ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুমিল্লা বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা যে কারনে
Published : Wednesday, 1 June, 2022 at 3:09 PM
কুমিল্লা বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা যে কারনে স্টাফ রিপোর্টার।। কুমিল্লা জেলা বিএনপি ও কুমিল্লা মহানগর বিএনপিতে কাঙ্খিত পদ না পেয়ে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়ার বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। সে ঘটনা তদন্তে কুমিল্লায় এসেছে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রেরিত তদন্ত দল। মঙ্গলবার দুপুরে তারা কুমিল্লা শহরের রেইসকোর্সে মোস্তাক মিয়ার বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী ও মেয়ের সাথে কথা বলেন। সোমবার রাতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। মোস্তাক মিয়া এ ঘটনার জন্য কাঙ্খিত পদ না পাওয়া রেজাউল করিম ও উৎবাতুল বারী আবুর সমর্থকদের দায়ি করেছেন। রেজাউল করিম জেলা বিএনপিতে সদস্য সচিব ও উৎবাতুল বারী আবু কুমিল্লা মহানগর বিএনপিতে সদস্য সচিব পদ প্রত্যাশী ছিলেন। তার দু’জনেই হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন গ্রুপের নেতা।
জানা গেছে, সোমবার রাতে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি ও কুমিল্লা মহানগর বিএনপির কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ দুই কমিটিতে হাজী আমিন উর  রশিদ ইয়াছিনের সমর্থিত নেতাদের ৯০ ভাগ প্রাধান্য থাকলেও দুইটি কমিটির সদস্য সচিব হয়েছেন তার গ্রুপের বাইরে। জেলা বিএনপিতে ব্রাহ্মণপাড়ার নেতা হাজী জসিম উদ্দিন ও মহানগর বিএনপিতে যুবদল নেতা ইউসুফ মোল্লা টিপু সদস্য সচিব হয়েছে। হাজী জসিম উদ্দিন ইয়াছিন গ্রুপের হয়ে রাজনীতি করলেও এখন তাদের মধ্যে মতপার্থক্য আছে। অন্য দিকে ইউসুফ মোল্লা টিপু সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর সাথে রাজনীতি করলেও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের  নির্দেশে সাক্কুর কাছ থেকে সরে গিয়ে রাজনীতি করছেন। সাক্কু গ্রুপের সাথে দীর্ঘ দিন ইয়াছিন গ্রুপের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
এ ছাড়া কুমিল্লা মহানগর বিএনপির কমিটি নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টির অন্য একটি কারন হলো যুগ্ম আহবায়কের পদ। এক নম্বর যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে শওকত আলী বকুলকে এবং দুই নম্বর যুগ্ম আহবায়ক করা হয়েছে রাজিউর রহমান রাজিবকে। এই দুই জনের এতো গুরুত্ব পাওয়ায় অনেকে বিশ্মিত হয়েছেন। অথচ দীর্ঘ দিন ধরে নিবেদিত ও মামলা নির্যাতনের স্বীকার অনেককে রাখা হয়েছে এই দুই জনের নিচে। যা অনেকে মানতে পারছেন না। সূত্র জানায়, সম্প্রতি বিএনপির একটি গ্রুপের হামলার শিকার হয়েছিলেন শওকত আলী বকুল। এ কারণে তার নামটি যারা সামনে নিয়ে এসেছেন এখন বকুলের নামই তাদের সামনে।
অন্য দিকে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কৃত সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর সমর্থিত কোন নেতা মহানগর বিএনপিতে না রাখাও দলের শীর্ষ মহলের একটি বার্তা বলে অনেকে মনে করেন। সাবেক সাক্কু গ্রুপের যে কয়েকজন নেতা উভয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন তারা অনেক আগে সাক্কুর সঙ্গ ছেড়েছেন। আর সে কারনেই তারা উভয় কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। মনিরুল হক সাক্কু সঙ্গে থাকা নেতাদের মধ্যে একমাত্র নজরুল হক ভূইয়া স্বপন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য হয়েছেন। তিনিও তার ফেসবুক পেইজে সাক্কুর নির্বাচন করছেন উল্লেখ করে পদত্যাগ করেন।
সূত্র জানায়, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার অভিযোগে বিএনপি থেকে আজীবনের জন্য মনিরুল হক সাক্কু ও নিজাম উদ্দিন কায়সার বহিস্কার হলেও অন্তত ৫ জন যুগ্ম আহবায়ক হয়েছেন যারা কাউন্সিলর নির্বাচন করছেন। তাছাড়া কমিটির অনেকেই প্রকাশ্যে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন।
বিএনপির বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মো: মোস্তাক মিয়া জানান, কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ মতে। এখানে আমার অপরাধ কি? আমার বাড়িতে কেন হামলা হবে? সমন্বয় করে কমিটি হয়েছে এখানে আমার কোন ভূমিকা নেই। কুমিল্লা মহানগর বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহবায়ক যাকে (শওকত আলী বকুল) করা হয়েছে তার নাম ইয়াছিন সাহেব কমিটিতে দিয়েছেন।
তিনি জানান, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের প্রেরিত তদন্ত দল মঙ্গলবার ঘটনা তদন্ত করে গেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির কয়েকজন নেতা জানান, মোস্তাক মিয়াকে সমর্থন করে এমন কয়েকজন কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। এর মধ্যে মোজাহিদ চৌধুরী, রেজাউল হক আঁিখ, মজিবুর রহমান কামাল প্রমুখ রয়েছেন। এ সব উল্লেখ করে কয়েক নেতা জানান, কুমিল্লায় বিএনপিতে এখন তিনটি গ্রুপ। একটি হাজী ইয়াছিন গ্রুপ, একটি মোস্তাক গ্রুপ এবং আরেকটি টিপু গ্রুপ।
এ দিকে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির কমিটি থেকে গণ পদত্যাগের কথা বলা হলেও মঙ্গলবার কাউকে পদত্যাগ করতে দেখা যায় নি। নব গঠিত কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক আমিরুজ্জামান আমির জানান, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদের কথা শুনেছেন। যুগ্মআহবায়কের ক্রমান্বয় যথাযথ হয় নি। সদস্য সচিব আমাদের কাঙ্খিত হয় নি।