খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, দেশে বোরোধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। দেশে খাদ্য পরিস্থিতি অত্যন্ত সন্তোষজনক। তবে আমরা  সন্তোষজনক অবস্থানে কখনও ঠিক থাকতে পারি না। কারণ এটা ক্রমাগত খরচ হচ্ছে আবার যোগও হচ্ছে। এবার বোরো আবাদ যেমন ভালো হয়েছে, আমনটাও যদি ভালো হয়—তাহলে বিদেশ থেকে আর চাল আমদানি করতে হবে না।
শুক্রবার (২০ জুন) পটুয়াখালী জেলার সার্কিট  হাউসে অনুষ্ঠিত চলতি মৌসুমের বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, মজুদ ও বিতরণ বিষয়ে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় খাদ্য ও ভূমি উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার এসব কথা বলেন।
সভায় জানানো হয়, পটুয়াখালী জেলার বোরো ধান ও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ১ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন এবং ৫ হাজার ৬৯৫মেট্রিক টন। এরমধ্যে ১ হাজার ৯২৫ মেট্রিক টন ধান এবং ৪ হাজার ৯৯৭ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ হয়েছে। বরগুনা জেলার বোরো ধান ও চালের লক্ষ্যমাত্রা যথাক্রমে ৫০০ মেট্রিক টন এবং ১ হাজার ৫১৩ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ৫০০ মেট্রিক টন ধান এবং ১ হাজার ৩৪৯ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও বরগুনা জেলার ৬টি এলএসডি’র ধারণ ক্ষমতা ১৫ হাজার মেট্রিক টন।
জেলার খাদ্য সংগ্রহ এবং বিতরণে জেলা প্রশাসকের ক্লোজ মনিটরিংয়ের নির্দেশনা দিয়ে খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, দুর্যোগ প্রবণ জেলা হিসেবে পটুয়াখালী ও বরগুনাকে বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে খাদ্য সরবরাহ চ্যানেল নিরবচ্ছিন্ন রাখতে হবে। 
তিনি বলেন, বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে সাড়ে ১৭ লাখ টন ধান ও চাল সংগ্রহ করা হবে। এরমধ্যে সাড়ে ৩ লাখ টন ধান ও ১৪ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষককে প্রাইস সাপোর্ট দেওয়ার জন্য গত বছরের তুলনায় কেজিপ্রতি ৪ টাকা বাড়িয়ে ধান ৩৬ টাকা এবং চাল ৪৯ টাকা কেজি দরে কেনা হচ্ছে। ২৪ এপ্রিল থেকে সারা দেশে বোরো মৌসুমের ধান-চাল কেনা শুরু হয়েছে এবং ৩১ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। 
খাদ্য উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সাশ্রয়ী দামে খাদ্য নিশ্চিত করতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার বরাদ্দের প্রস্তাব করেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খাদ্য ভর্তুকিতে বরাদ্দ রয়েছে ৮ হাজার ৫৯ কোটি টাকা। সরকার ওএমএস এবং টিসিবি মাধ্যমে খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছে। আগামী অর্থবছরে এসব কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগী পরিবারের সংখ্যা ৫০ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৫৫ লাখে উন্নীত করার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হবে। বর্তমানে এ কার্যক্রম বছরে পাঁচ মাস চালু আছে, আগামী অর্থবছর থেকে ৫ মাসের জায়গায় ৬ মাস চালু থাকবে।
পটুয়াখালী জেলার জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের সভাপতিত্বে  বরিশাল বিভাগের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক, পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার ডিসি ফুডসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।