বর্ষা
আসলেই সামান্য বৃষ্টিতেই জলমগ্ন হয়ে পড়ে কুমিল্লার সড়ক, অলিগলিসহ পুরো
শহর। জলমগ্ন হয়ে পড়া সড়কের পানি দ্রুত নিষ্কাশন হয়ে তৈরি হয় জলাবদ্ধতা। এতে
ভোগান্তিতে পড়েন কুমিল্লা নগরীর নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। কারণ অপরিকল্পিত
ড্রেনেজ ব্যবস্থা। এছাড়াও পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত ড্রেন ও খালগুলো
নিয়মিত পরিষ্কার এবং খনন না করায় বর্ষার ভারি বৃষ্টি চরম দুর্ভোগে পুড়তে
হয় মানুষকে। তাই এবার কুমিল্লা নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং দ্রুত বৃষ্টির
পানি নিষ্কাশনে ড্রেন পরিষ্কার ও খাল খনন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশন।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলীর
সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা নগরীর ২৭ ওয়ার্ডে নির্মিত পানি নিষ্কাশনের ড্রেন
পরিষ্কার, সংস্কার, নির্মাণ, খাল খনন ও খাল পুনঃখননের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বৃহৎ এ কার্যক্রমের জন্য ৯ কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এরমধ্যে
ঠিকাদার নিয়োগও হয়ে গেছে। তবে খাল খননের কার্যক্রমের গতি আসবে বর্ষার মৌসুম
শেষে।
তবে চলমান বর্ষায় জলাবদ্ধতা নিরসনে ইতোমধ্যে কুমিল্লা নগরীর ৭,
৮, ৯ ও ৩ নং ওয়ার্ডে ড্রেন, নালা ও খাল পরিষ্কারে কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
সিটি
কর্পোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে
নিয়মিত কাজের অংশ হিসেবে ৭ নং ওয়ার্ড অশোকতলা রেললাইন সংলগ্ন জলাশয়, ৮ নং
ওয়ার্ডস্থ রামমালা রোড, শেখ ফজিলাতুন্নেসা মর্ডাণ স্কুল সংলগ্ন ড্রেন/নালা,
৯ নং ওয়ার্ডস্থ রানীরবাজারের পশ্চিম মোড়, বাগিচাগাও রোড সংলগ্ন ড্রেন ও
নালা এবং ৩ নং ওয়ার্ডস্থ রেইসকোর্স খাল পুনঃখননসহ ধর্মপুরস্থ ভিক্টোরিয়া
কলেজ রোড ড্রেন ও নালা পরিষ্কার করা হয়। এ কার্যক্রম চলবে পুলো ২৭টি
ওয়ার্ডে।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষার আগে নগরীর পানি নিষ্কাশনের
ড্রেন, নালা এবং খালগুলো পরিষ্কারের উদ্যোগ না নিয়ে মানুষ জলাবদ্ধতায়
ভোগান্তিতে পড়লে তখন পরিষ্কারে উদ্যাগ নেয় সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু তারা
নিজেরাই জানেন অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থা জলাবদ্ধতা সৃষ্টির প্রধান কারণ।
এতে সামান্য বৃষ্টিতেই ডুবে যায় নগরীর রাস্তাঘাট ছাড়াও বাসাবাড়ি এবং
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিচের অংশ। ভোগান্তিতে পড়েন নগর বাসিন্দা, পথচারী ও
সাধারণ মানুষ।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম
ভূঁইয়া বলেন, নগরীর নাগরিকরা অসচেতন। বাসাবাড়ির ময়লা আবর্জনা সড়কের পাশের
পানি নিষ্কাশনের ড্রেন এবং নালায় ফেলছেন। এতে বৃষ্টি ও বাসিন্দাদের ব্যবহৃত
পানি নিষ্কাশনের পথে বাধা সৃষ্টি হয়। যার কারণে বর্ষায় ভারি বর্ষণে নগরী
সড়ক, অলিগলি জলমগ্ন হয়ে পড়ে। দ্রুত পানি নিষ্কাশন না হতে পেরে জলাবদ্ধতার
সৃষ্টি হয়। তবে এবার নগরীতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ড্রেন, নালা ও খালগুলো
পরিষ্কার ও খননে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ কার্যক্রমের জন্য ৯ কোটি টাকার
প্রকল্প নেয় হয়েছে। এতো মধ্যে ঠিকাদার নিয়োগ হয়েছে। বরাদ্দকৃত অর্থে
কুমিল্লা নগরীর ৫টি খাল খনন ও পুনঃখননসহ ড্রেন, নালা পরিষ্কার অভিযান চলবে
পুলো ২৭টি ওয়ার্ডে।
তিনি জানান, চলমান বর্ষায় খালে অতিরিক্ত পানি থাকায়
খনন কাজ দ্রুত শেষ করা সম্ভব হবে না। তবে পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নগরীর ৫টি
খালে পুরোদমে খনন কাজ চালানো হবে।