নিজস্ব
প্রতিবেদক: ঈদুল আজহা উপলক্ষে সড়ক পথে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ ও
নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে পশুবাহী গাড়ি মহাসড়কের বাঁ লেইনে চলার নির্দেশনা
দিয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ।
একই সঙ্গে মহাসড়কের উপর বা পাশে বসে,
এমন চিহ্নিত ২১৭টি পশুর হাট ইজারা না দেওয়া এবং সড়কে চাপ কমাতে শিল্প
কারখানা পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের এক সভায় এরকম বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে বুধবার তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে।
পশুর
হাটের প্রবেশমুখ সড়কের বিপরীতে রাখার নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, “কোরবানির
পশু পরিবহনের ট্রাকের সামনে ব্যানার ব্যবহার করতে হবে এবং পণ্য পরিবহনের
যানবাহনে যাত্রী বহন করা যাবে না।”
দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহন দ্রুত সরিয়ে
নিতে রেকার প্রস্তুত রাখা হবে তুলে ধরে বলা হয়েছে, “দেশের সকল বাস
টার্মিনাল ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা এবং সড়ক পথে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই,
পকেটমার, মলমপার্টি ও অজ্ঞান পার্টির দৌরাত্ম্য রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা
গ্রহণ করা হবে।”
সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনা রোধে নিয়ন্ত্রিত
গতিসীমা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানিয়ে বলা হয়, “নসিমন, করিমন,
ইজিবাইকসহ তিন চাকার সকল যানবাহন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে চলাচল বন্ধ করা
হবে। সড়কের উভয় পাশে অস্থায়ী বাজার অপসারণ করা হবে।
“ফিটনেসবিহীন ও ত্রুটিপূর্ণ গাড়ি চলাচল বন্ধ করা হবে। মেরামতের ওয়ার্কশপ ঈদের দশ দিন আগে থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।”
সড়ক সংস্কারের কাজ ঈদের সাত দিন আগে শেষ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভায়।
এ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কসহ সকল মহাসড়কের উন্নয়ন কাজ ঈদের সময় সাত দিনের জন্য বন্ধ রাখা হবে।
তথ্যবিবরণীতে
বলা হয়, “চিহ্নিত ১৪৯টি স্পটে যাটজট নিরসনে মনিটরিং টিম গঠন করে কার্যক্রম
গ্রহণ এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। দেশে সকল বাস টার্মিনালে
অতিরিক্ত ভাড়া আদায় এবং অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করার বিষয়ে কার্যকর
পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
“সড়ক ও জনপথ এবং সেতু বিভাগের অধীন সকল সেতুতে
টোল প্লাজা যানজটমুক্ত রাখতে সার্বক্ষণিক ইটিসি (ইলেকট্রনিক টোল কালেকশন)
বুথ চালু রাখা হবে।”
ঈদযাত্রা যাতে যানবাহন সংকট না হয় সে জন্য বিআরটিসি
ঢাকা মহানগরী থেকে বিভিন্ন জেলা শহর ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ‘স্পেশাল ঈদ
সার্ভিস’ পরিচালনার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ
বলেছে, ঈদের বন্ধের দিনে মহাসড়কে ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চলাচল বন্ধ
রাখা হবে। গরুবাহী যানবাহন, নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য, পঁচনশীল দ্রব্য,
তৈরি পোশাক সামগ্রী, ঔষধ, সার ও জ্বালানি বহনকারী যানবাহন এ নিষেধাজ্ঞার
আওতামুক্ত থাকবে।
সড়কে যেন একসঙ্গে ঘরমুখো মানুষের চাপ না পড়ে সে জন্য
তৈরি পোশাক কারখানা সকল শিল্পকারখানার শ্রমিকদের পর্যায়ক্রমে ছুটি দেওয়ার
ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সড়কপথে গুরুতর দুর্ঘটনার
ক্ষেত্রে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এর সহায়তায় সরকারি ও বেসরকারি
হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা ও অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা রাখা হবে। একই সঙ্গে
স্বাস্থ্য বিভাগ মহাসড়কের পাশে থাকা হাসপাতালের তালিকা হাইওয়ে পুলিশকে
দেবে। সদরঘাটসহ সকল টার্মিনালে ক্লোজ সার্কিট (সিসি) টিভি ক্যামেরা ও
সার্চলাইটের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলে তথ্যবিবরণীতে বলা হয়েছে।
ঈদ উপলক্ষে
ফিলিং স্টেশনগুলো ঈদের দিন, তার আগের সাত ও পরের পাঁচ দিন সার্বক্ষণিক খোলা
রাখা ও যাত্রী পারাপারের জন্য পর্যাপ্ত ফেরির ব্যবস্থা রাখার সিদ্ধান্ত
হয়েছে সড়ক পরিবহন ও সেতু বিভাগের সভায়।
ঈদের ছুটি শুরুর আগের দিন এবং
ছুটির দিনগুলোর জন্য একটি কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা রাখার সিদ্ধান্তের
বিষয়টি জানিয়ে তথ্যবিরণীতে বলা হয়েছে, নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ফোন নম্বর, ফোকাল
পারসন সংক্রান্ত তথ্যাদি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অবহিত করা হবে।
এতে বলা হয়,
গরুর হাটের সুনির্দিষ্ট সীমানা ও ম্যাপ তুলে ধরে ইজারা প্রক্রিয়া সম্পন্ন
করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে কোনো গরুর হাট ইজারা দেওয়া হবে না।
যানবাহন কোরবানির পশু নামানোর জন্য ও বিক্রি করা পশু বহনের জন্য হাটে পৃথক
পৃথক জায়গা খালি রাখা হবে। প্রতিটি গরুর হাটে ইজারাদারের নিজস্ব
ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মীর ব্যবস্থা রাখা হবে।
এছাড়া
হাটের কার্যক্রম ঠিক রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশন বা জেলা প্রশাসন
ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবে এবং পুলিশ যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।