আমার মনে হয় বাংলাদেশ বাস্তবতা বুঝতে পেরেছে– ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ভরাডুবির পর বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জরেকারের বক্তব্যের একটা অংশের অনুবাদ এমনই দাঁড়ায়। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের আগেই পাকিস্তানকে তাদের মাঠে হারিয়ে এসেছিল বাংলাদেশ। আরেক জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার হার্শা ভোগলে বলেছিলেন, এটাই বাংলাদেশের সেরা টেস্ট দল।
কিন্তু মাঠের খেলাতে এর কোনো নমুনাই দেখা যায়নি। চেন্নাইয়ে প্রথম টেস্ট বাংলাদেশ হেরে যায় সোয়া তিন দিনে। লাল মাটির পিচে বাজে ব্যাটিংয়ের সুবাদে ফলো-অনেই পড়েছিল বাংলাদেশ। ভারত অধিনায়ক রোহিত ফলো-অন না করিয়ে নিজেরাই ব্যাটিং করেছিলেন। আর দ্বিতীয় টেস্টের পরিস্থিতি ছিল আরও ভয়াবহ। বৃষ্টিতে দুদিন ভেসে গেলেও বাংলাদেশ ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি।
পাকিস্তান সিরিজে যাদের ব্যাটে ভর করে বাংলাদেশ জয় তুলে এনেছিল। এই সিরিজে তারাই ছিলেন ব্যর্থ। মুশফিকুর রহিম দুই টেস্ট থেকে করেছেন মোটে ৬৯ রান। লিটন কুমার দাসের ব্যাট থেকে এসেছে মাত্র ৩৭ রান। সাকিব আল হাসান ব্যাট হাতে ভুগছেন অনেকদিন থেকেই। তিনি সিরিজে করেছেন ৬৮ রান।
ভারতের ক্রিকেটার সঞ্জয় মাঞ্জরেকার বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন তাদের নিয়েই। পুরো সিরিজে তাদের নিষ্প্রাণ ব্যাটিং সিনিয়রসুলভ ছিল না বলেই মন্তব্য তার, ‘লিটন, মুশফিকুর, সাকিব যেভাবে ব্যাটিং করেছে, আমরা তেমন কিছু দেখিনি। তাদের অ্যাপ্রোচ দেখে তাদের কখনো হুমকি বলে মনেই হয়নি। প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে শুরুতে মুশফিক হয়তো ভালো খেলেছে। তবে এরপর মনে হয়েছে, ভারতকে চাপে ফেলার জন্য লড়াই করার বিশ্বাস ছিল না তাদের। এই কাজটাই সিনিয়র ক্রিকেটারদের করতে হয়।’
ইএসপিএনক্রিকইনফোতে কথা বলার সময় সিনিয়র ক্রিকেটারদের দায়ী করে মাঞ্জরেকারের মন্তব্য, ‘আমার মনে হয় না খুব বেশি পরিবর্তন প্রয়োজন। তবে অবশ্যই সামনে এগোতে হলে কিছু জায়গায় তাদের কাজ করতে হবে। সিনিয়র ক্রিকেটাররা যারা অনেক ম্যাচ খেলেছে, দেশে যারা বড় সুপারস্টার, বড় ব্র্যান্ড, আপনাদের এত মনযোগ প্রাপ্য কি না, সেটা দেখানোর সময় ছিল এটা।’
মাঞ্জরেকার সরাসরিই বললেন বাংলাদেশ বাস্তবতা চিনেছে এই সিরিজ থেকে, ‘আমার মনে হয় বাংলাদেশ বাস্তবতা বুঝেছে। তারা টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের সেরা সময়ে থাকতেই এখানে এসেছিল। কিছু ভালো দলের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তারা জিতেছে, পাকিস্তানকে তাদের দেশের মাটিতে হারানো তো অনেক বড় অর্জন।’
ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টের এই সিরিজে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। ৪ ইনিংস থেকে তার ব্যাটে এসেছে ১৫২ রান। এছাড়া ১০০ রান পার করেছেন আর দুজন। ১ সেঞ্চুরি করেও মুমিনুল হক পুরো সিরিজে করেছেন মোটে ১২২ রান। ওপেনার সাদমান তার এক ফিফটির সুবাদে সিরিজে পেয়েছেন ১১১ রান। চারে থাকা মুশফিকের রান মাত্র ৬৯।