জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফাইরোজ অবন্তিকার আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলার
দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই বলে অভিযোগ তুলেছেন তার মা তাহমিনা শবনম। তিনি
বলেন, অবন্তিকার মৃত্যুর পর গঠিত তদন্ত কমিটি সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন
জমা দেওয়ার কথা থাকলেও প্রায় তিন মাসেও মেলেনি তদন্ত প্রতিবেদন। মামলার
তদন্ত কর্মকতাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অবন্তিকার আত্মহত্যা মামলার বিষয়ে
উদাসীন। এই মামলার সঠিক বিচার প্রাপ্তি নিয়ে সংখ্যা রেখা দিয়েছে। আমি
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার বিচার প্রার্থনা করছি।
সোমবার (৩
জুন) সকাল ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর বাগিচাগাওয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে এসব
কথা জানান অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম। এ সময় মামলার আইনজীবী মাসুদ
সালাউদ্দিনসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সম্প্রতি কারাগার থেকে
জামিনে মুক্তি পাওয়া অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর কাজী
দীন ইসলাম জামিনে এসে মামলা প্রভাবিত করছেন বলে অভিযোগ করে অবন্তিকার মা
বলেন, আমার মেয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ফাস্ট ক্লাস থার্ড হয়েছে। তাকে বড়
করে তুলতে আমার অনেক কষ্ট হয়েছে। শুধু লেখাপড়া নয়; আমি তাকে একজন মানবিক
মানুষ হিসেবেও গড়ে তুলেছিলাম। অথচ আমার মেয়েকেই এভাবে প্রাণ দিতে হলো। আমার
স্বামী নেই, মেয়েটাও নেই। একমাত্র ছেলে কি নিয়ে এখন বেঁচে আছি। যেদিন আমার
মেয়ে হত্যার বিচার পাবো; সেদিন আমার আত্মা একটু ঠান্ডা হবে।
সংবাদ
সম্মেলনে আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন বলেন, আইনের যথাযথ ধারায় মামলাটি রেকর্ড
হয়নি। মামলাটি এখন ডিপ ফ্রিজে আছে। বিষয়টি নিয়ে আমি মামলার তদন্ত
কর্মকর্তার সাথেও কথা বলেছি। আমরা চাই মামলাটি যথাযথ গুরুত্বপূর্ণ সহকারে
তদন্ত হোক। এ মামলায় যারা আসামি তাদেরকে জিজ্ঞেসাবাদ করা হোক।
উল্লেখ্য
, গত ১৫ মার্চ রাতে কুমিল্লা নগরের বাগিচাগাঁও এলাকার ভাড়া বাসায় সিলিং
ফ্যানের সাথে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের
অবন্তিকা। আত্মহত্যার আগে তিনি নিজের ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। সেখানে
মৃত্যুর জন্য জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে
দায়ী করেন। ঘটনার পরদিন অবন্তিকার মা তাহমিনা শবনম বাদী হয়ে কুমিল্লার
কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন। ডিএমপি এ মামলায় ওই দুই জনকে গ্রেফতার করে
১৭ মার্চ কুমিল্লা পুলিশে হস্তান্তর করে। পরদিন এ মামলায় সহকারী প্রক্টর
দ্বীন ইসলামের একদিন ও সহপাঠী আম্মানের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে
আদালত। এর মধ্যে সম্প্রতি কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনী মুক্তি
পেয়েছেন প্রক্টর দ্বীন ইসলাম। অপর আসামি আম্মান কুমিল্লা কারাগারে আছেন।
কুমিল্লা
সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক প্রয়াত জামাল উদ্দিনের মেয়ে অবন্তিকা জগন্নাথ
বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।