পেশাদার
ফুটবল খেলার লক্ষ্য নিয়ে ২০১৪ সালে ছেড়েছিলেন দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ১০ বছরের বেশি সময় সৈনিক হিসেবে চাকরি করে সেনাবাহিনী
থেকে ইস্তফা দিয়ে আশরাফুল ইসলাম রানা যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার
লিগের ক্লাব মোহামেডানে।
মানিকগঞ্জের এই গোলরক্ষক মোহামেডানের সাদা-কালো
জার্সিতে ক্যারিয়ার শুরু করলেও শেষটা করলেন ব্রাদার্স ইউনিয়নের কমলা রংয়ের
জার্সিতে। অর্থাৎ তার ক্যারিয়ারের প্রথম ক্লাব মোহামেডানের বিপক্ষে ম্যাচ
দিয়ে!
শুক্রবার কুমিল্লার ভাষা শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে
মুখোমুখি হয়েছিল সদ্য চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান ও ব্রাদার্স। হাতে আরও এক ম্যাচ
থাকলেও রানা আনুষ্ঠানিক অবসর নেন সেই দলের বিপক্ষে খেলে, যে মোহামেডান
থেকেই শুরু তার ফুটবল ক্যারিয়ারের বাঁকবদল।
রানা আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন,
এই মৌসুমই খেলোয়াড় হিসেবে তার শেষ। এবারই লিগের শেষ দিকে খুলে রাখবেন প্রিয়
জার্সি আর বুট। যে কারণে বিদায়ের মঞ্চ প্রস্তুতই ছিল। শুক্রবার রানার দলের
খেলোয়াড় এবং মোহামেডানের খেলোয়াড়রা তাকে গার্ড অব অনার দিয়ে বিদায় জানান।
দুই
দলের খেলোয়াড়রা লাইন দিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন। মাঝ দিয়ে রানা হেঁটে গেছেন।
মোহামেডান ও ব্রাদার্সের খেলোয়াড়রা রানার হাতে রজনীগন্ধার স্টিক দিয়ে
বিদায়ী শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। খেলোয়াড়-কর্মকর্তারা ছাড়াও কোচিং স্টাফ ও
অফিসিয়ালরা বিদায় জানিয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও গোলরক্ষককে।
গত
মৌসুমে চট্টগ্রাম আবাহনীতে খেলা আশরাফুল এবার যোগ দিয়েছেন ব্রাদার্সে।
আশরাফুল রানা বলেন, ‘আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এই মৌসুমের পর আর ঘরোয়া ফুটবল
খেলবো না। খেলা ছেড়ে আমি কোচিং পেশায় মনোযোগ দেবো। আমার লক্ষ্য জাতীয় দলের
ডাগআউটে দাঁড়ানো। আমি তৃপ্তি নিয়েই ক্যারিয়ার শেষ করতে যাচ্ছি। আবাহনী
ছাড়া দেশের প্রায় সব ঐতিহ্যবাহী ক্লাবে খেলেছি। আগে কখনো ব্রাদার্সে
খেলিনি। এই দলের জার্সিতেই আমি বিদায় জানালাম ফুটবলকে।’
মোহামেডানের
জার্সিতে পেশাদার ফুটবল শুরু করলেও সাদা-কালো জার্সিতে এক মৌসুমের বেশি
ছিলেন না রানা। ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বেশি ৮৬ ম্যাচ খেলেছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া
চক্রের জার্সিতে।
মোহামেডানের জার্সিতে পেশাদার লিগ শুরুর বছরই আশরাফুল
ডাক পেয়েছিলেন জাতীয় দলে। টানা ৮ বছর দেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ২০২২ সালে
ইনজুরির কারণে জাতীয় দলের ক্যাম্প ছেড়েছিলেন রানা। ৮ বছরে তিনি লাল-সবুজ
জার্সিতে ম্যাচ খেলেছেন ২৫টি।
আশরাফুল ইসলাম রানা বাংলাদেশ অলিম্পিক
(অনূর্ধ্ব-২৩) দলের জার্সিতেও খেলেছেন চারটি ম্যাচ। ফুটবল খেলা ছেড়ে তিনি
কোচিংয়ের পাশাপাশি নজর দেবেন ব্যবসায়। সাভারে তিনি একটি ক্লিনিকও দিয়েছেন।