
রণবীর ঘোষ কিংকর: কুমিল্লার-৭ আসনের সংসদ সদস্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তকে জড়িয়ে মানহানীকর মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেছেন তাঁর সমর্থিত নেতা-কর্মীরা।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) বিকাল ৪টায় চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে ওই প্রতিবাদ করেন তারা। এসময় কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মো. মুজিবুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে তাঁকে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না মুনতাকিম আশরাফ টিটু সমর্থিত আওয়ামীলীগ। প্রতিটি ক্ষেত্রে মিথ্যাচার করে প্রিয় নেতার সম্মান ক্ষুন্ন করাই যেন তাঁদের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ৬ ডিসেম্বর চান্দিনার ১২ প্রার্থীর মনোয়ন চূড়ান্ত করায় চান্দিনার অধিকাংশ বর্তমান চেয়ারম্যানই দলীয় মনোনয়ন পান। যারা মুনতাকিম আশরাফ টিটু সমর্থিত। তাদেরকে পূঁজি করে মুনতাকিম আশরাফ টিটু মিথ্যাচার করে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মদদ দিয়ে তার মাধাইয়াস্থ ব্যবসায়ীক কার্যালয়ে অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত এমপি’র বিরুদ্ধে ওই চেয়ারম্যান প্রার্থীদের দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করান। সংবাদ সম্মেলনে কেরণখাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হারুন-অর রশিদ যে তথ্য দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, অন্যের দ্বারা প্ররোচিত, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
সম্মেলনে আরও বক্তৃতা করেন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য কাজী গোলাম দস্তগীর পাপন, উপজেলা যুবলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আউয়াল খান, ইঞ্জিনিয়ার আতাউর রহমান গণি, পৌর আওয়ামী লীগ সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মোস্তফা, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা জেলা পরিষদ সদস্য জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা আওয়ামী লীগ সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক রোকন উদ্দিন ভূইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা আবু তাহের ভূইয়া, আওয়ামী লীগ নেতা শামীম হোসেন, পৌর আওয়ামীলীগ নেতা হান্নান ভূইয়া, উপজেলা কৃষকলীগ সাধারণ সম্পাদক একেএম রুহুল আমিন ভূইয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়সাল বারী মজুমদার মুকুল, আইন বিষয়ক সম্পাদক এড. শাহজালাল মিঞা শিপন, উপজেলা যুবলীগ সাবেক সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, পৌর যুবলীগ সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনির খন্দকার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ আহবায়ক কাজী আখলাকুর রহমান জুয়েল, উপজেলা ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান, সাবেক সভাপতি মো. মহিউদ্দিন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবু কাউসার, স্বেচ্ছাসেবকলীগ সদস্য জসিম উদ্দিন, হাবিবুর রহমান জনি, শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
এর আগে, বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) রাতে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সাথে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেন কেরণখাল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের হারুন-অর রশিদ। চান্দিনা ফার্মল্যান্ড এন্ড কোল্ডা স্টোরেজ লিমিটেডে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিজয় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন প্রার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন- কেরণখাল ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশিদ। তিনি এবারও আওয়ামীলীগ দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন। তিনি বলেন- গত ৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সভানেত্রী ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনীত করেন।
এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- চান্দিনা উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি মুনতাকিম আশরাফ টিটু, সহ-সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদ মমতাজ, মো. দেলোয়ার হোসেন, শাহাদাত হোসেন মজুমদার, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মহিউদ্দিন আহমেদ আলম, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ খালেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নুরুল ইসলাম তুহিন, চান্দিনা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. মফিজুল ইসলাম, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি কাজী ইয়াসিন আহমেদ অভি প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দিনা আসনের সংসদ সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্ত বলেন- ‘আমি একজন ডাক্তার। দুর্বব্যবহার আমি কখনো করি না। ৮ জন নয়, ২জন লোক আমার সাথে দেখা করতে এসেছিল। এদের মধ্যে ১জন চেয়্যারম্যান প্রার্থী হারুন। আমি তাকে বলেছি আপনি নৌকা পেয়েছেন, আমি আপনার সাথে আছি। আমার সাথে একজন মুজিব নামে ছেলে আছে। আমি তাকে ধমক দিয়ে বলেছি- তুমি আমার চেম্বার ছেড়ে যাও। এলাকায় গিয়ে নৌকার জন্য কাজ কর। আমি অতিথিদের কাউকে মন্দ কথা বলিনি।’