ম্যাচ
শুরু হতেই পিছিয়ে পড়া আর্সেনালের ওপর অনেকটা সময় আধিপত্য করল পিএসজি। সময়
নিয়ে গুছিয়ে উঠে মিকেল আর্তেতার দল এরপর শুরু করল পাল্টা আক্রমণ। অনেক
সুযোগও পেল তারা, জালে বলও পাঠাল। কিন্তু গোল পেল না দলটি। তাদের মাঠে জিতে
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে ওঠার পথে এগিয়ে রইল প্যারিসের ক্লাবটি।
এমিরেটস
স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছে লুইস
এনরিকের দল। তিন মিনিটের মাথায় গোলটি করেন উসমান দেম্বেলে।
ঘরোয়া
প্রতিযোগিতা লিগ আঁয় আগেই শিরোপা নিশ্চিত করে পিএসজি ছুটছিল অপরাজিত
পথচলায়। দাপুটে সেই যাত্রায় হঠাৎ করেই গত শুক্রবার হয় ছন্দপতন, নিসের
বিপক্ষে ঘরের মাঠে হেরে বসে ৩-১ গোলে।
তবে সেই ধাক্কায় যে তাদের
আত্মবিশ্বাসে কোনো ভাটা পড়েনি, পারফরম্যান্সেই তার প্রমাণ দিল দলটি।
প্রাথমিক পর্বে আর্তেতার দলের বিপক্ষে ২-০ গোলে হারের প্রতিশোধও নিল তারা।
আক্রমণাত্মক
ফুটবলে পিএসজির প্রথম আধা ঘণ্টার পারফরম্যান্সই ছিল দুর্দান্ত। দেম্বেলের
অসাধারণ নৈপুণ্যে তিন মিনিট ১৮ সেকেন্ডে এগিয়েও যায় তারা।
আক্রমণের
শুরুটাও দেম্বেলের পা থেকে। খাভিচা কাভারাৎস্খেলিয়াকে পাস দিয়ে এগিয়ে যান
ফরাসি ফরোয়ার্ড। এরপর সতীর্থের কাটব্যাক পেয়ে ডি-বক্সে ঢুকেই প্রথম ছোঁয়ায়
কোনাকুনি শট নেন তিনি, বল পোস্টে লেগে জালে জড়ায়। স্বাগতিক সমর্থকদের মাঝে
তখন পিনপতন নিরবতা আর এক কোণে পিএসজি গ্যালারিতে সে কী গর্জন।
প্রতিপক্ষের
একচেটিয়া আক্রমণের মুখে প্রথম আধা ঘণ্টায় তেমন কিছুই করতে পারেনি
আর্সেনাল। ২৪তম মিনিটে দলটির ডিফেন্ডার ইয়াকুব কিভিওর একটি হেড করলেও, সেটা
অনায়াসে ঠেকান পিএসজি গোলরক্ষক। ৩১তম মিনিটে দিজিরে দুয়ের শট ঠেকিয়ে
ব্যবধান বাড়তে দেননি দাভিদ রায়া।
ধীরে ধীরে আর্সেনালের খেলায় ধার বাড়তে
থাকে। ৩৯তম মিনিটে দারুণ দৃঢ়তায় বল পায়ে রেখে, প্রতিপক্ষের দুজনের মধ্যে
দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে দূরের পোস্টে ক্রস বাড়ান বুকায়ো সাকা। কিন্তু লাফিয়েও
বলে ঠিকমতো পা ছোঁয়াতে পারেননি গাব্রিয়েল মার্তিনেল্লি।
বিরতির আগে
আরেকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করে আর্সেনাল। এবার ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড
মার্তিনেল্লির শট ঝাঁপিয়ে আটকে দেন জানলুইজি দোন্নারুম্মা।
প্রথমার্ধে
গোলের জন্য পাঁচ শটের চারটি লক্ষ্যে রাখতে পারা আর্সেনাল বিরতির পর প্রথম
প্রচেষ্টায় জালের দেখা পায়। কিন্তু ডেকলান রাইসের ক্রসে হেড করা মিকেল
মেরিনো অফসাইডে থাকায় ভিএআরে গোল মেলেনি।
৫৬তম মিনিটে পাল্টা আক্রমণে
আবার পিএসজির বক্সে ভীতি ছড়ায় আর্সেনাল। তবে দোন্নারুম্মাকে পরাস্ত করতে
পারেনি তারা; ট্রসাডের শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন ইতালির গোলরক্ষক।
শেষদিকে
আবার চাপ বাড়ায় পিএসজি। পরপর দুই মিনিটে দুটি সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় তাদের।
৮৪তম মিনিটে ব্রাডলি বার্কোলার শট পোস্ট ঘেঁষে বেরিয়ে যাওয়ার পর, গনসালো
রামোসের প্রচেষ্টা ক্রসবারে বাধা পায়।
শেষ সময়ে আরেকটি সুযোগ আসে মার্তিনেল্লির সামনে। এবার আকাশে উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন তিনি।
প্রিমিয়ার
লিগে খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাওয়া আর্সেনাল এই প্রতিযোগিতায় অবশ্য
ছুটছিল দুর্দান্ত গতিতে। কোয়ার্টার-ফাইনালে শিরোপাধারী রেয়াল মাদ্রিদকে দুই
লেগেই গুঁড়িয়ে অধরা ইউরোপ সেরার মুকুট জয়ের স্বপ্ন জোরাল করে তারা। সেটা
বাঁচিয়ে রাখতে আগামী বুধবার পিএসজির মাঠে চমৎকার কিছু করে দেখাতে হবে
দলটিকে।