কুমিল্লার
লালমাই উপজেলায় সৌদি প্রবাসী আরিফুর রহমান এর বাড়ির চলাচলের একমাত্র ইটের
সলিং রাস্তা টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এতে ওই
পরিবারের লোকজন অবরুদ্ধ হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ১২ দিন ধরে অবরুদ্ধ
রয়েছে তারা। ঘটনাটি ঘটেছে লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের কাপাসতলা
গ্রামের খন্দকার বাড়িতে।
অবরুদ্ধ জীবন থেকে মুক্তি চেয়ে তিনি লালমাই
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরকারি
নাম্বারে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েছেন। সোমবার (২৬ মে) দুপুরে প্রবাসী নিজেই
তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কাপাশতলা গ্রামের
খন্দকার বাড়ির চলাচলের একমাত্র পথটির দুই পাশে টিনের বেড়া দেওয়া। পাকা সড়ক
থেকে মাত্র ৫০ ফিট দূরে থেকেও বাড়িতে অবরুদ্ধ সৌদি প্রবাসী আরিফুর রহমানসহ
তাদের দুটি পরিবারের ১১ জন নারী পুরুষ। মাদরাসায় পড়ুয়া প্রবাসীর ছেলে
মেয়েরাও বাড়িতে অবস্থান করছেন।
ভুক্তভোগী প্রবাসী আরিফুর রহমান বলেন,
আমি একজন সৌদি প্রবাসী। বিদেশে কামলা দিয়ে দেশে টাকা পাঠাই। দুই মাস আগে
ছুটিতে দেশে এসে পাকা ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছি। ঘর নির্মাণের খবর পেয়ে
বাড়ির চলাচলের একমাত্র পথটিতে গর্ত করে ময়লা পানি ও আবর্জনা ফেলতে থাকে
আমাদের প্রতিবেশী সামছল হক সামা। এনিয়ে আমরা গ্রামের সর্দার মাতব্বরদের
জানালে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে গত ১৫ মে পথটি টিনের বেড়া দিয়ে বন্ধ করে দেন। বিগত
১২দিন ধরে আমিসহ আমাদের দুইটি পরিবার অবরুদ্ধ। ছেলে মেয়েরা মাদরাসায় যেতে
পারছে না।
ভুক্তভোগী কৃষক আবুল খায়ের বলেন, পথ বন্ধ থাকায় গত ১২দিন ধরে
মসজিদে নামাজ পড়তে যেতে পাারছি না। আমার বয়স হয়েছে। যে কোন সময় মরে যেতে
পারি। মৃত্যুর পর দাফনের জন্য কবরস্থানে লাশের খাটিয়াটাও নিতে পারবে না।
শুনেছি ৫০ বছরের পুরনো চলাচলের রাস্তাটি সামছল হক টাকার জোরে কিনে নিয়েছেন।
আমাদের রাস্তার প্রতি তার এতো লোভ কেন?
অভিযুক্ত সামছল হক সামা বলেন,
চলাচলের পথসহ এক শতক ৬৯ পয়েন্ট জমি আমি আমার মামাতো বোন পারভিন থেকে পানি
নিষ্কাশনের সুবিধার জন্য এক বছর আগে ক্রয় করেছি। দুটি পরিবারকে এই পথ দিয়ে
কিছুদিন চলতে দিয়েছি। আমার বসতের পানি পথে যায় কেন? এই নিয়ে তারা আমার
পরিবারের সাথে জগড়া করেছে। সেকারনে কয়েকদিন আগে দুই মাথায় টিনের বেড়া দিয়ে
পথটি বন্ধ করে দিয়েছি।
লালমাই থানার ভারপ্রাপ্ত র্কমকর্তা (ওসি) মো.
শাহ আলম বলেন, একজন প্রবাসীর ক্ষুদে বার্তা ও ইউএনও স্যারের মেসেজ পেয়ে
ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে।
লালমাই
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) হিমাদ্রী খীসা বলেন, কারও বাড়ির চলাচলের
পথ বন্ধ করার সুযোগ নেই। প্রবাসীর ক্ষুদে বার্তা পেয়েছি। অবরুদ্ধ পরিবারকে
স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে দ্রুত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছি।