গত ৫ মাসেও সেই চিঠি জেলা প্রশাসক বরাবরে প্রেরণ করেননি উপজেলা নির্বাহী অফিসার। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার একটি দলের নির্দেশে দেবিদ্বারের সাবেক সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত মাহবুবুর রহমান ভূইয়াকে সভাপতি হিসেবে করতে নানা কৌশল করে যাচ্ছেন। সম্প্রতি স্থানীয় ইউপি সদস্য মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম কুমিল্লা জেলা প্রশাসক বরাবরে এক লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন, ‘আগে প্রধান শিক্ষকের দেয়া প্রস্তাবিত তালিকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে না পাঠিয়ে জুলাই আন্দোলনে বিতর্কিত ভূমিকা রাখা মাহবুবুর রহমানকে সভাপতি করতে চক্রান্ত করে যাচ্ছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার।
এদিকে গত জানুয়ারি মাসের তালিকা বাদ দিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার পূনরায় নোটিশ করে প্রস্তাবনা দিতে প্রধান শিক্ষককে নির্দেশ দেয়ায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা বলেন, গত বুধবার (২৮ মে) প্রধান শিক্ষক নতুন করে আবারো নোটিশ দিয়েছেন। সভাপতি পদে আগ্রহী ব্যক্তিদের তথ্য চেয়ে ওই আবেদনের শেষ সময় দেয়া হয় বৃহস্পতিবার। একটি সূত্র জানায়, প্রধান শিক্ষক নতুন তালিকায় আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান মাহবুবকে সভাপতি করতে নতুন করে তালিকা চুড়ান্ত করতে যাচ্ছেন।
সভাপতি প্রার্থী মাহবুবুর রহমান বলেন, তিনি সভাপতি হতে নতুন তালিকায় নাম যুক্ত হতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রধান শিক্ষকের নিকট জমা দিয়েছিলাম কিন্তু প্রধান শিক্ষক তালিকায় আমার নাম যুক্ত না করেই জমা দিয়েছেন। পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে ভুল স্বীকার করেছেন। এখন নতুন তালিকায় আমার নাম অন্তুভুক্ত থাকবে বলে আমি আশা করি। তিরি আরও বলেন, জুলাই আন্দোলনে তার পরিবারে কেউ বিতর্কিত ভূমিকায় ছিলেন না। একটি চক্র আমি যে সভাপতি না হতে পারি সে জন্য ষড়যন্ত্র করছে।
প্রধান শিক্ষক মো. সোলেমান শিকদার বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশে নতুন করে আবার তালিকা করা হচ্ছে। তবে নতুন তালিকায় কার নাম থাকছে এ নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হাসনাত খাঁন বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, আমার টেবিলে মরিচা ছায়েদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়সহ আরও ২০ টি বিদ্যালয়ের প্রস্তাবিত সভাপতির সম্ভাব্য তালিকা জমা আছে। এ গুলি যাচাই বাছাই চলছে। ঈদের ছুটির আগেই সব তালিকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রেরণ করা হবে। যোগ্য ব্যক্তিরাই সভাপতি হবেন। তবে আগের তালিকা বাদ দিয়ে নতুন করে মরিচা ছায়েদ আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির নামের তালিকা করার বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।