স্টাফ
রিপোর্টার।। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ মসজিদ ইমামকে পুনর্বহাল ও
জাতীয় পতাকা অবমাননার প্রতিবাদে সাধারণ মুসল্লীদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন
করেছেন এলাকাবাসী। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বিকেলে কুমিল্লা প্রেসক্লাবে এ
সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মুসল্লিরা কয়েকটি দাবি তুলে
ধরেন। দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- অতিসত্বর মাওলানা মারুফ বিল্লাহ
সাহেবের অব্যাহতি প্রত্যাহার করে রমজান মাসে উনাকে পুনর্বহান করতে হবে।
জাতীয় পতাকা অবমাননার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা
গ্রহণ করতে হবে। কলেজ মসজিদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অশুদ্ধ তেলাওয়াতকারী
কোনো ইমাম বা মুয়াজ্জিনকে কিছুতেই নিয়োগ দেয়া চলবে না।
সংবাদ সম্মেলন
উপস্থিত ছিলেন সারওয়ার আলম ভূইয়া, এডভোকেট হাসান, আশরাফ, ইসহাক, তারিকুল
আলম ভূঁইয়া, আমিনুর রহমান, একেএম হাসানুল, মাহমুদুর রহমান, মিজানুর রহমান
প্রমুখ।
এসময় লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, বিগত সাত বছর ধরে ইমাম
সাপ্তাহিক হাদিসের দরস করে আসছিলেন। এ দরসটিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ
দলমত নির্বিশেষে অংশগ্রহণ করত এবং দ্বীনহারা মানুষ দ্বীনের পথে আসত। কিন্তু
অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয়, গত ২০ জানুয়ারি সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে
কলেজের অধ্যক্ষের নির্দেশে মসজিদ কমিটি দরসটি বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে
স্থানীয় মুসল্লি ও ছাত্ররা অধ্যক্ষ স্যারের সাথে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি
তাদের সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করেন।
মুসল্লিরা যখন হাদিসের দারস
পুনরায় চালু হওয়ার প্রতীক্ষায় ছিলেন তখন প্রিন্সিপাল গত ৬ ফেব্রুয়ারি কোন
নোটিশ ছাড়াই ইমাম সাহেবকে অফিস টাইমের বাইরে অযৌক্তিক অব্যাহতিপত্র প্রেরণ
করেন। পরবর্তীতে কলেজ কর্তৃপক্ষ গোপনীয়তার সাথে একজন ইমাম নিয়োগ দেন।
পরবর্তী জুমায় তাকে দিয়ে বয়ান ও ইমামতি করাতে চাইলে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে
তাকে নামাজ পড়ানো থেকে বিরত রাখেন। পাশাপাশি মাওলানা মারুফ বিল্লাহকে
পুনর্বহালের জোরালো দাবি উত্থাপন করেন। ইমামকে পুনর্বহালের জন্য ছাত্র,
মুসল্লি এবং এলাকার নেতৃস্থানীয় সম্মানিত ব্যক্তিবর্গ প্রিন্সিপাল সাহেবের
সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেও ব্যর্থ হন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জুমায় পরিস্থিতির আরও
অবনতি ঘটলে জুমার পর প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে প্রিন্সিপাল পহেলা
মার্চ শনিবার থেকে মাওলানা মারুফ বিল্লাহকে দিয়ে নামাজ পড়ানো শুরু করবেন
বলে ঘোষণা দিয়ে বৈঠক শেষ করেন। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রিন্সিপালকে আশ্বস্ত
করা হয়, ইমাম সাহেব পুনর্বহালের কিছুদিন পর নিজ থেকে অব্যাহতি দিয়ে
স্বসম্মানে বিদায় নিবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় জুমার নামাজের পরে
সকলের সামনে ওয়াদা করার পরও প্রিন্সিপাল তিনদিন পর সাত বছর আগে অশুদ্ধ
তেলাওয়াতের দায়ে বিদায় হওয়া ইমামকে পুনর্বহাল করে ওয়াক্তিয়া নামাজ পড়ানোর
দায়িত্ব প্রদান করেন। গত ৭ই মার্চ শুক্রবার জুমার নামাজে পরিস্থিতির আরো
অবনতি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিলে এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা
প্রিন্সিপাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে বৈঠক করে জুমার পরে ইমাম সাহেবের সাথে
সমঝোতা আলোচনার আশ্বাস প্রদান করলে ওই দিন জুমাতে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ
শান্তিপূর্ণ থাকে। এবং সুশৃঙ্খলভাবে জুমার নামাজ সম্পন্ন হয়। জুমার নামাজের
পরে এলাকার মুসল্লী ও নেতৃবৃন্দবর্গের সমঝোতা বৈঠকে ইমাম মারুফ বিল্লাহ
সাহেবকে পুনর্বহালের আশ্বাস না পাওয়াতে বৈঠকটি সিদ্ধান্তহীনতায় শেষ হয়।
এদিন সন্ধ্যায় আমরা অনলাইন নিউজে বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদে দেখতে পাই, কে বা
কারা জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ডে জুতা ঝুলিয়ে দেয়। নিউজগুলোতে এই হীন
কর্মকাণ্ড ইমাম মারুফ বিল্লাহর অনুসারীদের বলে ব্যাপক মিথ্যাচার করে সংবাদ
প্রচার করা হয়। আমাদের বক্তব্য অত্যন্ত স্পষ্ট, জাতীয় পতাকার এ অবমাননা
সচেতন দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবে আমরা মেনে নিতে পারিনি। তাই পরেরদিন কয়েকটি
পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে এর প্রতিবাদলিপি প্রেরণ করি। আমরা স্পষ্ট ভাষায়
দাবি জানাচ্ছি, যে বা যারা এই অপকর্মটি ঘটিয়েছে এরা কোনভাবেই মাওলানা
মারুফ বিল্লাহর অনুসারী হতে পারে না। আপনাদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছেও দাবি
জানাচ্ছি অপরাধীদের সনাক্ত করে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ করুন। কোনো
স্বার্থান্বেষী মহল ঘটনাটি ঘটিয়ে ইমাম সাহেব এবং তার অনুসারীদের কলুষিত
করার ষড়যন্ত্র করছে কিনা কিনা তাও খতিয়ে দেখার জোর দাবি জানাচ্ছি।