বৈভব
সুরিয়াবানশি সোমবার (২৮ এপ্রিল) আইপিএলে গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে করেছেন
এক বিস্ফোরক সেঞ্চুরি। মাত্র ৩৫ বলে গড়া এই শতক এই ফ্র্যাঞ্জাইজিটির
ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম। অথচ এই কীর্তি গড়া ব্যাটসম্যানের বয়স মাত্র ১৪
বছর ৩২ দিন। অর্থাৎ আইপিএল শুরু হওয়ার (২০০৮ সালের এপ্রিলে) প্রায় তিন বছর
পর (২০১১ সালের মার্চে) সুরুয়াবানশির জন্ম। সেই কিশোরই এখন স্বীকৃত
টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছে।
কথায় আছে না,
‘বয়সটাকে স্রেফ একটা সংখ্যা’। এই বানীকে আবারো সত্যতা দিলেন সুরিয়াবানশি।
আইপিএলে মোকাবেলা করা নিজের প্রথম বলটা উড়িয়ে মেরে ছক্কায় পরিণত করার
মাধ্যমে আগমনী বার্তা দিয়েছিলেন।
সোমবার সেই ছক্কা হাঁকিয়েই পেলেন তিন
অংকের দেখা। এই কিশোরের ব্যাটিংয়ের ধরণ দেখে মনে হচ্ছিল ছক্কা মারা মামুলী
এক কাজ। বল আসবে, দেখব, মারব! এই বয়সে বাঘা-বাঘা বোলারদের তুলোধুনো করে এক
ইনিংসে মারলেন ১১টা ছক্কা। ভারতীয়দের মাঝে এরাআগে কেবল মুরালি বিজয় এক
ইনিংসে ১১টি ছক্কা মেরেছিলেন ২০১০ সালে।
আইপিএলে অভিষিক্ত করিম জানাতকে
পাড়ার বোলার বানালেন ৬,৪,৬,৪,৪,৬ মেরে। তুলে নেন গুনে গুনে ৩০ রান। এরআগে
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় সাড়ে ৩০০ উইকেটের মালিক ইশান্ত শর্মার এক ওভারে
নিয়েছিলেন ২৮ রান। তাছাড়া ভারত জাতীয় দলের আরেক স্পিনার ওয়াশিংটন সুন্দরের
ওভারে তুলেন ২১ রান।
মাত্র ১৭ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন সুরিয়াবানশি। যা
এই মৌসুমে সবচেয়ে দ্রুত। এরপর তিনি একাধিক রেকর্ড ভেঙে দেন। সবচেয়ে কম বয়সে
আইপিএলে শতরান করা ব্যাটসম্যান তিনি। আইপিএলের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম
শতরান (৩৫ বল) করেন। তারচেয়ে কম বলএ এই কীর্তি গড়েছেন কেবল ‘ইউনিভার্স বস’
ক্রিস গেইলের (৩০ বলে)। ৩৭ বলে ১০১ রানে থামেন। তার ইনিংসের ৯৪ রানই এলো
বাউন্ডারিতে।
সুরায়াবানশি শতরানে পৌঁছানোর পর বাউন্ডারি লাইনে দেখা
মিলল এক ভিন্ন রাহুল দ্রাবিড়কে। গোটা খেলোয়াড়ি এবং কোচিং জীবনে পানির মতো
শান্ত থাকা এই ব্যক্তিত্ব সোমবার রাতে হুইলচেয়াড় ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেলেন ভাঙা
পায়ে, মাতলেন বুনো উল্লাসে! হয়তো বিশেষ কিছু পাওয়ার প্রতিক্রিয়াটা এভাবেই
দেখাতে হয়।
আরেকটি ঘটনা খুবই চোখে পড়ার মতো। সুরিয়াবানশির তখনো অর্ধশত
হয়নি। এই কিশোরের একটি শট দেখে ছুটে এসে হ্যান্ডশেক করে গেলেন প্রতিপক্ষ
দলের রাহুল তেওয়াটিয়া। মুগ্ধতা, বিস্ময় আর ভালো লাগার বিস্ফোরণ থেকে হয়ত
ক্ষাণিক সময়ের জন্য পেশাদারিত্বকে দূরে ঠেলে দিয়েছিলেন গুজরাট ব্যাটসম্যান।
সুরিয়াবানশির
ব্যাটিং দেখে চোয়াল ঝুলে পড়েছে টিভির বা মোবাইলের পর্দায় চোখ রাখা
সারাবিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমীদেরও। এই ইনিংস নিজ চোখে দেখা সবাই হয়তো একটা
জায়গায় একমত হবেন। ভারত পেয়ে গিয়েছে তাদের পরবর্তী মহাতারকা।