চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের যুবলীগ নেতা জামাল হত্যামামলায় রায়
ঘোষণার ১৫ ঘন্টার মধ্যেই মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী ২ আসামীকে গ্রেফতার করেছে
র্যাব। গ্রেফতারকৃতরা হলো; উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের শিলরী গ্রামের মৃত
তাজুল ইসলামের ছেলে মফিজুর রহমান খন্দকার ও আলকরা গ্রামের নজির আহম্মদের
ছেলে রেজাউল করিম বাবলু। সোমবার ভোররাতে কোতয়ালী মডেল থানাধীন শাসনগাছা
এলাকা থেকে পলায়নকালে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে
বলে জানিয়েছেন র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক লেঃ কমান্ডার মাহমুদুল
হাসান।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, তৎকালীন আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের
চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের প্রতিবাদ
করায় ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জামাল উদ্দিনের সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এর জের
ধরে ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে যুবলীগ নেতা জামাল
ঢাকায় যাওয়ার পথে তাকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামের পদুয়ায় সড়কে
পথরোধ করে চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বাচ্চুর নেতৃত্বে অন্য আসামিরা গুলি
চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত জামালের বড় বোন জোহরা আক্তার
বাদি হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন বাচ্চুকে প্রধান আসামি করে ২৩ জনের
নামে মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘটনার তদন্তপূর্বক আসামীদের
বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় একই বছরের ১৮ এপ্রিল
প্রধান আসামি ইসমাইল হোসেন বাচ্চুসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৩৬৪/৩০২/৩৪
ধারার বিধানমতে বিজ্ঞ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। মামলায় ২০ জনের
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গত ১২ মে রোববার দুপুরে কুমিল্লার
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন ৯ জনের
মৃত্যুদ-, ৯ জনের যাবজ্জীবন এবং পাঁচজনকে মামলা থেকে খালাস দেন। এছাড়া
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রায়
ঘোষণার সময় একজন যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত ও দুইজন খালাসপাপ্ত আসামি কাঠগড়ায়
উপস্থিত ছিলেন। বাকিরা পলাতক ছিলেন।
মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামীরা হলেন;
আলকরা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আ’লীগ নেতা ইসমাইল হোসেন বাচ্চু, আলকরা
ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের সালাউদ্দিন, একই এলাকার আব্দুর রহমান, মফিজুর
রহমান খন্দকার, জিয়াউদ্দিন শিমুল, জাহিদ বিন শুভ, রেজাউল করিম বাবলু, রিয়াজ
উদ্দিন মিয়াজী ও আমির হোসেন।
যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্তরা হলেন; আলকরা
ইউনিয়নের কুলাসার গ্রামের নুরুল আলম, কফিল উদ্দিন, নুরুন্নবী সুজন, ইকবাল
আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান খন্দকার, মোশারেফ হোসেন, মোঃ
আলাউদ্দিন ও মোহাম্মদ আলী হোসেন।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারি
যুবলীগ নেতা জামাল উদ্দিনকে হত্যার পর মামলা করায় বাদিসহ স্বজনদের নানা
ধরনের হুমকি দিয়ে আসছিল চেয়ারম্যান বাচ্চু ও তাঁর অনুসারীরা।
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ও খালাসপ্রাপ্ত সবাই আ’লীগের
রাজনীতির সাথে জড়িত।
র্যাব-১১ সিপিসি-২ কুমিল্লার অধিনায়ক লেঃ
কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘রায় ঘোষণার ১৫ ঘন্টার মধ্যেই
মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মফিজুর রহমান খন্দকার ও রেজাউল করিম বাবলুকে
গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা
প্রক্রিয়াধীন’।