
বাংলাদেশ
ক্রিকেট দলের জন্য চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে বলা হয়
'পয়া' ভেন্যু। সাগরিকার এই মাঠটি বাংলাদেশের অনেক জয়ের স্বাক্ষী হয়ে রয়েছে।
কিন্তু এই মাঠের শেষ দুই টেস্টে মুখ গোমড়া করে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল
টাইগারদের। আফগানিস্তানের বিপক্ষে লজ্জার হারের পর বাংলাদেশ পরাজিত হয়েছিল
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্বিতীয় সারির দলের কাছে।
আগের ব্যর্থতা ভুলে
বাংলাদেশের এখন চোখ এই মাঠে পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জ নিয়ে। আগামীকাল
পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে
টাইগাররা। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অন্তর্ভুক্ত বাংলাদেশ-পাকিস্তান
প্রথম টেস্ট ম্যাচটি শুরু হবে সকাল ১০টায়। টেস্ট ক্রিকেটে নিজেদের রেকর্ড
সমৃদ্ধ না হলেও মাঠের লড়াইয়ে কোন ছাড় না দিতে বদ্ধপরিকর বাংলাদেশ।
আজ
ম্যাচপূর্ব ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেন,
'কোন সন্দেহ নেই যে সিরিজটি চ্যালেঞ্জিং হবে। তবে আমাদের দক্ষতায় আমরা ভালো
করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী।'
বাংলাদেশ দল কাল মাঠে নামছে দলের সেরা
তিন খেলোয়াড়কে ছাড়া। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাওয়া হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি থেকে
সুস্থ না হওয়ায় প্রথম টেস্টের দলে নেই সাকিব আল হাসান। ইনজুরির কারণে দলের
বাইরে তামিম ইকবালও। আর গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর
নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ।
বাংলাদেশ দলে সাকিবকে দুই জন খেলোয়াড়
হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই প্রথম টেস্টে দল সাজাতে ঘাম ঝড়াতে হবে
বাংলাদেশকে। মাথা ব্যাথার কারণ হবে মাহমুদউল্লাহর না থাকাটাও। ইয়াসির আলিকে
অভিষেক ঘটিয়ে বাংলাদেশ হয়তো সেই শুন্যস্থানগুলোর কিছুটা পূরণ করতে পারে।
দলে দুই নতুন মুখ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয় ও পেসার রেজাউর রহমানকে নিয়ে
কোন ইঙ্গিত দেননি মুমিনুল।
তিনি বলেন, 'সিনিয়র খেলোয়াড়দের ছাড়া খেলা সহজ
হবে না। তবে আমাদের হতাশ হওয়া উচিত নয়। আমাদের যা আছে তাই নিয়ে খেলতে হবে।
আমি মনে করি অন্যান্য খেলোয়াড়রা তাদের দক্ষতা দেখানোর জন্য যথেষ্ট
আত্মবিশ্বাসী।'
এই বছরে পাঁচটি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের
বিপক্ষে মাত্র একটিতে জিতেছে এবং তিনটি হেরেছে তারা। দু'টি হার ওয়েস্ট
ইন্ডিজের বিপক্ষে ঘরের মাঠে এবং একটি শ্রীলংকার বিপক্ষে। তবে শ্রীলংকার
সাথে একটি টেস্ট ড্রও করেছে টাইগাররা।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এ পর্যন্ত
১০টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে একটি ড্র বাদে সবগুলোই জিতেছে
পাকিস্তান। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে দ্বিপাক্ষীক সিরিজ খেলতে আসা
সিরিজে টেস্টটি ড্র হয়েছিলো। ড্র হওয়া টেস্টে ২০৬ রান করেছিলেন তামিম। যা
টেস্টে বাংলাদেশের জন্য সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস। এছাড়া ঐ ম্যাচে ১৫০ রান
করেছিলেন ইমরুল কায়েস। উদ্বোধনী জুটিতে ৩১২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন তামিম ও
ইমরুল।
বর্তমানে টেস্ট ক্রিকেটে দুর্দান্ত ছন্দে পাকিস্তান। ঘরের মাঠে
দক্ষিণ আফ্রিকা ও জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছে তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে
সিরিজ ড্র করেছে। ইংল্যান্ডের মাটিতে তিন ম্যাচের সিরিজেও দুর্দান্ত লড়াই
করে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরেছে পাকিস্তান।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ১২১টি
টেস্ট খেলেছে, জিতেছে ১৪টিতে হেরেছে ৯১টিতে। এরমধ্যে ৪৩টি ম্যাচে ইনিংস
ব্যবধানে। বাকী ১৬ টেস্ট ড্র করেছে।