চৌদ্দগ্রাম
প্রতিনিধি: বিয়ের ১৩ দিন পর শ^শুড় বাড়ির পাশে কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যের
হামলায় গুরুতর আহত হয়ে শুক্রবার মারা যান রেমিটেন্সযোদ্ধা সৌদিআরব প্রবাসী
আবু বক্কর প্রকাশ আসিফ। তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ঘোলপাশা
ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর কেন্ডা গ্রামের মরহুম ফটিক মিয়ার ছেলে। তাঁর
হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে শনিবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কে লাশ নিয়ে মানববন্ধন এবং ঘন্টাব্যাপী অবরোধ করেছে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে
কান্নাজড়িত কণ্ঠে বক্তব্য দেন, নিহত আবু বক্কর আসিফের মা আলেয়া বেগম, নানি
রুপিয়া বেগম, স্থানীয় তোফায়েল আহমেদ জুয়েল, এডভোকেট জাহিদুল ইসলাম সুমন,
মোজাম্মেল হক অপু, শহীদ মিয়া, আনোয়ার হোসেন, এয়াছিন মিয়া, মফিজ মেম্বার,
রফিকুল ইসলাম, রাশেদ মিয়া প্রমুখ। এ সময় এলাকার বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ ও
তরুণরা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত আবু বক্কর আসিফের ছোট ভাই আরাফাত হোসেন
বলেন, আবু বক্কর প্রকাশ আসিফ দীর্ঘ বছর সৌদিআরবে ছিলেন। দুই মাস আগে তিনি
ছুটিতে দেশে আসেন। গত ২৭ অক্টোবর জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার আবদুল্লাহপুর
গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া আক্তার সুইটিকে ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে
বিয়ে করেন। গত ৮ নভেম্বর দুপুরে তিনি নববিবাহিত স্ত্রীকে নিয়ে শ^শুড় বাড়িতে
বেড়াতে যান। একই দিন সন্ধ্যায় শ্যালক শান্তসহ আসিফ অলির বাজারে ঘুরতে যান।
কিছুক্ষণ পর পায়ে হেঁটে তারা আবদুল্লাহপুরে শ^শুড় বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা
হন। আবদুল্লাহপুর এলাকায় সাদিয়া দারুল উলুম মাদরাসার সামনে পৌঁছালে আগ থেকে
ওঁৎপেতে থাকা কিশোর গ্যাং লিডার বাপ্পি ও পারভেজ নামে দুই যুবক আসিফকে
উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সদর দক্ষিণ
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে উন্নত
চিকিৎসার জন্য ঢাকার পিজি হাসপাতালে নেয়া হলে শুক্রবার সকালে চিকিৎসাধীন
অবস্থায় তিনি মারা যান।
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা
মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মহাসড়ক অবরোধের খবর পেয়ে পুলিশ
ঘটনাস্থলে পৌছায়। আসিফের মৃত্যুর ঘটনাটি সদর দক্ষিণ থানার। তাঁর স্বজনরা
দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে চৌদ্দগ্রামের
সৈয়দপুর এলাকায় অবরোধ করে। বিষয়টি পুলিশের মহাপরিদর্শক ও কুমিল্লা পুলিশ
সুপার জেনেছে। আমরা দোষীদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আশ^াস দিলে
বিক্ষুদ্ধ জনতা মহাসড়ক অবরোধ তুলে নেয়।
সদর দক্ষিণ মডেল থানার
ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম বলেন, ঘটনার পর পরই অভিযুক্তরা এলাকা
ছেড়ে পালিয়ে যায়। আমরা তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্তদের গ্রেফতারে
অভিযান অব্যাহত রেখেছি।
