গত ১৭ বছরে কুমিল্লার বিভিন্ন থানায় রাজনৈতিক হয়রানীর উদ্দেশ্যে দায়েরকৃত মামলার মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪৯টি মামলা প্রত্যাহার হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা জজ আদালতের পিপি এডভোকেট কাইমুল হক রিংকু। এছাড়াও প্রত্যাহারের জন্য আরো ৪৩টি মামলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। হয়রানীমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে কুমিল্লায় মোট ৭৩৮টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জমা পড়েছে। যেগুলো থেকে যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ পাঠানো হচ্ছে মন্ত্রণালয়ে। এসব মামলায় বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর নামোল্লেখসহ অসংখ্য নেতৃবৃন্দকে আসামি করা হয়েছিলো।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত কমিটির সভা শেষে দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে এসব তথ্য জানান কাইমুল হক রিংকু।
তিনি বলেন, হয়রানীমূলক রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের ভিত্তিতে কুমিল্লায় ৭৩৮টি মামলা প্রত্যাহারের জন্য আবেদন জমা পড়েছিল। এগুলোতে আমরা আমাদের মতামতি দিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে আরেকটি চিঠি আসে, যেখানে উল্লেখ করা হয় ‘ইনডিভিজুয়াল’ (পৃথক-পৃথকভাবে) যারা আবেদন করবেন, তাদের মামলা প্রত্যাহার হবে। বৃহস্পতিবার কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এ সংক্রান্তে আমাদের একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় ৪৩টি মামলা প্রত্যাহারের বিষয়ে সুপারিশের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে সোমবারের মধ্যে আমরা সুপারিশ আকারে পাঠিয়ে দিবো।
এড. রিংকু বলেন, এর আগে আইনমন্ত্রণালয়ে হয়রানীমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য জেলা পিপি হিসেবে আমি যে মামলাগুলোর তালিকা পাঠিয়েছিলাম, সেখান থেকে ১৪৯টি মামলা প্রত্যাহার হয়ে এসেছে। এসব মামলা জেলার বিভিন্ন থানায় দায়ের করা হয়েছিলো। এটি একটি চলমান পক্রিয়া। এগুলো নিয়ে আরো মিটিং হবে, প্রত্যাহার হবে। আমরা যাচাই-বাছাই শেষে সুপারিশ পাঠাবো।
প্রত্যাহারের জন্য আবেদন আসার পর এগুলো বিশেষভাবে যাচাই-বাছাই হচ্ছে উল্লেখ্য করে পিপি কাইমুল হক রিংকু বলেন, এখানে আমরা আবেদনকারী এবং মামলা কিভাবে হলো, রাজনৈতিক কি না এগুলো যাচাইয়ে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কার কতটুকু গুরুত্ব কিংবা মামলার আসামি কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা না ভেবে আমরা দেখছি- মামলাটা কতোটা হয়রানীমূলক এবং কতোটা প্রতিহিংসামূলক সেটা আমরা বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি। এ কমিটিতে জেলা পিপি হিসেবে আমি আছি, জেলা প্রশাসক সাহেব আছেন, পুলিশ সুপার, এডিএম (অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট) সাহেব। আমরা চারজনই যাচাই-বাছাই করছি। ৪৯৪ ধারা মোতাবেক এটা পাবলিক প্রসিকিউটরের দায়িত্ব। ওনি পিপি স্বয়ং এটাকে ফরোয়ার্ড করে মতামত দিতে হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৭ বছরে কুমিল্লায় অনেক মিথ্যা মামলা, গায়েবী মামলা হয়েছে। এগুলো তালিকা করে সব পাঠানো হয়েছে মন্ত্রণালয়ে। সিদ্ধান্ত নিবে মন্ত্রণালয়। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত আসার জানা যাবে কতগুলো মামলা প্রত্যাহার হলো। মন্ত্রণালয় থেকে প্রত্যাহার হয়ে আসলে এগুলো আমি সংশ্লিষ্ট কোর্টে পাঠিয়ে দিবো। কোর্ট কনসার্ন দিলো এগুলো বাতিল হয়ে যাবে।