টানা বর্ষণ ও ঢলে কুমিল্লার গোমতী নদীতে পানি বৃদ্ধি পেলেও তা এখনো বিপৎসীমার ৩.৯ মিটার (১২.৮৬ ফুট) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি ৭.৩৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। গোমতী নদীর পানির বিপৎসীমা নির্ধারিত রয়েছে ১১.৩০ মিটার উচ্চতা। তবে গোমতী নদীর পানির উচ্চতা বাড়লেও তা নিয়ে শঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
কুমিল্লায় টানা তিন দিনের বর্ষণে পানি বেড়েছে গোমতী নদীতে। ক্রমাগত পানি বাড়তে থাকায় কিছুটা ভয় ঢুকেছে গোমতীর তীরবর্তী মানুষের। কারণ অতিবৃষ্টিতে পাহাড়ী ঢলের কারণেগেলো বছরের ১৮ আগষ্ট থেকেই হঠাৎ বিপৎসীমার উপরে প্রবাহিত হতে শুরু করে গোমতী নদীর পানি। এতে ডুবে যায় বেরিবাঁধের সব বাড়ি ঘর- কৃষিজমি। আগাম প্রস্তুতি না থাকায় সব ফেলে প্রাণ হাতে নিয়ে বাঁধের উপর আশ্রয় নেয় হাজারো মানুষ। এরই মধ্যে ভারতে গোমতীর ডাম্বুলা বাঁধ খুলে দেয়ায় ২২ আগষ্ট রাতে কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি বিপৎসীমার ১১৩ সেন্টিমিটার উপরে প্রবাহিত হতে শুরু করে। নদীতে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে বুড়িচং উপজেলার বুড়িবুড়িয়া এলাকায় বাঁধ ভেঙ্গে বানের পানিতে তলিয়ে যায় শতাধিক গ্রাম। প্রায় দেড় হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্থ হয়, ডুবে যায় কৃষি জমি, ভেসে যায় ফিশারি, গবাদি পশু- হাস মুরগির খামার। তিরিশ হাজার কোটি টাকারও বেশি ক্ষয়ক্ষতির কথা জানায় সরকার। সেই ভয় এখনো তাড়া করে বেড়ায় এই এলাকার মানুষজনকে।
তবে শনিবার কুমিল্লায় বেশি বৃষ্টিপাত না হওয়ায় প্রাথমিকভাবে শঙ্কা কিছুটা কেটেছে। গোমতীর পানিও এখনো এখনো বিপৎসীমার ৩.৯ মিটার (১২.৮৬ ফুট) নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, শনিবার সকাল ৬টায় গোমতী নদীর পানি ৭.৩৯ মিটার, সকাল ৯টায় ৭.৫৮ মিটার, দুপুর ১২টায় ৭.৫৫ মিটার, বিকাল ৩টায় ৭.৪৭ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টায় ৭.৩৮ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হয়। অর্থাৎ গোমতী নদীর পানি সকালের দিকে কিছুটা বাড়তে থাকলেও দুপুরের পর আবার কমতে শুরু করে। ধারণা করা হচ্ছে, কুমিল্লায় বৃষ্টিপাত কমতে থাকলে এবং পাহাড়ি ঢল না আসলে গোমতীর পানি আরো কমে আসবে।