বৃহস্পতিবার ২৬ জুন ২০২৫
১২ আষাঢ় ১৪৩২
এক বাজেটেই সব ঠিক করা যায় না: অর্থ উপদেষ্টা
প্রকাশ: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ১:২৭ এএম |



আলাপ আলোচনা ছাড়া বাজেট প্রণয়নের সমালোচনা নাকচ করে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এক বাজেটে রাতারাতি সব সমস্যার সমাধান হয় না।
তিনি বলেন, “অনেকের ধারণা হচ্ছে একবারে এমন এক বাজেট আমি করব যাতে ট্যারিফ, ভ্যাট, ট্যাক্স একেবারে সব কমে যাবে। আয় বাড়বে, ব্যবসা বাড়বে সব কিছু ঠিকঠাক হয়ে যাবে। এটা কেমন বাজেট? এটা তো আকাশ থেকে পড়া একটা বাজেট। এটা হয় না, এক বাজেটে এগুলো হয় না।”
আগামী ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন পাওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে আসনে অর্থ উপদেষ্টা।
সচিবালয়ে বাজেটের বিষয়ে নানা সমালোচনা নিয়ে দীর্ঘ জবাব দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন তিনি।
রোববার সকালে প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আগামী অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের চেয়ে যা ৭ হাজার কোটি টাকা কম।
গত ২ জুন রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচার মাধ্যমে বাজেট প্রস্তাব করেন অর্থ উপদেষ্টা। এতে মোট ব্যায়ের আকারে কোনো পরিবর্তন না এলেও সামাজিক নিরাপত্তা খাত, রপ্তানি প্রণোদনা ও সরকারি কর্মকর্তাদের বিশেষ সুবিধা খাতে বেশ খানিকটা ইতিবাচক পদক্ষেপ এসেছে। বাতিল করা হয়েছে কালো টাকা সাদা করার প্রস্তাব।
সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বরাদ্দ ৮১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯১ হাজার ২৯৭ কোটি টাকা করা হয়েছে। রপ্তানিখাতের প্রণোদনা তৃতীয় ধাপে আসছে জুলাই থেকে প্রত্যাহার হওয়ার কথা ছিল। সময়টি বাড়িয়ে ২০২৬ সালের জানুয়ারি করা হয়েছে। তখন আরেক ধাপে প্রণোদনা প্রত্যাহার হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “অনেকে সমালোচনা করা করে বলেন, কারও সঙ্গে আলাপ আলোচনা ছাড়াই আমরা বাজেট করেছি। এটা একেবারেই সঠিক নয়। আমরা ব্যাপকভাবে আলোচনা করেছি।
”ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বসেছি। এমনকি অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান এর সঙ্গেও বসেছি। যাদেরকে আমরা পণ্ডিত ব্যক্তি মনে করি তাদের সাথে বসেছি। প্রতিদিনই এনবিআরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।”
অতীতের সরকারগুলোর মতই বাজেট দিতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমরা একটা বিশেষ সময়ে যে চ্যালেঞ্জগুলো সামনে রেখে বাজেটটা দিয়েছি, সেটা অত সহজ না। অনেকে বলে এটা করলে ভালো হতো, ওটা করলে ভালো হতো, উনি পুরোনো পথে চলেছেন, ইত্যাদি ইত্যাদি।
”পুরোনো পথে চলার একটা বিশেষ সুবিধা আছে। পুরোনো পথে চলা দোষের না। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান দুর্বল হয়ে গেছে। দুর্বল করে দেওয়া হয়েছে।”
অনেক প্রতিকূলতার মধ্যেও দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনার বিষয়টি নিজের সাফল্য হিসাবে তুলে ধরে সালেহউদ্দিন বলেন, অন্তর্র্বতী সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে অর্থনীতি যে ঘুরে দাঁড়িয়েছে তা সবাই স্বীকার করছে। অনেকে অর্ধেক স্বীকার করছে, অর্ধেক করছে না।
“পরশু দিন (শুক্রবার) শুনতে পেলাম এডিবি ৪০০ মিলিয়ন ডলার দেবে। গতকাল (শনিবার) বিশ্ব ব্যাংক ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা বলেছে। জাইকা ৪১৪ মিলিয়ন ডলার। এআইআইবি দেবে ৪০০ মিলিয়ন ডলার। এটা কিন্তু একেবারেই হালনাগাদ তথ্য। এভাবে বাজেট সাপোর্ট বাবদ ২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার আসছে। সরকারি বেসরকারি পারফরম্যান্সের কারণে সন্তুষ্ট হয়ে এই সহায়তা আসছে। এর বাইরে প্রকল্প সহায়তা আসছে। আমরা যদি খারাপ ব্যবস্থাপক হতাম তাহলে এত সহায়তা আসতো না।”
মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মূল্যস্ফীতি আমরা ভেবেছিলাম বেশ কমে যাবে। কিন্তু এখনও ৯ এর মধ্যে রয়েছে। আশা করছি এটা ধীরে ধীরে ৬ দশমিক ৫ এর ঘরে চলে আসবে।”
‘সালেহউদ্দিন তুমি দাম বাড়িয়ে দিলা?’
কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমার অনেক বন্ধু বান্ধব বলছে, সালেহউদ্দিন তুমি স্পঞ্জের স্যান্ডেলের দাম বাড়িয়ে দিলা। আরে বাবা ১৫০ টাকার স্যান্ডেল এখন ১৬৫ টাকায় কিনতে হবে। এটা একটা বিষয় হল? এখানে ১৮ লাখ টিআইএন এর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ হচ্ছে জিরো ট্যাক্স। তাহলে ট্যাক্সটা পাবো কোথায়। ১২ লাখ লোকের কি সাড়ে তিন লাখ টাকার ওপর ইনকাম নেই? এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?”
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা নিয়ে সমালোচনার বিষয়ে তিনি বলেন, “সেই সুযোগ আমরা দায়িত্ব আসার পরও কিছুটা কমিয়েছিলাম। এখন পুরোপুরি প্রত্যাহার করা হয়েছে।
“সব টাকাই কিন্তু কালো টাকা না। অপ্রদর্শিত আয়ের একটা সুযোগ আমরা দিয়েছিলাম। সেই সুযোগ আমরা পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নিয়েছি। অনেকে বলছে ফ্ল্যাট বাসাবাড়ি বিক্রি কমে যেতে পারে।”
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার নতুন করে করারোপ না করার তথ্য দিয়ে তিনি বলেন, কিছু ব্যবসায়ী এবিষয়ে অপতথ্য ছড়াচ্ছে।
“বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বলছে, তাদের টিউশন ফি বেড়ে গেছে। আমাদের কিছু ব্যবসায়ী আছে, লোকজনকে ম্যানিপুলেট করে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো ভ্যাট নেই। তাদের মুনাফা করার কথা না। তাদের যা থাকবে সেটা উন্নয়নে খরচ করবে। যেটা উদ্বৃত্ত হবে সেখানে আমরা বলেছি একটা কর দাও। এটা কিন্তু ২০০৫ সাল থেকে চালু আছে। আদালতে পর্যন্ত ওনারা গেছেন। তাদের কর সাড়ে ২৭ শতাংশ না করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। এটাকে ১৫ থেকে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বাড়তি আয়ের ভেতরে আমি গেলাম না। কী হয়, না হয় সেটা আপনারাই ভালো জানেন।“
সংবাদ সম্মেলনে অর্থ সচিব খায়েরুজ্জামান মজুমদার, এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানসহ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।














সর্বশেষ সংবাদ
এইচএসসি পরীক্ষা শুরু আজ
ঘরেই জন্মাচ্ছে এডিস মশার লার্ভা
অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন কুমিল্লার কৃতি সন্তান ডাঃ মহিউদ্দিন মাসুম
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘এক্সকিউজ’ দেয়ায় ট্রেনিংপ্রাপ্ত : হাসনাত আব্দুল্লাহ
জুলাই স্মৃতি উদযাপনে 'কুবির ১১ জুলাই’ অন্তর্ভুক্তির দাবী
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
রাইস কুকারে রান্না করতে গিয়ে মা-মেয়ের মৃত্যু
কুমিল্লায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের পর গ্রেপ্তার ৬
কুমিল্লায় এ বছর এইচএসসিতে ঝরে গেছে ২৫ হাজার শিক্ষার্থী
কুমিল্লায় ৬ হাজার ভারতীয় শাড়ি ও লেহেঙ্গা জব্দ, আটক ১
কুমিল্লায় ট্রাক চাপায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু, স্ত্রী হাসপাতালে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২