জাতীয়
সংসদে নারী আসন সংখ্যা ৫০ থেকে ১০০-তে উন্নীত করার বিষয়ে বিএনপি একমত হলেও
নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপির
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর
ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের
সঙ্গে দ্বিতীয় দফার বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহ উদ্দিন আহমেদ
বলেন, আগে একসময় ৩০ আসন ছিল, পরে এটা আমরা বৃদ্ধি করে ৪৫ করেছিলাম এবং
পরবর্তী লাস্ট সংশোধনের মধ্যে এটা ৫০ আসন হয়েছে। কিন্তু নির্বাচন পদ্ধতিটা
হচ্ছে আনুপাতিক হারে যাদের যত সদস্য আছে—সেই অনুপাতে সেটা নির্ধারিত হয়।
পরে আমরা আরও ৫০টা আসন বৃদ্ধির প্রস্তাব করলাম আমাদের দলের পক্ষ থেকে।
অধিকাংশ দল এটাই প্রস্তাব করেছে। তো সেই জায়গাতেই এখন ঐকমত্য কমিশনের
প্রস্তাবটা আছে। তবে সেটা নির্বাচন পদ্ধতি কী হবে এ বিষয়ে কোনও ঐক্য এখনও
হয়নি। সেটা পরবর্তী সময়ে আরও আলোচনার জন্য দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন,
আমাদের দলের পক্ষ থেকে আমরা প্রস্তাব করেছি, সরাসরি নির্বাচনের জন্য যে
পদ্ধতিগুলো ঘূর্ণায়মান অথবা সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি; যেগুলো আলোচনায় এসেছে,
তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সংসদীয় কালচারে এখন পর্যন্ত সেটা ফিজিবল বলে
আমাদের মনে হয়নি।
নারীদের সংরক্ষিত আসন থাকার যুক্তি তুলে ধরে তিনি
বলেন, স্পেশালি ফিজিক্যালি ডিজেবলড যারা, তাদের জন্য এই বিধানটা কার্যকর
করা যায় কিনা সেটাও সংবিধানে আসতে হবে। তো সেই হিসাবে নারী শিশু এবং পিছিয়ে
পড়া শ্রেণির জন্য বিশেষ বিধান করা যায় সেই হিসাবেও আমরা মনে করি,
বাংলাদেশের নারী সমাজ এখনও পর্যন্ত সেই অগ্রগতি হয়নি। বিধায় তাদের আরও বেশি
এগিয়ে নিয়ে আনার জন্য এই বিশেষ বিধান থাকা উচিত। বাংলাদেশের নারী সমাজ
কনস্টিটিউশনালি লিগালি এবং সমাজের বিভিন্ন সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে
ক্ষমতায়িত হবে।
সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বিরোধীদলীয় দল থেকে
বানানোর বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে তিনি বলেন, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি পদে
বিরোধীদলীয় সদস্যদের মধ্য থেকে যে প্রস্তাবটা ওখানে প্লেস হয়েছিল যে সব
সভাপতির পদ বিরোধীদলীয় সদস্যদের দেওয়া যায় কিনা। এ বিষয়ে প্রথম পর্বের
আলোচনায় প্রত্যেকে লিখিত এবং মৌখিক জবাব দাখিল করেছে। আমরাও করেছিলাম। সেই
জায়গায় কয়েকটি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বিরোধী দলের সদস্যদের দেওয়ার ব্যাপারে
তখনই প্রায় সব দল একমত হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রস্তাব করেছি,
যাতে পার্লামেন্টে জবাবদিহি এবং ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হয় বেশি করে।
মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির
সভাপতি পদে বিরোধী দলীয় সদস্যদের নিয়োগ সদস্যদের মনোনীত করার ব্যাপারে
একমতে পৌঁছেছে বলে আমার মনে হলো—সেটা এখনও প্রকাশিত হয়নি। কিন্তু কয়টা
সংখ্যা এবং কী কী মন্ত্রণালয় সেটা এখন নির্ধারণ হবে না। সেটা জাতীয় সংসদে
আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্ধারণ করা যাবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, একটা
লার্জেস্ট অপোজিশন হতে পারে। বিভিন্ন দলের ছোট ছোট প্রতিনিধিত্ব থাকে। কেউ
পাঁচ সদস্যের বা ১০ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব থাকে। তাদের মধ্য থেকেও বিবেচনা
করতে হবে। শুধু লার্জেস্ট অপোজিশন পার্টি থেকেই সব সভাপতি মনোনয়ন দেওয়া
এটাও অনুচিত। পার্লামেন্টে আলোচনার মধ্য দিয়ে নির্ধারণ হওয়ার বিষয়ে
মোটামুটি আলোচনা হয়েছে।