বৃহস্পতিবার ১ মে ২০২৫
১৮ বৈশাখ ১৪৩২
মহান মে দিবস
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ১ মে, ২০২৫, ১:২৪ এএম |

মহান মে দিবস
আজ পয়লা মে, মহান মে দিবস। এই দিনকে বলা হয় মেহনতি মানুষের বিজয়ের দিন, আনন্দ ও সংহতি প্রকাশের দিন। একই সঙ্গে এই দিন এক বেদনাময় স্মৃতিরোমন্থনেরও দিন। দৈনিক আট ঘণ্টা কর্মসময় ও ন্যায্য মজুরির দাবিতে ১৮৮৬ সালের এই দিনে শিকাগোর হে মার্কেট আন্দোলনরত শ্রমিকদের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদেরই বিজয় হয়েছিল। কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিল। ১৮৮৯ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিত শ্রমিকদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে প্রতিবছর দিবসটিকে ‘মে দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। সেই থেকে সারা দুনিয়ার মেহনতি মানুষ বিশেষ মর্যাদায় দিবসটি পালন করে আসছে।
বাংলাদেশেও শ্রমিকদের বিভিন্ন সংগঠন যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালন করে থাকে। এ বছরও বাংলাদেশে একইভাবে দিবসটি পালিত হবে।
মে দিবসের শতাধিক বছরের ইতিহাসে শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষার বিষয়ে অনেক আলোচনা, দেন-দরবার হয়েছে, শ্রমিক আন্দোলন অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়েছে। উন্নত অনেক দেশেই আজ শ্রমিক স্বার্থের বিষয়টি যথেষ্ট সুরক্ষা পেয়েছে।
আন্তর্জাতিকভাবে আইএলও কনভেনশনসহ শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে স্বীকৃত অনেক ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে। কিন্তু অনেক স্বল্পোন্নত বা উন্নয়নশীল দেশে শ্রমিকদের অধিকার এখনো ব্যাপকভাবে উপেক্ষিত। বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৭ লাখের মতো তরুণ কর্মক্ষম হয়। তাদের ক্ষুদ্র একটি অংশের কর্মসংস্থান হলেও বাকিরা মূলত বেকারই থাকে, না হয় অতি সামান্য মজুরির বিনিময়ে কাজ করতে বাধ্য হয়। কয়েকটি পেশা ছাড়া বাকি পেশার শ্রমিকরা এখনো কোনো হিসাবেই আসে না।
এর মধ্যে আছে কৃষি, মাছ ধরা, নির্মাণশিল্প, কুটিরশিল্প, গ্রামগঞ্জে ব্যক্তি উদ্যোগে গড়ে ওঠা ছোটখাটো কারখানা, দোকান, ইটভাটা ইত্যাদি। এসব ক্ষেত্রে না আছে নিয়োগপত্র, না আছে কর্মঘণ্টা, না আছে উপযুক্ত মজুরি। স্বীকৃত পেশাগুলোতেও রয়েছে নানামুখী বঞ্চনা। কথায় কথায় ছাঁটাই, এমনকি নির্যাতনের নজিরও রয়েছে। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানামুখী চাপের কারণে পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশের কিছুটা উন্নতি হলেও তা কাক্সিক্ষত মাত্রার চেয়ে অনেক নিচে। শ্রমিকের নিরাপত্তা এখনো সন্তোষজনক নয় বলে মনে করছে অনেক সংগঠন। তাদের মতে, ২০১২ ও ২০১৩ সালে পর পর দুই বছর পোশাকশিল্পে বড় দুটি দুর্ঘটনায় বিপুলসংখ্যক শ্রমিকের মৃত্যুর পর কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। এক গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের জরিপে দাবি করা হয়েছে, গত ১০ বছরে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় পাঁচ হাজার ২৩৫ জন শ্রমিক মারা গেছেন। অন্যদিকে আরো অভিযোগ রয়েছে, অনেক কারখানায়ই নারী শ্রমিকরা এখনো বঞ্চনার শিকার। পুরুষ শ্রমিকদের তুলনায় তাদের কম মজুরি দেওয়া হয়। নিরাপত্তাহীনতা ও ব্যক্তিগত মর্যাদা ক্ষুণ্ন হওয়ার মতো অনেক ঘটনাও ঘটে। গৃহস্থালি কাজে সবচেয়ে বেশি নারী শ্রমিক নিয়োজিত থাকলেও এ ক্ষেত্রে এখনো ন্যূনতম শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুযায়ী শ্রমিকের অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার বদলে তা অস্বীকার করা হচ্ছে। আমরা আশা করি বর্তমান সরকার দলীয় আদর্শ ও ঐতিহ্যকে মূল্য দেবে এবং মেহনতি মানুষের স্বার্থরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে। শ্রমিকের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বলয় তৈরিতে আন্তরিক হবে।












সর্বশেষ সংবাদ
হাজী ইয়াছিন এমপি হলে ইনশাআল্লাহ মন্ত্রী হবেন - অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া
কুমিল্লা শ্রম আদালতে রায়ের অপেক্ষায় ১৫২ মামলা
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ৭০ টি ঘর পেলেন কুমিল্লার বন্যা দুর্গতরা
লাকসামে গৃহবধূর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
আনন্দঘন পরিবেশে সিসিএন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্পোর্টস উইক ২০২৫ সম্পন্ন
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় বকশিস নিয়ে সহকর্মীকে হত্যা,আরেক সহকর্মীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বুড়িচংয়ে আ.লীগের নেতা ও ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন গ্রেপ্তার
ছাত্রসেনার নেতাকে অপবাদ দিয়ে নির্যাতনের পর কারাগারে মৃত্যু ! কুমিল্লায় বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত
প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ৭০ টি ঘর পেলেন কুমিল্লার বন্যা দুর্গতরা
কুমিল্লায় রোবো উৎপাদনে ছাড়িয়ে যাবে লক্ষ্যমাত্রা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২