একজন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক গবেষক ডক্টর আহমেদ আবদুল্লাহ
|
ডক্টর আহমেদ আবদুল্লাহ বর্তমান প্রজন্মের একজন প্রতিশ্রুতিশীল প্রবন্ধ লেখক। একজন স্বনামধন্য প্রত্নতত্ত্ববিদ। তার লেখার বিষয় ভূগোল ও পরিবেশ, ধর্ম, শিল্পকলা, ইতিহাস, ঐতিহ্য, প্রেম, প্রকৃতি এবং অবশ্যই প্রত্নতত্ত্ব। ১৯৭৩ সালে টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর থানার শ্রীবড়টিয়া গ্রামে তার জন্ম। পিতা মোহাম্মদ আলী আকবর মিয়া। আহমেদ আবদুল্লাহ পিতা মাতার তৃতীয় সন্তান। বড় দুই বোনের পর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার ছোট আরেকটি ভাই ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণ করলেও শৈশব থেকে তিনি বেড়ে উঠেছেন ঢাকার শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া এবং পীরেরবাগে। বর্তমানে ঢাকা জেলার সাভারে তার স্থায়ী নিবাস। তিনি শিক্ষাজীবনের সূচনালগ্নে প্রথম শ্রেণীতে কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেন। দ্বিতীয় শ্রেণি হতে এসএসসি পর্যন্ত শেরে বাংলা নগর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করেন। এরপর ১৯৯০ সালে নটরডেম কলেজ হতে এইচএসসি এবং ১৯৯৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ভূগোল (সম্মান) স্নাতক এবং ১৯৯৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনের শুরু থেকে অদ্যাবধি একই পেশায় তিনি নিবেদিত প্রাণ প্রত্নতত্ত্ববিদ হিসেবে নিয়োজিত আছেন। পরবর্তী সময়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হতে তিনি প্রত্নতত্ত্বে ২০১৭ সালে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি বিগত ৩ দশকে সাহিত্য চর্চা, গবেষণা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবং প্রবন্ধ, গল্প, ইতিহাস, ঐতিহ্য বিষয়ক উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রচনা ও সম্পাদনার কাজ করেন। এযাবৎকাল পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয়ে ১৩ টি গ্রন্থ এবং প্রচুর সংখ্যক লেখা দেশের প্রথম শ্রেণীর জাতীয় পত্রিকারসমূহে গুরুত্ব সহকারে প্রকাশিত হয়েছে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক। আহমেদ আবদুল্লাহ এর সাহিত্যচর্চা ও লেখালেখির জগতে প্রবেশ একেবারে শৈশবকালেই। তার প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় শিশু একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত শিশু পত্রিকায় সেই ১৫ বছর বয়সে। যদিও লেখালেখির শুরুটা হয়েছিল আরো আগে। পরবর্তীতে বাংলার বাণী, দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক বাংলা, আজকের কাগজ, নয়া দিগন্ত, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক পূর্বকোণ, পাক্ষিক পালাবদল, বাংলা একাডেমী কর্তৃক প্রকাশিত ধান শালিকের দেশ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত অগ্রপথিকসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তার বহু লেখা প্রকাশিত হয়। তবে পূর্বেই বলা হয়েছে আহমেদ আবদুল্লাহ মূলত একজন প্রত্নকর্মী। ২০০০ সালে তিনি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরে একজন কর্মজীবী হিসাবে যোগদান করেন। প্রশাসনিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়াও তিনি একজন উৎখননকর্মী হিসেবে সুনাম অর্জন করেন। ২০০০ সালে কুমিল্লায় ভোজ রাজার বাড়ি, ২০০১, ২০০২ সালে বগুড়া মহাস্থানগড় (ফ্রান্স বাংলাদেশ যৌথ উৎখনন কাজ), ২০০৭ সালে ভাসু বিহার, বগুড়া, একই বছর ঢাকার লালবাগ দুর্গে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ, ২০০৩, ২০০৪, ২০০৫ সালে নরসিংদী জেলার উয়ারী বটেশ্বরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে এবং ২০০৯, ২০১০, ২০১১ সালে সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে ঐতিহ্য অন্বেষণের সাথে উয়ারী বটেশ্বরে খনন কাজে অংশগ্রহণ করেন। এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ২০০৩ সালে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মাধ্যমে সম্পাদিত উয়ারী বটেশ্বর প্রত্নতাত্ত্বিক খননে যে প্রথম দেয়াল কাঠামো উন্মোচিত হয় উক্ত ট্রেঞ্চ এর দায়িত্বে ছিলেন আহমেদ আবদুল্লাহ। অর্থাৎ তার হাত দিয়েই প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক সংরক্ষিত উয়ারী বটেশ্বর প্রত্নস্থলের প্রথম দেয়াল কাঠামো উন্মোচিত হয়। এছাড়া ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ সালে তিনি শালবন বিহার ময়নামতিতে খনন কাজে একজন খননকর্মী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন। |