সামাজিক
যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা উচিত নয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও অভ্যুত্থানের পর দেশ যখন স্থিতিশীলতার
দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন আসছে, তখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে
উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার হচ্ছে। যা জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জন্য
হুমকিস্বরূপ এবং জনমনে উদ্বেগ, বিদ্বেষ ও বিভ্রান্তি তৈরি করে। এ ধরনের
অপপ্রচার কখনও কখনও অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্ম দেয় এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন
ঘটায়। পাশাপাশি, বিভ্রান্তিকর তথ্যকে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও গণপিটুনির মতো
অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে- যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। জনস্বার্থে এবং শান্তি ও
শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলকে দায়িত্বশীল আচরণ
করার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
এ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার
কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমদ বলেছেন, দেশের শান্তি ও
স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকলের দায়িত্বশীল ও
শিষ্টাচারপূর্ণ আচরণ করা উচিত। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেওয়াকে
কেন্দ্র করে সমাজে উত্তেজনা সৃষ্টি করা এবং কখনও কখনও ধর্মকে উপজীব্য করে
বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার কারণে সমাজে শঙ্কা ও ভীতি সৃষ্টির কারণে পরিণত
হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রায়ই অঘটন ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে
থাকা ও তাদের উপস্থিতিতে একজন যুবককে পিটিয়ে আহত করার মতো ঘটনা গণমাধ্যমে
এসেছে। যা আইনের বরখেলাপ এবং মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আমাদের সকলে এ বিষয়ে
সচেতন থাকতে হবে। কেউ অপরাধ করে থাকলে তার বিচারের জন্য যথাযথ প্রক্রিয়া
রয়েছে।
ইসলামের নবীকে (সা.) নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটূক্তি করে
স্ট্যাটাস দেওয়ার একটি অভিযোগ প্রচার করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করার
মাধ্যমে এক ব্যক্তি গণপিটুনির শিকার হওয়ার সংবাদ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে
এবং এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ
করেছে। এ অবস্থায়, ওই ঘটনাটি নিবিড় তদন্তপূর্বক প্রকৃত অবস্থা সুস্পষ্ট
করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব পালনে কোনও গাফিলতি ছিল কিনা তা
যাচাই করে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের
আওতায় এনে আগামী ৮ অক্টোবরের মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন পাঠাতে স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবকে বলা হয়েছে।
কমিশনের
জনসংযোগ কর্মকর্তা ইউশা রহমান জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আত্মোৎসর্গের
প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জননিরাপত্তা, শৃঙ্খলা ও ঐক্য নিশ্চিত করতে এবং সমাজে
সকল ধরনের ঘৃণার চর্চা দূর করতে সকলকে আহ্বান জানিয়েছে কমিশন। পাশাপাশি,
মানবাধিকারকে কেন্দ্রবিন্দুতে রেখে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহনশীলতার
ভিত্তিতে সকলকে অগ্রসর হতেও আহ্বান জানানো হয়।