বুড়িচং
প্রতিনিধি: কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার মোকাম ইউনিয়ন এর লোহার চর গ্রামের
তোফায়েল আহমেদ এর বসত ঘরে আগুন লেগে তার স্ত্রী সাহিদা আক্তারের মৃত্যুর
দুই মাস পর আদালতের নির্দেশে সোমবার ওই গৃহ বধূর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা
হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী ম্যসজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা সাহিদা আক্তার এবং বুড়িচং থানার এস আই জামশেদ আলম, এ এস আই আবুল
কাসেম ও দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশ।
অভিযোগ সূত্রে ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলে
জানা গেছে চলতি বছরের ১১ ফেব্রুয়ারী রোববার রাত ৯ টায় মোকাম ইউনিয়ন এর
লোহার চর গ্রামের সবজি ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ এর বসত ঘরে আগুন লেগে তার
স্ত্রী পুড়ে মারা যায়। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়র জননী ছিলেন।
স্থানীয়
সেলিম রেজা আরও অনেকে জানান ১১ ফেব্রুয়ারি২০২৪, রোববার রাত ৯ টায় নিমসার
বাজারের সবজি ব্যবসায়ী তোফায়েল আহমেদ চা খাওয়ার জন্য বাড়ির পাশে একটি
দোকানে যায়। এর কিছুক্ষণ পরই লোক মাধ্যমে তার ঘরে আগুনের খবর শুনতে পায়।
মুহূর্তের
মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা পুরো ঘরটিকে গ্রাস করে ফেলে। স্থানীয় লোকজন
আগুন নিভাতে চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর পেয়ে চান্দিনা
থেকে একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে প্রায় দেড় ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
চান্দিনা
ফায়ার স্টেশনের মাস্টার অনয় কুমার ঘোষ জানান, আগুন নিভে যাওয়ার পর ঘরে
তল্লাশি করে খাটের উপর থেকে গৃহবধুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট-সার্কিট থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
খবর
পেয়ে বুড়িচং থানার ওসি আবুল হাসানাত খন্দকার, দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ
মোঃ জাবেদুল ইসলাম , স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাহেব আলী, ইউপি সদস্য
মোঃ জাকির হোসেন ঘটনা স্থানে যান।
বাদী পক্ষের রুহুল আমিন জানান নিহতের স্বামী তোফায়েল আহমেদ এর নিকট তারা ১০-১২ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। টাকা গুলো সে দিচ্ছে না।
নিহতের
ভাই জুয়েল বলেন আমাকে তারা ভয়ভীতি দেখিয়েছে তাই আমি অভিযোগ করেনি। তুমিত
ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাহেব আলী এবং পুলিশ কে তোমার লোকজন নিয়ে মানিক কারণে
বোনের লাশ বিনা ময়না তদন্তে দাফন করার অনুমতি চেয়েছ এবং তোমাদের কোন
অভিযোগ নেই, সে কারনে পুলিশ তোমাকে দাফন করার অনুমতি দেয়। এখন কেন উল্টো
অভিযোগ করছ এ প্রশ্নের জব্বাব এড়িয়ে যায়।
বাদী নিহতের চাচা ফারুক ভূইয়া
বলেন লোক মারা গেল রাত ৯ টায়। তারা আমাদের নিকট তারা তথ্য গোপন করেছে। আমরা
আসার আগে তারা লাশ দাগন করেছে। নিহতের মা বাবা নেই আমি চাচা হিসেবে তাদের
কে লালন পালন করেছি।
এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাহেব আলী বলেন
আগুনে পুড়ে মৃত গৃহ বধূ সাহিদা আক্তার (৩০) এর লাশ পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য
মর্গে প্রেরনের প্রস্তুতি নিলেনে নিহতের ভাই জুয়েল তারা লোকজনেরা এতে বাধা
দেন। জুয়েল তার লোকজন জানান তার বোনের স্বামীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই
জানান। তাদের মধ্যে মিল ছিল জুয়েল ৭-৮ বছর ধরে বোনের স্বামীর বাড়ীতে থেকে
কাজ কর্ম করে। জুয়েল ও তার লোকজন নিয়ে চেয়ারম্যান থানা পুলিশ কে অনুরোধ করে
যে তার বোন সাহিদা আক্তার কে বিনা ময়না তদন্তে পুড়া লাশ দাফন করার। মৃত
সাহিদা আক্তারের বিষয়ে কার প্রতি কোন অভিযোগ তাদের নেই বলে দাবি করে এবং
ভবিষ্যতে থাকবে না জানান। তাদের অভিযোগ না থাকায় ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ সাহেব
আলী থানা পুলিশের সাথে আলাপ আলোচনা করে বিনা ময়না তদন্তে লাশ দাফন করা হয়।
এখন তারা উল্টা পল্টি নিয়ে প্রশাসন সহ সকলকে হয়রানি করছেন।
এদিকে
দেবপুর পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মোঃ জাবেদুল ইসলাম বলেন আগুন পুড়ে মৃত গৃহ বধূর
লাশ আমরা উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরনের ব্যবস্থা করলে
নিহতের ভাই জুয়েল আত্মীয় স্বজনের অনুরোধ করেন স্থানীয় চেয়ারম্যান মোঃ সাহেব
আলী নিয়ে তাদের কোন আপত্তি বা অভিযোগ নাই বিনা ময়না তদন্তে লাশ দাফনের
অনুরোধ করেন। তাদের ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অনুরোধে আমরা লাশ দিয়ে
আসি।
বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইউএনও সাহিদা আক্তার বলেন,কোন
অভিযোগ না থাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া সাহিদা আক্তার নামে এক গৃহবধুর লাশ
ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়েছিল।তার চাচা মামলা করার পর কোর্টের
নির্দেশনায় আজ কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। লাশ কবরে দফনের পর পঁচে
যায়, যার কারণে প্রাথমিক ভাবে কোনো চিহৃ পাওয়া যায়নি। তবুও একটি সুরতহাল
রিপোর্ট তৈরি করে পুনরায় কোর্টে পাঠানো হবে।