শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
বাজারের খরচ জোগাতে পকেট ফাঁকা
প্রকাশ: শনিবার, ১১ মে, ২০২৪, ১২:১০ এএম |


বাজারে সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম চড়া। বাড়তি খরচ জোগাতে মানুষের পকেট ফাঁকা, অন্য খরচে পড়ছে টান।
সব চলে যাচ্ছে নিত্যদিনের খাবার কেনায়। এমন পরিস্থিতিতেই রয়েছে রাজধানীর নি¤œ আয়ের মানুষ। আর বাজার ঘুরেও মিলছে তারই প্রমাণ।  
শুক্রবার (১০ মে) সকালে রাজধানীর মিরপুর ১৩, মিরপুর-২, ফার্মগেট কলমিলতা ও মোহাম্মদপুর বাজার ঘুরে দেখেছেন বাংলানিউজের এই প্রতিবেদক। তিনি কথা বলেছেন বিক্রেতাদের সঙ্গে, ক্রেতাদের সঙ্গে। জেনেছেন নিত্যপণ্যসহ অন্যান্য সামগ্রীর দাম।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে-৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮০ টাকা।
বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। প্রতি কেজি সাদা বেগুনের দাম ১০০ টাকা। বড় বেগুন ১২০ টাকা, লম্বা বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে পেঁপের দাম। প্রতি কেজি পেঁপের দাম ১০০ টাকা। বাড়তি দাম কাঁচা মরিচের। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ১৬০ টাকা।
পটলের কেজি ৬০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, বরবটি  ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৫০ টাকা, পাকা টমেটো ৫০ টাকা, ধুন্দলের কেজি বাজারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা। মাঝারি আকারের কলার হালি ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স বাজারভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি।
ঝিঙের কেজি ৮০ টাকা, কচুর মুখি ১২০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৬০ টাকা, চাল কুমড়া (জালি) প্রতিটি ধরনভেদে ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকা। ৭৫০ গ্রামের বাঁধাকপি ৪০ টাকা, আধা কেজি ওজনের ফুলকপি বাজারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা।
স্বস্তি নেই মাছের বাজারেও। গতকালও (বৃহস্পতিবার) যে দামে মাছ বিক্রি হয়েছে, আজ সে দামে নেই, বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, শুক্রবার দাম একটু বাড়ে। সবাই বাজার করতে আসেন, সেজন্য দামও বাড়ে। আড়ত থেকে বেশি দামে মাছ কিনতে হয়, তাই তারাও একটি বেশি রাখেন।
রাজধানীর বাজারে ছোট আকারের রুই ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মাঝারি রুইয়ের কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা। কাতলার দাম প্রায় একই। বড় রুই, বোয়াল কেটে বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে।
সিলভার কার্প ১৫০ টাকা কেজি, বড় সিলভার ২৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। একই দাম চাষের পাঙাশের। সরপুঁটির কেজি ২০০ টাকা, দেশি বড় চিংড়ি এক হাজার টাকা, মাঝারি ৭০০ টাকা, ছোট চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা এবং গলদা চিংড়ি ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
পাবদার কেজি ৪৫০ টাকা, বেলে ৭৫০ টাকা, দেশি ট্যাংরা ৭৫০ টাকা এবং চাষের ট্যাংরা বাজারভেদে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়ার কেজি ২৫০ টাকা, মলা ৬০০ টাকা, পিয়ালি ৬০০ টাকা, চাষের শিং ৩৫০ ও কাচকি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
টাকি ৭৫০ টাকা কেজি, শোল ৮০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫০০ গ্রামের ইলিশের কেজি এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা। ৭৫০-৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি দুই হাজার টাকা। এরচেয়ে বড় আকারের ইলিশের কেজি আড়াই হাজার টাকা।
ডিমের দামও বাড়তি। প্রতি হালি ডিমের দাম এখন ৪৮ থেকে ৫০ টাকা। হাঁসের ডিমের হালি ৭৫ টাকা। একদিন আগেও মুরগির ডিমের হালি ছিল ৪৫ টাকা।
মিরপুরের ডিম বিক্রেতা আ. হালিম জানান, আড়তে ডিমের টাকা বেড়ে যাওয়ায় বাড়তি রাখা দাম ছাড়া আমাদের উপায় নেই। কেন বাড়ল, সেই খবর তার কাছে নেই।
বাজারে সোনালি মুরগির কেজি ৪০০ টাকা, ব্রয়লার ২৩০ টাকা এবং লেয়ার মুরগির কেজি ৩৩০ থেকে ৩৪০ টাকা।
মিরপুর ১৩ নম্বরের বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭৩০ থেকে ৭৫০ টাকা। একই মাংস মিরপুর-২ নম্বরে বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকা কেজি দরে।
আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডাল। দেশি ও আমদানি করা মসুর ডাল ১৫০ টাকা, আমদানি করা মোটা ডালের কেজি ১২০ টাকা, ছোলার ডাল ১৩০ টাকা, অ্যাংকর ডালের কেজি ৯০ টাকা।
পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকা, আলুর কেজি ৫৫ টাকা, আমদানি করা বড় রসুন ২৪০ টাকা। দেশি ছোট রসুন ১০০ টাকা কেজি। আর আদা ধরনভেদে প্রতি কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা।
বাজার করতে আসা জামিরুল ইসলাম ঢাকায় ব্যাচেলর থাকেন। আধা কেজি আলু, দুটি কাঁচকলা, ২৫০ গ্রাম বরবটি কিনছেন। তিনি বলেন, যেভাবে জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, হিসাব করে না কিনলে বাড়িতে বউ-বাচ্চার জন্য টাকা পাঠাতে পারি না।
কর্মজীবী আব্দুল্লাহ কাফি বলেন, সপ্তাহ শেষে বাজারে আসার সময় বাড়তি টাকা নিয়েই বের হই। জানি, প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ে। সে হিসাবে আজও বেড়েছে। কেন দাম বাড়ছে, কাউকে জিজ্ঞেস করা যাবে না। বিক্রেতারা এক কথার জবাবে বলেন ৫০ কথা। দাম তো কমে না। হয় কিনি, না হয় না কিনেই চলে যাই।
নি¤œ আয়ের আব্দুল করিম পড়েছেন মহাবিপদে। কর্মস্থল দূরে হওয়ায় সপ্তাহের বাজার একদিনে সারেন। পঞ্চাশোর্ধ্ব করিম দুই হাজার টাকা নিয়ে বাজারে এসেছিলেন চাল, সবজি আর মাছ কেনার জন্য। সবজি, সিলভার কার্প মাছ কিনেছেন, কিনেছেন একটি লেয়ার মুরগিও। এক সপ্তাহের বাজার। পকেটে আর চাল কেনার টাকা নেই। স্ত্রী রাহেলাকে কল করে বলেছেন, চাল কেনার টাকা শেষ হয়ে গেছে। যে টাকা আছে, অল্প চাল কেনা যাবে, কী করবেন এখন? ফোনের ওপার থেকে স্ত্রী বলে দিয়েছেন, যতটুকু হয়, ততটুকুই নিয়ে আসতে।
কথা শেষ করে ফোন পকেটে রেখে করিম বলেন, সব জিনিসের দাম বেড়েছে, মাসের সব হিসাবে উল্টে যাচ্ছে। টাকা চলে যাচ্ছে চাল, ডাল, সবজি কিনতে। পকেট ফাঁকা। মাস শেষে টান পড়বে, করতে হবে ধার-দেনা।













সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্দালিভ রহমান পার্থ ৫ দিনের রিমান্ডে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft