বান্ধবীকে পুরুষের ছদ্মবেশ দিয়ে নেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হলে। একই কক্ষে দুজন রাত কাটানোর পর সকালে বের হওয়ার সময় ঘটে বিপত্তি। শার্ট ও ক্যাপ পরিয়ে মেয়েটিকে হল থেকে বের করা হয়। ঈদের আগের এ ঘটনা শেষমেশ পৌঁছে যায় হল প্রশাসনের কাছে। পরে হল প্রশাসন রাতে বান্ধবীর সঙ্গে আবাসিক হলের একই কক্ষে রাত কাটানো ছাত্রের সিট বাতিল করেছে। এ ঘটনা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলে। গত ৪ জুন এ ঘটনা ঘটে।
বান্ধবীকে নিয়ে আসা ওই শিক্ষার্থীর নাম নাজমুল ইসলাম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্স অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী। ছেলেটির বাসা মাদারীপুর। নাজমুলের বান্ধবীও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তারা একই বিভাগের একই বর্ষের সহপাঠী।
প্রত্যক্ষদর্শী দুই ছাত্র জানান, গত ৪ জুন ভোরে বাড়ি ফেরার জন্য সব কিছু গুছিয়ে হলের গেটের সামনে দাঁড়ান। সেই সময় একটা ছেলেকে সাইকেল চালিয়ে হল থেকে বের হয়ে যেতে দেখেন। ওই সাইকেলের পেছনে একটি মেয়ে বসা ছিল, মেয়েটির গায়ে স্কুলের শার্ট আর মাথায় ক্যাপ ছিল। বিষয়টি অস্বাভাবিক ঠেকলে তারা ধরার চেষ্টা করেও লাভ হয়নি, কারণ সাইকেলের গতি বেশি ছিল। সেই সময় দারোয়ান তাকে থামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
অভিযুক্ত নাজমুল ইসলাম বলেন, গত ৩ জুন আমার জন্মদিন ছিল। সেদিন কেক কেটে রাত হয়ে যায়। এদিকে ওর মেস থেকে ওই দিনই চলে যেতে বলে। ও মেসে যেতে পারবে না বলে আমাকে অনুরোধ করে রাখার জন্য। পরে আমি ওকে রাতে হলে নিয়ে আসি। মূলত আমি ওকে শেল্টার দেয়ার জন্য রাখি। এরপর সকালে চলে যায়। তখন কেউ হয়তো আমাদের দেখে। এ বিষয়ে প্রভোস্ট স্যার আমাকে ডেকেছিল। আমি তাকে বিষয়টি খুলে বলি। তিনি আমাকে হল থেকে বহিষ্কার করেন এবং বিষয়টি জানাজানি হবে না বলেও আমাকে জানিয়েছিলেন।
এদিকে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা বলছেন, হলে এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এটি একটি ভয়াবহ অপরাধ। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত।
শনিবার (২১ জুন) হবিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. মো. মোতাহার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত আছি এবং ঘটনাটিও সত্যি। হল প্রশাসন তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। তার সিট বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা কমিটি তার বিরুদ্ধে বাকি সিদ্ধান্ত নেবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাঈন উদ্দিন বলেন, এটা সাংঘাতিক একটি ঘটনা। খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।