ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট
মহাসড়কে পৃথক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহতের একদিন পর আরও দুইজনের প্রাণ গেছে।
তবে এ সব ঘটনার জন্য বেপরোয়া গতি ও চালকের অদক্ষতাকে দুষছে পুলিশ।
রোববার
সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একই সড়কের তারাকান্দা উপজেলার বাগুন্দা এলাকায় বাসের
সঙ্গে চার বাহনের সংঘর্ষে দুইজনের প্রাণ গেছে; এতে আহত হয়েছেন আরও সাতজন।
প্রথমে তারাকান্দা থানার ওসি মো. টিপু সুলতান দুর্ঘটনায় তিনজন নিহতের তথ্য দিলেও পরে দুঃখপ্রকাশ করে বিকালে দুইজন নিহতের কথা বলেছেন।
নিহতরা
হলেন- তারাকান্দা উপজেলা কাকনি ইউনিয়নের কানিহরি গ্রামের প্রয়াত আব্দুল
কুদ্দুসের ছেলে মাওলানা আব্দুল কাদির হালিম (৪২) এবং ফুলপুর উপজেলার সেলিম
মিয়ার ছেলে মো. নিশাদ (১৫)।
ওসি টিপু সুলতান বলেন, শেরপুর থেকে ছেড়ে আসা
ঢাকাগামী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা অটোরিকশার সঙ্গে
সংঘর্ষ হয়। এ সময় ওই বাস ও অটোরিকশার কাছাকাছি থাকা আরেকটি অটোরিকশা,
কভার্ড ভ্যান ও হ্যান্ডট্রলি ধাক্কা দেয়।
এতে দুইজন নিহত ও অন্তত সাতজন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর একজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ
ঘটনার পর ময়মনসিংহের সঙ্গে শেরপুর, হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়ার সড়কের দুই পাশে
যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশ ঘটনাস্থলে
গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন।
এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান ওসি টিপু সুলতান।
এর
আগে শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে ময়মনসিংহ-হালুয়াঘাট সড়কের ফুলপুর উপজেলার
কুরিয়ার ব্রিজ এলাকায় বাসের সঙ্গে মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে আটজন নিহত হয়। এ
ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা বাসটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
একই দিন বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তারাকান্দা উপজেলার কোদালধর এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়।
ফুলপুরে
বাস ও মাহিন্দ্রার সংঘর্ষে আটজন নিহতের ঘটনায় শনিবার রাতে মামলা হয়েছে।
সড়ক পরিবহন আইনে ফুলপুর থানার এসআই মুকুল সরকার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায়
বাস চালক মো. রিপন (৪০) ও ট্রাক্টর চালক মো. রতন মিয়া (২৫) সহ অজ্ঞাতপরিচয়
আরও তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। চালক রিপন ময়মনসিংহ নগরের শম্ভুগঞ্জ
সবজিপাড়া এলাকার বাসিন্দা এবং রতন ফুলপুর উপজেলার বাঁশাটি গ্রামের
বাসিন্দা।
এজাহারে বলা হয়েছে, হালুয়াঘাট থেকে ঢাকাগামী শ্যামলী বাংলা
পরিবহনের একটি বাস কুরিয়ার ব্রিজ এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি মাহিন্দ্রার
সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে কয়েকজনসহ মোট আটজন নিহত হয়।
এ
ছাড়া ঘটনাস্থলে লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর রাতের বেলায় সড়কে দাঁড়িয়ে ছিল; যা
দুর্ঘটনার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। দুর্ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ক্ষুব্ধ হয়ে
বাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে
গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
ফুলপুর থানার ওসি আবদুল হাদি বলেন,
হতাহতদের পরিবার বিনা ময়নাতদন্তে লাশ নেওয়ার আবেদন করলে তা হস্তান্তর করা
হয়। আসামিদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।
তিনি বলেন, বেপরোয়া গতি, অবৈধ বাহন এবং চালকের অদক্ষতার কারণে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ময়মনসিংহ
জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, চালকের অদক্ষতা এবং বেপরোয়া
গতির কারণে এসব দুর্ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা গ্রহণ করছে পুলিশ।