বাংলাদেশের
বিপক্ষেই ক্যারিয়ারের তিক্ত একটি অভিজ্ঞতা যুক্ত হয়ে আছে অ্যাঞ্জেলো
ম্যাথিউজের। ২০২৩ বিশ্বকাপে সেই টাইমড আউটের ঘটনা হয়তো তিনি আজীবনই ভুলবেন
না।
তবে, এই বাংলাদেশের কাছ থেকেই টেস্ট ক্রিকেটের বিদায় বেলায় ভালো
খেলা উপহার পেয়েছেন। হারতে হয়নি তার শেষ টেস্টে। ড্র হয়েছে। তবে, গলে
বাংলাদেশ এবং শ্রীলঙ্কা- দুই দল মিলে বেশ ব্যাটিং উপভোগ করেছে।
সেই ২০০৯
সালে জুলাই মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে এই গলেই অভিষেক হয়েছিল অ্যাঞ্জেলো
ম্যাথিউজের। সময়টা তখন কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে আর মুত্তিয়া
মুরালিধরনদের। কিংবদন্তি এসব ক্রিকেটারের ছোঁয়া পেয়েছিলেন কৃষ্ণবর্ণের এই
ক্রিকেটার।
অর্থ্যাৎ, তাকে বলা যায় দুই যুগের মেলবন্ধন তৈরিকারী একজন
ক্রিকেটার। যিনি লঙ্কানদের সোনালী সময়টাও দেখেছেন, আবার ঐতিহ্য হারিয়ে
দুর্বল দলে পরিণত হওয়া শ্রীলঙ্কারও প্রতিনিধিত্ব করেছেন।
যেখান থেকে
শুরু করেছিলেন, সেখানেই ইতি টানলেন। ২০০৯ থেকে ২০২৫ - মাঝে কেটে গেলো ১৬
বছরের টেস্ট ক্যারিয়ার। এই ১৬ বছরে খেলেছেন ১১৯টি টেস্ট ম্যাচ। ৪৪.৪০ গড়ে
২১২ ইনিংসে রান করেছেন ৮২১৪। সেঞ্চুরি ১৬টি, হাফ সেঞ্চুরি ৪৫টি এবং
সর্বোচ্চ ব্যাক্তিগত রান ছিল ২০০। উইকেট নিয়েছেন ৩৩টি।
বিদায় বেলায়
দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের দুই ব্যাটার মুশফিকুর রহিম এবং নাজমুল হোসেন শান্তর
উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করলেন। শেষ বেলায় এমন সুন্দর একটি টেস্ট ম্যাচ উপহার
দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, ‘একটি দুর্দান্ত টেস্ট ম্যাচের জন্য আমি
বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানাই। মুশি (মুশফিকুর রহিম) এবং শান্ত (নাজমুল হোসেন
শান্ত) সুন্দর ব্যাটিং উপহার দিয়েছেন। এছাড়া পাথুমও সুন্দর ব্যাট করেছেন।’
এই
টেস্ট থেকে টেস্টকে বিদায় বলে দেবেন, তা অনেক আগেই জানিয়েছিলেন ম্যাথিউজ।
অবসর ঘোষণার কথা জানানোর পর ভক্ত-সমর্থকদের কাছ থেকে যে ভালোবাসা পেয়েছেন,
তা দেখে অভিভূত তিনি। আজ ম্যাচ শেষে তিনি বলেন, ‘অবসর ঘোষণা করার পর থেকে,
আমি যে ভালোবাসা পেয়েছি তা বিশ্বাস করতে পারছি না। অবশ্যই এই ভালোবাসায় আমি
অভিভূত। আপনাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ, যারা আমাকে সর্বত্র সমর্থন করেছেন।’
অনেক
উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারকে টেনে নিয়েছেন। ম্যাথিউজ বলেন, ‘(১৬
বছরের যাত্রাটা) সহজ যাত্রা নয়। অনেক উত্থান-পতন, ছিল; কিন্তু সবকিছুর মধ্য
দিয়ে, আমি যে সমর্থন পেয়েছি তার কারণেই আমি এতদূর আসতে পেরেছি। স্পষ্টতই
(আমি আবেগপ্রবণ) সেরা ফর্ম্যাট এবং যে ফর্ম্যাটে আমি খেলতে ভালোবাসি তা
থেকে অবসর নিচ্ছি। তরুণ খেলোয়াড়দের জন্য সময় এসেছে দায়িত্ব নেওয়ার এবং
এটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।’
টেস্ট ক্যারিয়ারে সেরা ম্যাচ বা স্মরণীয়
মুহূর্ত কোনটি। জানতে চাইলে ম্যাথিউজ বলেন, ‘ইংল্যান্ডে ইংল্যান্ডের
বিরুদ্ধে জয় এবং শ্রীলঙ্কায় অস্ট্রেলিয়ানদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করা -
এটি ছিল একটি বিশাল হাইলাইট এবং সম্মান, যা পুরো দলের জন্য অর্জিত
হয়েছিল।’
সর্বশেষ দলের খেলোয়াড় ও কোচদের ধন্যবাদ জানিয়ে ম্যাথিউজ বলেন,
‘সমস্ত খেলোয়াড় এবং কোচদের প্রতি কৃতজ্ঞতা, যারা আমাকে সর্বত্র সমর্থন
করেছেন। অভিষেকের দিন থেকে আমার সাথে থাকার জন্য সমস্ত ভক্তদের প্রতি
কৃতজ্ঞ। আপনাদেরকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।’