আবাসন খাতে কালো টাকা
সাদা করার সুযোগ বাতিল করার পাশাপাশি আবাসন খাতের সংগঠন রিহ্যাবের দাবির
মুখে আসছে বাজেটে জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে উৎসে কর আরও কমিয়েছে সরকার।
প্রকৃত
বিক্রয়মূল্যে ভূমি নিবন্ধন উৎসাহিত করতে আসছে অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত
বাজেটে এলাকা ও জমির শ্রেণিভেদে বিদ্যমান ৮, ৬ ও ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬, ৪ ও
৩ শতাংশ করা হয়। এবার আরও ১ শতাংশ কমিয়ে ৫, ৪ ও ২ শতাংশ করা হয়েছে।
এ পরিবর্তন এনে রোববার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ।
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আসছে অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়।
জমি
নিবন্ধনে উৎসে কর কমানোর বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টার দপ্তরে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড-এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, “যেহেতু
আমরা কালো টাকা সাদার বিধান তুলে দিলাম, এখানে রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড হাউজিং
অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (রিহ্যাব) এর একটা দাবি ছিল যেন জমি নিবন্ধনে
উৎসে কর কমানোর একটা উদ্যোগ নেওয়া হয়।
“এ বাজেটে দামি এলাকার জন্য উৎসে
কর ৮ শতাংশ থেকে ৬ শতাংশ করা হয়েছিল। এখন আমরা আরও ১ শতাংশ কমিয়ে ৫ শতাংশ
করেছি। আর যেসব এলাকায় ৬ শতাংশ ছিল সেসব এলাকায় আমরা ৩ শতাংশ করেছি। আর
যেগুলো ৪ শতাংশ ছিল সেগুলো ২ শতাংশ।
“অর্থাৎ আমরা চাচ্ছিলাম, যাতে লোকজন দাম বেশি হলে জমির দাম ঠিকঠাক দেখাবে না, সেখান থেকে যেন বেরিয়ে যায়।”
আইনের
এ পরিবর্তনটি রাষ্ট্রপতির সম্মতি নিয়ে নির্দিষ্টকরণ অধ্যাদেশের গেজেট
আকারে প্রকাশিত হবে। অধ্যাদেশটি জারি করার পর তা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হয়ে
যাবে।
২ জুন রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন
করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, যেখানে জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে উৎসে
কর কমানোর প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
বাজেট উপস্থাপনের পরপরই এনবিআর নতুন উৎসে কর বিধিমালা প্রকাশ করে।
এতে
বলা হয়, ঢাকা জেলার গুলশান, বনানী, মতিঝিল ও তেজগাঁও থানার অন্তর্গত মৌজার
মধ্যে ক থেকে ঙ শ্রেণির ভূমির নিবন্ধন ফি প্রতিকাঠার বিক্রয়মূল্যের ৮
শতাংশের পরিবর্তে ৬ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।
বর্তমানে এ এসব এলাকায় ক
শ্রেণি জমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৮ শতাংশ বা ১৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটি
বেশি। আসছে অর্থবছরে ৬ শতাংশ অথবা ৯ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেটি
পরিশোধ করতে হবে।
খ শ্রেণির ভূমি নিবন্ধন ফি প্রতিকাঠার বিক্রয়মূল্যের ৬
শতাংশ বা সাড়ে ৩ লাখ টাকার যেটি বেশি তা পরিশোধ করতে হবে নতুন আইনে;
বর্তমানে ৮ শতাংশ বা ৬ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ টাকা উৎসে কর
দিতে হয়।
গ শ্রেণির ভূমি নিবন্ধনের ক্ষেত্রে প্রতিকাঠার বিক্রয়মূল্যের ৮
শতাংশ বা ১৫ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেটি উৎসে কর দিতে হয়। আসছে
অর্থবছরে থেকে ৬ শতাংশ অথবা ৯ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি সেটি পরিশোধ করতে
হবে।
এভাবে প্রতিটি শ্রেণির ভূমি নিবন্ধনেই করহার ও করের টাকা কমিয়ে আনা হয়েছে।
একইভাবে
ঢাকার ধানমন্ডি, ওয়ারী, তেজগাঁও, শিল্পাঞ্চল থানা, শাহবাগ, রমনা পল্টন,
বংশাল, নিউ মার্কেট ও কলাবাগান থানার অন্তর্গত সকল মৌজার প্রতিকাঠার
নিবন্ধন ফি ৬ শতাংশ বা সাড়ে ৬ লাখ টাকার মধ্যে যেটা বেশি, সেই হারে পরিশোধ
করতে হবে। যা এতদিন ছিল ৮ শতাংশ বা ১০ লাখ টাকার মধ্যে যেটি বেশি।
নতুন এ বিধানের ফলে সবক্ষেত্রেই ১ শতাংশ হারে কমবে।