প্রকাশ: শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ১:১২ এএম |

কুমিল্লার
দেবিদ্বারে পূর্ব শত্রুতা ও নারী ঘটিত দ্বন্দে সাজ্জাদ হোসেন সৌরভ নামে এক
যুবককে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেছে কিশোর গ্যাং সদস্যরা।
বর্তমানে ওই যুবক জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে
চিকিৎসাধীন রয়েছে। এই ঘটনায় আহত সাজ্জাদের বাবা সাব্বির হোসেন গ্যাংয়ের ৮
সদস্যদের নামে দেবিদ্বার থানায় একটি মামলা করেন। পরে শুক্রবার দেবিদ্বার
পৌর এলাকায় অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে
পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো, পৌরসভার পোনরা উত্তরপাড়ার আব্দুস সালামের
ছেলে হাসান (১৯) এবং ভোষণা গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে সায়মন (২০)।
গ্রেপ্তাতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানারউপপরিদশক (এসআই) মো.
মাজহারুল ইসলাম।
আহত সাজ্জাদ হোসেন (২১) দেবিদ্বার পৌর এলাকার ছোট
আলমপুর গ্রামের খলিফা বাড়ির সাব্বির হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি ঢাকার
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ
ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০ টার দিকে কিশোর
গ্যাংয়ের সদস্য নাহিম ও ফাহিমের নেতৃত্বে প্রায় ১০-১২ জনের একটি দল
চান্দিনা সিএনজি স্টেশনের পাশে ক্যাডেট স্কুলের গলিতে গিয়াস উদ্দিনের ভাই
ভাই স্টোর থেকে সাজ্জাদকে পাশে চান্দিনা সিএনজি স্ট্যান্ডে ডেকে নেয়। পরে
কথা কাটিকাটির এক পর্যায়ে সেখানে সাজ্জাদকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত
করে পালিয়ে যায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা। পরে সাজ্জাদের চিৎকারে লোকজন এসে
তাকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
চান্দিনা রোডের
বাসিন্দারা জানান, ক্যাডেট স্কুলে পাশে গিয়াস উদ্দিনের ভাই ভাই স্টোরে
প্রতিদিন সন্ধ্যায় কিশোর গ্যাং সদস্যদের আড্ডা জমে। এখানে মাদক
সেবন-বেচাকেনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অশ্লীল গালিগালাজ ও নানা অপরাধের
পরিকল্পনা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা ভয়ে বাধা দেন না। এর আগেও এই দোকানে
কিশোর গ্যাংয়ের কয়েকটি গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য নিয়ে মারামারির ঘটনা ঘটে।
সাজ্জাদের মা হাসিনা বেগম জানান, রাত ১০টার দিকে স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের
সদস্যরা সাজ্জাদকে ডেকে নেয়। পরে তাকে ধারালো চাপাতি দিয়ে তার হাত, পেট,
পিঠসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে উপর্যুপরি কোপ দেয়। প্রথমে তাকে দেবিদ্বার
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় অবস্থার অবনতি হলে কুমিল্লা
মেডিক্যালে কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানেও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও
শারীরিক অবস্থা অবনতি হওয়ায় রাতেই ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান
থেকে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়।
এদিকে,আহত সাজ্জাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি
(এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
জাতীয় বার্ন
অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপক মো. নাছির উদ্দিন
জানান, ইতোমধ্যে সাজ্জাদের অপারশেন করা হয়েছে। বর্তমানে সে আগের চেয়ে ভালো
আছে তবে এখনও আশঙ্কামুক্ত হয়নি। তার এখনো জ্ঞান ফিরেনি। আজ বন্ধের দিন,
হাসনাত আবদুল্লাহর অনুরোধে আমি নিজে এসে অপারেশন করিয়েছি।
দেবিদ্বার
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসুদ্দিন মোহাম্মদ ইলিয়াস জানান, পূর্ব
শত্রুতার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তবে এ ঘটনার
তদন্ত চলছে। ৮ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছে আহত সাজ্জাদের বাবা
সাব্বির হোসেন। হামলার ঘটনায় হাসান ও সায়মন নামের কিশোর গ্যাং এর দুই
সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান
অব্যাহত রয়েছে।