মালয়েশিয়ায় কুমিল্লার শাওনের লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন!
জনমনে ক্ষোভ
|
মালয়েশিয়ায় একটি আবাসিক ভবন থেকে পড়ে নিহত মো. শাওন(৩০) নামে এক বাংলাদেশী কমিউনিটির নেতার মরদেহ মুত্যুর ২ মাস পর বেওয়ারিশ হিসেবে কুয়ালালামপুর ইসলামিক সেন্টারে দাফন করা হয়েছে। শাওনের মৃত্যুর পর সহকর্মী ও সংশ্লিষ্টরা তার হাসপাতালের বকেয়া পরিশোধ করে মরদেহ নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হওয়ায় গত ১৫ এপ্রিল বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করে ফেলে হসপিটাল কুয়ালালামপুর কর্তৃপক্ষ। শাওনের ভ্যালিট পাসপোর্ট ভিসা থাকা সত্তেও মরদেহ দেশে না পাঠিয়ে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করায় ক্ষোভ বিরাজ করছে বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। গত ১৫ এপ্রিল বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফনের তথ্য টি নিশ্চিত করেছেন মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত ওয়েলফেয়ার বিষয়ক কর্মী মিস্টার সুকুমান। শাওনের লাশ মৃত্যুর পর প্রায় ২ মাস হসপিটাল কুয়ালালামপুরের হিমঘরে রাখার পর মরদেহে রাখা হয়েছিল। নিহত মো. শাওন দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর হাট চান্দিনা এলাকার মো. আবু তাহের মিয়ার পুত্র। সাধারণত মালয়েশিয়ায় কেউ মারা গেলে তার মরদেহ নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যাবস্থা করা হয় অথবা দূতাবাস ও পরিবারের লিখিত অনুমতি সাপেক্ষ স্থানীয় ভাবে দাফন করা হয়। কিন্তু এক্ষেত্রে শাওনের লাশ মালয়েশিয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে ইসলামিক সেন্টারে দাফন করতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও পরিবার থেকে কোন লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছরের ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট স্থানীয় চীনা নাগরিকের ৪ তলা আবাসিক ভবনে বিদ্যুৎ এর কাজ করতে গিয়ে ৪ তলা ভবন থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন শাওন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ফায়ার এন্ড রেসকিউ টিম তাকে উদ্ধার করে কুয়ালালামপুর হাসপাতালে ভর্তি করান। তিন মাস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এ বছরের ৩ মার্চ আইসিইউতেই মৃত্যু হয় তার। কিন্তু মরদেহ প্রায় ২ মাস হসপিটালের মর্গে পড়ে থাকার পর গত ১৫ এপ্রিল বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। নাম প্রকাশ করার না শর্তে কমিউনিটির এক সিনিয়র নেতা বলেন, পাসপোর্ট ও ভ্যালিড ভিসা থাকার পরও শাওন কে মালয়েশিয়ায় বেওয়ারিশ হিসেবে লাশ দাফন করা করাটা খুবই দুঃখজনক ও আমাদের বাংলাদেশি সবার জন্যই লজ্জাজনক। তাছাড়াও এর চেয়ে দূর্ভাগ্যজনক আর কি হতে পারে। তিনি, দূতাবাস ও পরিবারের অনুমতি ছাড়া লাশ কিভাবে দাফন করলো এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে । এবিষয়ে জানতে চাইলে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের যোগাযোগ করা হলে শ্রম শাখার সচিব মো. জাহিদূর রহমান বলেন, আমরা গতকাল এক সাংবাদিক মো. শাওনের মরদেহ হাসপাতাল কুয়ালালামপুরে পড়ে থাকার বিষয়টি অবহিত করেন, তখন আমরা সাথে সাথেই খবর নিয়ে জানতে পারি মো. শাওন নামে বাংলাদেশি প্রবাসীর মরদেহ গত একমাস আগেই ইসলামিক সেন্টারে দাফন করা হয়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, শাওনের ব্যাপারে আমাদের কাছে এতদিন কেউ কোন তথ্য দিয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। তবে দূতাবাস ও পরিবারের অনুমতি ছাড়া লাশ কিভাবে দাফন করতে পারে এ বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন এই বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো।
|