লক্ষীপুর
জেলা সদরের উত্তর চর রমনী গ্রামের মো. সোহেল। তিনি ফেনী সৌদিয়া হোটেল এন্ড
রেষ্টুরেন্টে কাজ করতেন। হোটেলে কাজ করার সময় এক দুর্ঘটনা তার একটি হাত
কেটে যায়। শ্রমিকের পক্ষে মামলা করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন
অধিদপ্তর, ফেনী। এ দপ্তরের শ্রম পরিদর্শক মো. ইয়াসিন হোসেন জানান, বিষয়টি
জানার পর শ্রম আদালত কুমিল্লায় আমরা মামলা করি। এতে শ্রমিক তার চিকিৎসা খরচ
ফেনী সৌদিয়া হোটেল এন্ড রেষ্টুরেন্ট বহন করে। এছাড়াও সোহেলকে ব্যবসা করার
জন্য বাড়ির পাশে একটি দোকান দিয়ে দেওয়া হয়। চুক্তি হয়েছে প্রতিবছর যাকাত বা
অনুদান থেকে হোটেল পক্ষ একটি অনুদান প্রদান করবেন।
শ্রম আদালতে বিচার
চেয়ে সুফল পেয়েছেন এই হোটেল কর্মচারী। তবে আইনিভাবে চাইলেও যে শ্রমিকরা
তাদের সাথে অন্যায় অবিচারের ন্যায়বিচার পেতে পারেন তা জানেন না অনেকেই।
শ্রম
আদালতের আইনজীবী মোঃ কামরুল হাসান ( সুমন) বলেন, বেশিরভাগ শ্রমিকই জানেন
না শ্রম আদালত সম্পর্কে। এ নিয়ে সচেতনতা বাড়লে - উপকার পাবেন শ্রমিকরাই।
বৃহত্তর
কুমিল্লার ছয় জেলার শ্রমিকদের কাছে শ্রম আইনের সুফল পৌঁছে দিতে ২০২৩
সালের মে মাসে কুমিল্লা শ্রম আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পর্যন্ত চলমান
মামলা সংখ্যা ১৫২টি। রেজিষ্ট্রার জানিয়েছেন, মামলা খুব কম। বিনা খরচে রায়
পাচ্ছেন শ্রমিকরা। তবে এই আদালতের কার্যক্রম ও সুফল সম্পর্কে জানে না
সাধারণ শ্রমিকরা।
কুমিল্লা শ্রম আদালতের সূত্রমতে, ২০২৩ সালের মে মাসে
চট্টগ্রাম থেকে পৃথক হয়ে কুমিল্লায় যাত্রা শুরু করে শ্রম আদালত। কুমিল্লা,
চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে নিয়ে এ
বিশেষায়িত আদালত গঠন করা হয়। চট্টগ্রামের শ্রম আদালত থেকে ১৪৮টি মামলা
নিয়ে এ কার্যালয়ে কাজ শুরু হয়। এ দপ্তরের কার্যালয় শাসনগাছা রেল লাইনের
পাশে।
শ্রম আদালতের আইনজীবী মোঃ কামরুল হাসান ( সুমন) বলেন, এ কোর্টে
আমার অধীনে মামলা সংখ্যা ১২৫ টি । মালিকপক্ষের টাকা আছে, তারা উচ্চ আদালতে
গিয়ে মামলা স্টে করে দেয়। নয়তো তিন কর্ম দিবসেও মামলার নিষ্পত্তি হয়। আর
অনেক শ্রমিক জানেন না। শ্রম আদালতের বিষয়ে তাদের সচেতন করা দরকার।
শ্রম
আদালত কুমিল্লার রেজিষ্ট্রার সুব্রত নাথ জানান, বিনা খরচে এখানে মামলা ও
নিষ্পত্তি পাচ্ছেন ছয় জেলার শ্রমিকরা। তারা বিনা খরচে, এমন কী কোর্ট ফি
ছাড়া মামলা করতে পারেন। ২০২৩ সালের মে মাসে এ কোর্ট যাত্রা শুরু করে ১৪৮টি
মামলা নিয়ে। প্রথম বছরে ১১৫ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। চলতি বছরে ৪৩টি মামলার
রায় হয়েছে। বর্তমানে ১৫২টি মামলা চলমান আছে। শতাধিক মামলা উচ্চ আদালতের
স্টে অর্ডার আছে। তবে চলতি বছরে সবগুলোর রায় দেওয়া সম্ভব।
কলকারখানা ও
প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, কুমিল্লার উপ- মহাপরিদর্শক সৈয়দ নাজমুল
রাশেদ বলেন, আমরা প্রতিমাসে দু'টি কারখানায় অবহিত করণ সভা করে থাকি। তবে
শ্রমিকদের মাঝে তাদের অধিকারের বিষয়ে ব্যাপক ভাবে প্রচার করা দরকার। শ্রম
আদালতের নিজস্ব স্টাফ নেই। ভাড়া ভবনে কোর্টের কার্যক্রম। যদি নিজস্ব জনবল
থাকে, কাজে গতি পাবে।