গত ৪৮ ঘন্টায় কুমিল্লায় ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলা আবহাওয়া অফিস। শনিবার সকাল থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কুমিল্লাজুড়ে কখনও ভারি আবার কখনও হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। অবিরাম এ বৃষ্টিতে কুমিল্লার জনজীবনে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। গেল ৪৮ ঘন্টার এ বৃষ্টিতে কুমিল্লা শহর ও তার আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নগরীর বিভিন্ন রাস্তাগুলোতে সৃষ্ট খানাখন্দে জমেছে বৃষ্টির পানি। এতে পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া থেকে অশোকতলা সড়কের বিসিকি শিল্পনগরীর এলাকাজুড়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। সিটি কর্পোরেশনের পানি নিষ্কাশনের ড্রেনগুলোতে ময়লা-আবর্জনা জমে থাকায় পানি নিষ্কাশনের পথগুলো বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে এ পথে চলাচলকারী বাসিন্দাদের দুর্ভোগ এখন চরমে পৌছেছে। এছাড়াও নগরীর নিচু এলাকার সড়কগুলোতেও পানি জমে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
বেশকিছু বাসিন্দারা জানান, যানজট ও জলাবদ্ধতার শহর কুমিল্লা। বর্ষার শুরুতেই সামান্য বৃষ্টিতের এ শহরের বিভিন্ন শহরে জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ জলাবদ্ধতা নিরসনে বছর ব্যাপী নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড চালায় সিটি কর্পোরেশন। যেখানে উন্নয়ন প্রকল্পের অধিকাংশ অর্থ এ খাতে ব্যয় করা হয়। কিন্তু তারপরও বর্ষা আসতেই জলমগ্ন সড়কে চলাচলা করতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হয় বাসিন্দাদের। এবার এখন পর্যন্ত নগরীর ড্রেনগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করেনি সিটি কর্পোরেশন। এতে করে বাসিন্দারা মনে করেন এবারের পুরো বর্ষা তাদেরকে দুর্ভোগের মধ্যদিয়ে কাটাতে হবে।
এদিকে, শনিবার রাতভর কুমিল্লার জেলার বিভিন্ন স্থানে বজ্রবৃষ্টির সাথে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার বা তার অধিক গতিবেগে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া বয়ে গেছে। বজ্রবৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়ায় মানুষের বাড়ি,ঘর এবং মাঠের ধানসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষতির সংবাদ রয়েছে।
চলমান বজ্রবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া আগামী দুই থেকে তিনদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকার হুঁশিয়ারি দিয়ে কুমিল্লা জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা ছৈয়দ আরিফুর রহমান জানান, এখন কালবৈশাখীর মৌসুম। বাংলার প্রকৃতিতে সবচেয়ে দুর্যোগপূর্ণ মার্চ, এপ্রিল, মে এবং জুন মাস। এ কয়েক মাসেই সচরাচর বজ্রবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী আঘাত হানে। শনিবার রাতে কুমিল্লার বিভিন্ন স্থানীয় মৌসুমী এ বজ্রবৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া আঘাত আনে। এদিকে শনিবার সকাল থেকে রবিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৮ ঘন্টায় কুমিল্লায় ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।