অন্তর্বর্তী সরকার প্রস্তাবিত আগামী
২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট পাস করা হয়েছে। এ তথ্য জানিয়েছেন অর্থ
উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, নতুন অর্থবছরের জন্য
সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। ২০২৫-২৬
অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা
পরিষদ। সকাল ১০টায় প্রধান উপদেষ্টার দফতরে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে
এ বাজেট অনুমোদন করা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে
সভাপতিত্ব করেন।
রবিবার (২২ জুন) সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এর
আগে গত ২ জুন টেলিভিশন ভাষণের মাধ্যমে জাতির সামনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের
বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি
বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ ৮১ হাজার ৭০০ কোটি
টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯১ হাজার ৭০০ কোটি টাকা করে পাস করা হয়েছে। আমরা জিডিপির
প্রবৃদ্ধি লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৫০ শতাংশ ধরেছি। আর মূল্যস্ফীতির
লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ।
অর্থ উপদেষ্টা জানান, বাজেটে
উন্নয়ন ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬০৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্কিমে ব্যয়
হবে ৫ হাজার ৩০৩ কোটি টাকা। এডিপিবহির্ভূত বিশেষ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে
৭ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৩০
হাজার কোটি টাকা। কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (এডিপিবহির্ভূত) ও
স্থানান্তরে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা।
আগামী অর্থবছরের
বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর
মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯
হাজার কোটি টাকা। এনবিআরবহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৯ হাজার কোটি টাকা। আর কর
ব্যতীত প্রাপ্তির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
এর আগে গত
২ জুন সম্পদের সুষম বণ্টন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অর্থ
উপদেষ্টা যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থান করেন সেখানে অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয় ২
লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয় ২ লাখ ২১ হাজার
কোটি টাকা। ৪ হাজার কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়।
এই
ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা।
বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে
৯৬ হাজার কোটি টাকা।
আর অভ্যন্তরীণ ঋণ নেওয়া হবে ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি
টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে নেওয়া হবে ১ লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা।
ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেওয়া হবে ২১ হাজার কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির
লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণের
সুদ পরিশোধের ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ
ঋণের সুদ ১ লাখ কোটি টাকা। আর বৈদেশিক ঋণের সুদ ২২ হাজার কোটি টাকা।
বাজেটে
পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয়ের
মধ্যে আবর্তক ব্যয় ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। আর দেশি-বিদেশি ঋণের সুদ
পরিশোধ ১ লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। এবার মূলধন ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৬ হাজার ৫৩৩
কোটি টাকা।