এশিয়ান
কাপ বাছাইয়ে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন
(বাফুফে) অনেক হাইপ উঠিয়েছে। ১০ জুন সিঙ্গাপুর ম্যাচের আগে আগামীকাল
(বুধবার) ভুটানের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এই দুই
ম্যাচের জন্য একটি থিম সং–টিভিসি বানাবে ফেডারেশন। এজন্য বাফুফেকে ৬০ লাখ
টাকা প্রদান করেছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)।
বাফুফের সাধারণ
সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার ২৬ মে ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর সিঙ্গাপুর
ও ভুটান ম্যাচ আয়োজনে আর্থিক সহায়তার জন্য ৬৫ লাখ টাকা চেয়ে চিঠি
দিয়েছিলেন। বাফুফের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে এনএসসি আসন্ন দুই ম্যাচ তারুণ্যের
উৎসবের অংশ হিসেবে ৬০ লাখ টাকা প্রদান করে। ২৯ মে বাফুফেকে এই সংক্রান্ত
চিঠি দেন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের পরিচালক (ক্রীড়া) মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
তারুণ্যের উৎসবের অংশ হিসেবে এনএসসি বাফুফেকে দুই ম্যাচ আয়োজনের পাশাপাশি
থিম সং ও টিভিসি প্রস্তুত করে তা যথাযথ প্রচার এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার
নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দিয়েছিল ২৮ মে।
বাফুফে আনুষ্ঠানিক চিঠিতে খেলা
আয়োজনের জন্য আর্থিক সহায়তা চাইলেও মূলত থিম সং এবং টিভিসি প্রচারের জন্যই
তারা এই অর্থ ব্যয় করবেন বলে জানা গেছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ তারুণ্যের
উৎসবের অংশ হিসেবে বাফুফেকে ৬০ লাখ টাকা প্রদান করছে এই দুই ম্যাচ
উপলক্ষ্যে। আগামীকাল সন্ধ্যায় ভুটান ম্যাচ। অথচ এখন পর্যন্ত ফুটবলাঙ্গনে
থিম সং কিংবা মিডিয়ায় টিভিসি দেখা যায়নি। সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে প্রিন্ট,
ইলেকট্রনিক ও অনলাইন এবং সামাজিক মাধ্যম সর্বত্র আলোচনা। এরপরও আবার টিভিসি
করার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ক্রীড়াঙ্গনে সাধারণত বড় কোনো
টুর্নামেন্ট বা গেমসের সময় থিম সংয়ের প্রচলন কিংবা ব্যবহৃত হয়। একটি এশিয়ান
কাপ বাছাই, আরেকটি প্রীতি ম্যাচের জন্য কখনও থিম সংয়ের ব্যবহার ইতোপূর্বে
দেখা যায়নি। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ বাফুফেকে এই খাতে অর্থ প্রদান করছে অথচ
নিজেদের ক্রীড়াসঙ্গীতের বেহাল দশা। সেদিকে কোনো নজর নেই। অনেক দেশে
ক্রীড়াসঙ্গীত নেই, বাংলাদেশে ১৯৭৮ সালে এটি রচিত হয়েছিল। এক যুগ এর ব্যবহার
থাকলেও পরবর্তীতে কমতে কমতে এখন ক্রীড়া সঙ্গীত একেবারে সাইনবোর্ড সর্বস্ব।
ঐতিহ্যবাহী ক্রীড়া সঙ্গীত পুনরায় চালু অথবা নতুন করে গড়ে ক্রীড়া
সংস্কৃতিতে নতুন ধারা চালুর সুযোগ থাকলেও এনএসসি এ নিয়ে তেমন মনোযোগী নয়।
সিঙ্গাপুর
ম্যাচ নিয়ে বাফুফে একাধিক স্পন্সর পেয়েছে। এরপরও ম্যাচ আয়োজনের জন্য
সহযোগিতা চেয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। ফুটবলের স্বার্থে দেশের সর্বোচ্চ
ক্রীড়া সংস্থাটি বাফুফেকে তাৎক্ষণিকভাবে বরাদ্দ দিয়েছে। অথচ দেশের
ক্রীড়াঙ্গনের প্রকৃত অভিভাবক এনএসসিকে বাফুফে এখনও ভুটান-সিঙ্গাপুর ম্যাচের
টিকিট নিয়ে রেখেছে ধূম্রজালে। আন্তর্জাতিক–ঘরোয়া যেকোনো খেলায় জাতীয়
ক্রীড়া পরিষদের আসন সংরক্ষিত কিংবা কিছু সংখ্যক টিকিট পাওয়ার অধিকার রয়েছে।
কারণ সকল ফেডারেশনের অভিভাবক জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ এবং স্টেডিয়াম/ ক্রীড়া
স্থাপনার মালিকানাও সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের।