যুক্তরাষ্ট্রের
পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের মিলবোর্ন বরোতে ২০২১ সালের মেয়র নির্বাচনে ভুয়া
ভোটার তৈরি ও স্বাক্ষর জাল করে ভোট দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত দুই
কাউন্সিলম্যানকে কারাদণ্ড ও জরিমানা করেছে ফেডারেল আদালত।
দীর্ঘ
তদন্তের পর স্থানীয় সময় বুধবার জালিয়াতির এ মামলার রায় ঘোষণা করেন
ফিলাডেলফিয়ায় অবস্থিত ফেডারেল কোর্টের বিচারক হার্ভে বার্টেল থার্ড।
রায়ে
কাউন্সিলম্যান নুরুল হাসানকে (৪৮) তিন বছর কারাদণ্ড ও ৩৩০০ ডলার জরিমানা
করা হয়েছে। অপর কাউন্সিলম্যান রফিকুল ইসলামকে (৫২) এক বছর একদিন কারাদণ্ড ও
এক হাজার ডলার জরিমানা করা হয়েছে। দণ্ড ভোগের পরও তাদের এক বছর
কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারিতে রাখা হবে।
নুরুল হাসানের বাড়ি চট্টগ্রামের বন্দর টিলা এলাকায়। আর রফিকুল কুষ্টিয়ার সন্তান।
২০১৬
সাল থেকে মিলবোর্ন বরোর কাউন্সিলম্যান নির্বাচিত হয়ে আসা নুরুল ২০২১ সালের
নির্বাচনে সেখানকার মেয়র প্রার্থী হন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন
আরেক বাংলাদেশি মাহাবুবুল আলম তৈয়ব। তাকে পরাজিত করতে প্রতারণার আশ্রয়
নিয়েও ধরাশায়ী হন নুরুল।
জাল-জালিয়াতির একই মামলায় দণ্ড পাওয়া রফিকুল
ইসলামও মিলবোর্ন বরোর কাউন্সিলম্যান ছিলেন। সেইসঙ্গে আরেক কাউন্সিলম্যান
মনসুর আলীর (৪৮) বিরুদ্ধেও একই জালিয়াতির মামলায় ২৬ জুন রায় ঘোষণা করবেন
বিচারক হার্ভে বার্টেল থার্ড। বাংলাদেশে মনসুরের বাড়ি পাবনায়।
রায়
ঘোষণার আগে দণ্ড লঘু করতে দোষ স্বীকার করে গত এপ্রিলে নুরুল হাসান, রফিকুল
ইসলাম ও মনসুর আলী মিলবোর্ন বরো কমিউনিটির লোকজনের সুপারিশপত্র নিয়ে আদালতে
জমা দেন। ফিলাডেলফিয়ায় এফবিআইয়ের স্পেশাল এজেন্ট ওয়াইন এ জ্যাকবস তাদের
বিরুদ্ধে তদন্ত করেন।
পেনসিলভানিয়ায় মার্কিন অ্যাটর্নি ডেভিড ম্যাটকালফ
সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের ফল পাল্টে দেওয়ার ষড়যন্ত্রকে গুরুতর অপরাধ
হিসেবেই রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক। দীর্ঘ তদন্তের পর গত ফেব্রুয়ারিতে
তিনজনের বিরুদ্ধে ভোটার নিবন্ধনে প্রতারণা, অন্য এলাকার মানুষকে ভুয়া
ঠিকানায় ভোটার বানানো এবং ডাকযোগে ব্যালট পাঠানোর আগে স্বাক্ষর জাল করে
নিজের পক্ষে ভোট দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এর দুই মাস পর এপ্রিলে তারা
দোষ স্বীকার করেন।
ফিলাডেলফিয়া সিটির মধ্যে ছোট্ট একটি এলাকা নিয়ে গঠিত
মিলবোর্ন বরো। সেখানে মেয়রসহ কাউন্সিলম্যানদের অধিকাংশই বাংলাদেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারার রাজনীতি ও প্রশাসনে বাংলাদেশিদের উত্থানের
ক্ষেত্রে এ সিটিকে অনেকে ‘উদাহরণ হিসেবে’ দেখেন। ফলে এ সিটিতে এমন
জালিয়াতির ঘটনায় অবাক সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা।