নাঙ্গলকোট প্রতিনিধি: সৌদি আরব এবং ওমানে একই দিনে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার তিন প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দু’জন অসুস্থ হয়ে এবং একজন সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হচ্ছেন- সৌদি আরব প্রবাসী উপজেলার পেরিয়া ইউনিয়নের চেহরিয়া গ্রামের মাওলানা আমির হোসেনের ছেলে মঈনুল ইসলাম (৪০), বাঙ্গড্ডা বাজার ইউপির আঙ্গুলখোঁড় আব্দুস সালামের আল আমিন হোসেন (২২) এবং ওমান প্রবাসী পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলা গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের ছেলে মিজানুর রহমান (৫৫)।
জানা গেছে, উপজেলার পেরিয়া ইউনিয়নের চেহরিয়া গ্রামের মাওলানা আমির হোসেনের ছেলে মঈনুল ইসলাম চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সৌদিআরব যান। মঈনুল ওই দেশের রিয়াদ এলাকার একটি কোম্পানিতে আইটি প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে তিনি কাজ শেষে বাসায় ফিরে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সহকর্মীরা তাকে কিং ফয়সাল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে শনিবার সকালে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
অপরদিকে সৌদিআরব প্রবাসী বাঙ্গড্ডা বাজারের সালাম মোটরস এর স্বত্তাধিকারী আঙ্গুলখোঁড় গ্রামের আব্দুস সালামের বড় ছেলে আল আমিন শুক্রবার গভীর রাতে ওই দেশের জেদ্দা এলাকার বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে একই রুমে থাকা অন্য প্রবাসীরা তাকে কিং আব্দুল আজিজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তিনিও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এছাড়া পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলা গ্রামের মরহুম আব্দুর রহিমের ছেলে ওমান প্রবাসী মিজানুর রহমান শুক্রবার গভীর রাতে কাজ শেষে পায়ে হেঁটে ওই দেশের দারিজ এলাকার বাসায় ফেরার সময় পিছন থেকে একটি প্রাইভেটকার এসে তাকে ধাক্কা দিলে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে পুলিশ এসে সালালাহ এলাকার কাবুজ হসপিটালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
প্রকৌশলী মঈনুল ইসলামের ভাইয়ের ছেলে মাস্টার আফজাল হোসাইন মিয়াজী বলেন, আমার চাচা আইটি ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল দেশে দীর্ঘদিন যাবৎ শিক্ষকতা ও বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। গত ৪ মাস পূর্বে তিনি সৌদিআরবের একটি কোম্পানিতে আইটি ম্যানেজার পদে চাকুরি নিয়ে প্রবাস জীবন শুরু করেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হলে সহকর্মীরা তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়। প্রকৌশলী মঈনুল ইসলামের রুহামা নামে ৭বছরের এক কন্যা সন্তান ও ৫ বছরের এক পুত্র সন্তান রয়েছে।
নিহত আল আমিনের পিতা আব্দুস সালাম বলেন, ৩ বছর পূর্বে আমার ছেলে সৌদিআরবে গিয়ে একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলো। শুক্রবার রাতে আমার ছেলের শরীরে প্রচন্ড জ্বর আসলে রুমে থাকা লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে শনিবার সকালে সেখানে তার মৃত্যু হয়।
ওমান প্রবাসী মিজানুর রহমানের ভাতিজা কবির আহম্মেদ বলেন, আমার চাচা মিজানুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ ওমানের সালালাহ এলাকায় কর্মরত। গত ৪ বছর পূর্বে ছুটিতে দেশে এসে কয়েক মাস পর আবার চলে যান। শনিবার রাতে কাজ শেষে বাসায় ফিরার পথে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় তিনি গুরুতর আহত হন, পরে তাকে হাসপাতাল নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মিজানুর রহমান ২পুত্র সন্তানের জনক।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুরাইয়া আক্তার লাকি জানান, এখনো প্রবাসীদের মৃত্যুর খবর পাইনি। স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানগণ এ বিষয়ে বলতে পারবেন। আমি তাদের বিষয়ে তথ্য নেওয়ার চেষ্টা করছি।
জানতে চাইলে বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে আমি প্রবাসীর মৃত্যুর বিষয়টি জেনেছি। বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়ে তাদের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হলে করবো।