বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪
২৫ আশ্বিন ১৪৩১
শ্রমিক ঠকানোর দায়ে নোবেলজয়ী ইউনূসের ৬ মাসের সাজা
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৪, ১২:৪২ এএম |


 শ্রমিক ঠকানোর দায়ে নোবেলজয়ী ইউনূসের ৬ মাসের সাজাশ্রম আইন লঙ্ঘন করে গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিকদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে কোম্পানির চেয়ারম্যান, শান্তিতে নোবেলজয়ী মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছে বাংলাদেশের শ্রম আদালত।
ইউনূসের পাশাপাশি গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে শ্রম আইনের ৩০৩ এর ৩ ধারায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদ- এবং ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও ১০ দিনের কারাদ- দেওয়া হয়েছে।
একই আইনের ৩০৭ ধারায় তাদের সবাইকে ২৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ১৫ দিনের কারাদ- দিয়েছেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক শেখ মেরিনা সুলতানা।
গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করা, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল এ মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে। ৮৪ পৃষ্ঠার রায়ে বিচারক বলেছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। রায়ে সাজা হলেও আপাতত জেলে যেতে হচ্ছে না গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইউনূসসহ চারজনকে। আপিলের শর্তে তাদের ১ মাসের জামিন দিয়েছেন বিচারক।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন রায়ের পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, তারা ‘ন্যায়বিচার পাননি’, এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে বিজয় নগরের টাপা প্লাজায় শ্রম আদালত ও আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
রায়ের খবর সংগ্রহ করতে দেশের বিপুল সংখ্যক সংবাদকর্মীর পাশাপাশি বিবিসি, আল জাজিরা, ডয়চে ভেলেসহ কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিও উপস্থিত হন।
দুপুর ১ টা ৪৩ মিনিট ইউনূস ওই ভবনের পঞ্চম তলায় ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের এজলাসে উপস্থিত হন, অন্য আসামিরাও আসেন। ততক্ষণে পরিপূর্ণ হয়ে যায় এজলাস।
আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, ফরিদা আখতার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, আইনজীবী সারাহ হোসেনও রায় দেখতে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
আদালত রায় ঘোষণা করে দুপুর সোয়া ২টায়। ইউনূসসহ চার আসামির সাজা ঘোষণা হলে তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন জামিনের আবেদন করেন।
পরে আপিলের শর্তে তাদের জামিন দেওয়া হয়। আগামী এক মাসের মধ্যে আপিল করতে হবে বলে তাদের শর্ত দেওয়া হয়।

মামলা বৃত্তান্ত:
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন।
শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে।
এ মামলা বাতিলের আবেদন নিয়ে সর্বোচ্চ আদালতেও গিয়েছিলেন ইউনূস। কিন্তু গত মে মাসে তার আবেদন আপিল বিভাগে খারিজ হয়ে গেলে মামলা চালানোর বাধা দূর হয়।
এরপর চলতি বছরের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা।
গত ২২ অগাস্ট থেকে এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। বাদীসহ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য দেন আসামিরা।
৩৪২ ধারার আত্মপক্ষ সমর্থনে লিখিত বক্তব্যে ইউনূস বলেছিলেন, শ্রম আইনের ২৩৪ ধারার বিধান লঙ্ঘিত হলে ২৩৬ ধারায় অনেকগুলো প্রতিকারের বিধান রেখেছে। শ্রম আইনের ২৩৬ ধারার উপরোক্ত বিষয়গুলো উল্লেখ না করে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর বিবাদী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ আইনের লঙ্ঘন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।আমি নিজের স্বার্থে কোনো কিছু করিনি। আমি অপরাধ করিনি।”
সেদিন শুনানি শেষে ইউনূস সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “আমি তো নিজে এ প্রতিষ্ঠানের মালিক নই। আমার আদর্শ কর্মসূচিতে কোনো ত্রুটি ছিল না। এত বড় কাজ করতে গেলে কিছু ভুল হতে পারে। আমরা তো ফেরেশতা নই। কিন্তু ভুল হলে তা ইচ্ছাকৃত নয়।”












সর্বশেষ সংবাদ
কুমিল্লার ৭৪৮টি পূজা মণ্ডপে ঢাকে পড়বে কাঠি;
সাবেক এমপি ইউসুফ হারুনসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে ২ মামলা
কুবি উপাচার্য হায়দার আলীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সঠিক তালিকা না থাকায় বিপত্তি
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব হবে না : অর্থ উপদেষ্টা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা নগরীর ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ
মুজিবুল হক-বাহার-সূচনাসহ ৪ জনের দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক
কুবি উপাচার্য হায়দার আলী সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
কুবি উপাচার্য হায়দার আলী সহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা
১০ খাতে রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাব জামায়াতের
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২