ইসমাইল নয়ন।।
গত
বছরের আগস্টে ভারি বৃষ্টি আর উজানের পাহাড়ি ঢলে গোমতী ও সালদা নদীর
প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হয়েছিল কুমিল্লার
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা। সচরাচর এই উপজেলায় বন্যা হয় না বলে সেসময় ছিল না
পর্যাপ্ত নৌকা। এতে নানা সংকটে পড়তে হয়েছিল এই উপজেলার বাসিন্দাদের।
এদিকে
গেল বছরের ভয়াবহ বন্যায় নৌকা সংকটে ভোগান্তির বিষয়টি স্মরণ করে এবছর আগাম
প্রস্তুতি হিসেবে বর্ষাকালের শুরুতে অনেকেই আবারও বন্যা হলে যেন সংকটে পড়তে
না হয় সেজন্য নৌকা সংগ্রহ করছেন। এতে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর এই
উপজেলায় নৌকার চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। নৌকা সংগ্রহের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায়
নৌকা তৈরির কারিগররাও এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা
মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের নৌকার তেমন দরকার পড়ে না। তবে গত বছর দুই নদীর
পাড় ভেঙে হঠাৎ করেই ভয়ংকর বন্যা হয়। বন্যায় আমাদের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
উপজেলার প্রায় সবগুলো সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে
যায়। পর্যাপ্ত নৌকা না থাকার কারণে আমাদেরকে চলাচলে বিপদে পড়তে হয়। তাই
অনেকেই এ বছর বর্ষা আসার সঙ্গে সঙ্গে নৌকা করছেন।
স্থানীয় আরেক
বাসিন্দা আকবর হোসেন বলেন, আমাদের উপজেলায় সড়ক যোগাযোগ ভালো থাকায় নৌকার
কেমন দরকার পড়ে না। তবে গত বছরের বন্যা শিখিয়ে গেছে নৌকারও প্রয়োজন আছে।
এবছর বর্ষার শুরুতেই কেউ কেউ নৌকা সংগ্রহ করছেন। আমি নিজেও ছোট আকৃতির একটি
নৌকা কিনেছি।
নৌকা তৈরির কারিগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাইঘর গ্রামের
বাসিন্দা শ্রী সাদন সূত্রধর বলেন, গতবারের বন্যায় অনেক নৌকা বিক্রি করেছি।
এবারও বর্ষাকাল শুরু হতেই নৌকা তৈরির চাহিদা বেড়েছে। আমরা অন্যান বছরের
চেয়ে এ বছর নৌকার অর্ডার বেশি পাচ্ছি।
নৌকা তৈরির কারিগর সুভাষ সূত্রধর
বলেন, দুই দশকের চেয়েও বেশি সময় ধরে এই পেশায় নিয়োজিত আছি। আমাদের এই
উপজেলায় নৌকার তেমন চাহিদা ছিল না। তবে গত বছরের বন্যা পরিস্থিতির পর নৌকার
চাহিদা বেড়েছে। অন্যান্য বছরগুলোতে সারা বছরে দু'চারটে নৌকা বিক্রি হতো।
তবে সে তুলনায় এ বছর নৌকার ভালো অর্ডার পেয়েছি।