শাহীন আলম, দেবিদ্বার।
কুমিল্লার
দেবিদ্বারে পূর্ব শত্রুতার জেরে মাছ ধরা ও মসজিদে নামাজ পড়া নিয়ে দুই
পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন
এবং এক পক্ষের একটি ঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার বড়শালঘর ইউনিয়নের
অনন্তপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
জানা
গেছে, সোলেমান মুন্সি ও জাকিরের মধ্যে জমি-জমা ও মাছ ধরার পুরনো বিরোধ
ছিল, যা এই সংঘর্ষের মূল কারণ। ঘটনার সূত্রপাত ঘটে যখন সোলেমান মুন্সীর
পক্ষ থেকে কাউছার মসজিদে নামাজ পড়তে যাওয়া আবুল বাসারকে বাধা দেয়। এর ফলে
দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে বাকবিতণ্ডা এবং পরে মারামারি শুরু হয়।
এক
পক্ষের অভিযোগ, গত ২৯ সেপ্টেম্বর সংঘর্ষের পর প্রতিপক্ষের লোকজন ২ অক্টোবর
রাত ১১টার দিকে তাদের ঘরে আগুন দিয়েছে। অপর পক্ষের লোকজন আগুন দেওয়ার
অভিযোগ অস্বীকার করে বলছেন, সোলেমানের পক্ষের লোকজন মারধরের মামলা থেকে
বাঁচতে নিজেরাই নিজেদের ঘর পুড়িয়ে অন্যদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। বর্তমানে
পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে এবং থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করা হয়েছে।
মামলার
বাদি সোলেমান মুন্সী অভিযোগ করেছেন যে, স্থানীয় ইউপি সদস্য আইয়ুব খান ও
তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের পুরনো বিরোধ ছিল, যা রমজান মাসে মসজিদে
তালা লাগানো এবং পরে মসজিদ ভাঙার হুমকির ফলে আরও বেড়ে যায়। এরপর গত বুধবার
রাতে তাদের বসতঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনাও ঘটে, যা সোলেমান মুন্সীর মতে আইয়ুব
খান এবং তার লোকজন ঘটিয়েছে।
অন্যদিকে, ইউপি সদস্য আইয়ুব খান এই অভিযোগ
অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, সোলেমান মুন্সীর পক্ষ থেকে নিজেরাই ঘর পুড়িয়ে
তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, মূল সমস্যাটি
মসজিদে নামাজ পড়ার বাধা থেকে শুরু হয়েছিল এবং তাদের পক্ষ থেকে আগুন দেওয়ার
কোনো ঘটনা ঘটেনি।
অপর মামলার বাদী জাকির হোসেনের দাবি অনুযায়ী, সোলেমান
মুন্সী এবং তার সমর্থকরা, যাদের মধ্যে জুয়েল, কাউছার, সুমন, আলাউদ্দিন,
ইকরাম, ইমরান, ফখরুলসহ মোট ২০ থেকে ২৫ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী, তার বাড়িতে
হামলা চালায়। তিনি জানান, হামলার সময় কিছু ভাড়াটে সন্ত্রাসীকে আটক করা
হয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদের পর তারা স্বীকার করে যে, তাদের কোম্পানীগঞ্জ থেকে
ভাড়া করে আনা হয়েছিল। পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য আইয়ুব খান আটক ব্যক্তিদের
জবানবন্দী ভিডিও রেকর্ড করে এবং তাদের থেকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়।
এবিষয়ে
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ সাইফুল্লাহ জানিয়েছেন,
দেবিদ্বারের অনন্তপুর গ্রামে সংঘটিত সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনাটি জমি এবং
মসজিদ সংক্রান্ত বিরোধের কারণে হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ তদন্ত করছে এবং
যারা প্রকৃত অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা
নেওয়া হবে।