রোববার ৬ জুলাই ২০২৫
২২ আষাঢ় ১৪৩২
ঠিকাদার পলাতক! স্থবির হয়ে আছে কুমিল্লা নগরীর উন্নয়ন কাজ
তানভীর দিপু:
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫৫ এএম |

ঠিকাদার পলাতক! স্থবির হয়ে আছে কুমিল্লা নগরীর উন্নয়ন কাজ
স্থবির হয়ে আছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজ। নগরীর ব্যস্ততম জনবহুল এলাকায় ঠিকাদাররা রাস্তাঘাট-ড্রেন কালভার্টের কাজ শুরু করে মাঝপথে ফেলে রাখায় এসব কাজ এখন সাধারণ নাগরিকদের ভোগান্তির কারণ হয়ে উঠেছে। স্বাভাবিক যানচলাচল এবং ড্রেনেজ ব্যবস্থা প্রতিবন্ধকতার শিকার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন নাগরিকরা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিটি কর্পোরেশনের বেশিরভাগ ঠিকাদারই আওয়ামী লীগের নেতা বা সমর্থক ছিলেন, যে কারনে ৫ আগষ্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অনেক ঠিকাদার গা ঢাকা দেয়ায় বন্ধ হয়ে আছে উন্নয়ণ কাজগুলো। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, যথাযথ সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার বিধান রয়েছে। কিছু কাজ নিজস্ব উদে   
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে ২০২৩- ২৪ অর্থবছরে ১ হাজার ৫ শ ৩৮ কোটি টাকার প্রজেক্টের মধ্যে ৪শ ৭৮ কোটি টাকার কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে কিছু অংশের কাজ সম্পূর্ণ হলেও অধিকাংশই অসম্পূর্ণ অবস্থায় আছে। আওয়ামী লীগ সরকার পতন এবং বন্যার কারণে প্রায় স্থবির হয়ে আছে নগরীর উন্নয়ন কাজগুলো। কর্পোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে ৩০৫.১৪ কিলোমিটার নতুন রাস্তার নির্মান কাজের মধ্যে ১৫৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৪৫ কিলোমিটার কাজ এখনো চলমান রয়েছে। অর্থাৎ আরো ১০৫ কিলোমিটার রাস্তার কাজ এখনো শুরু হয় নি। অপর দিকে ২০৩.০৯ কিলোমিটার আরসিসি ড্রেন নির্মান কাজের মধ্যে ১০০ কিলোমিটার সম্পন্ন হয়েছে, ৫০ কিলোমিটার চলমান রয়েছে। অর্থাৎ আরো ৫৩ কিলোমিটার কাজ এখনো শুরু হয় নি।  
কুমিল্লা শাসনগাছা এলাকার বাসিন্দা শিক্ষক ইয়াছিন নূর জানান, কুমিল্লা শহরের মধ্যে অনেকগুলো জায়গায় উন্নয়ন কাজ শুরু করেও থেমে আছে। আদালত সড়কে দীর্ঘদিন আগে কাজ শুরু করেও শেষ হয় নি। রাস্তার উপরের আবরণ তুলে দীর্ঘদিন ফেলে রাখায় এখন বড় বড় খানাখন্দ তৈরী হয়েছে। এই সড়কটি এখন চলাচলের অনুপযোগী। এমন অনেক জায়গায়ই আছে সড়ক প্রশস্তের কাজ ধরে- আর করা হচ্ছে না। কবে নাগাদ এসব কাজ শেষ হবে এটা কেউই জানে না। 
নগরীর মোগলটুলী এলাকার বাসিন্দা সাংবাদিক সেলিম রেজা মুন্সী জানান, কুমিল্লা হাই স্কুলের পেছনে রাস্তার পাশের ড্রেনের কাজ চলছে দীর্ঘ দিন। এরই মধে বর্ষায় এই নির্মান কাজের জন্য জলবদ্ধতাসহ কাঁদামাটি নিয়ে চলাচলের ভোগান্তির শিকার হয়েছে এলাকাবাসী। থেমে থেমে এই কাজ হওয়ায় এলাকাবাসী ভোগান্তিতে । আমরা চাই এই কাজটা দ্রুত হোক।    
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েমভূইয়া জানান, ২০২২- ২৪ অর্থবছরে যেসব কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিল সেগুলো আবার আইনসম্মতভাবেই ২০২৪-২৫ অর্থবছর পর্যন্ত সংশোধিত ডিপিপির মাধ্যমে সময় পাবে। নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে স্থবির হয়ে যাওয়া কাজগুলো শেষ করার জন্য সময় চাওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারনে কাজ কিছুটা ধীর গতিতে হচ্ছে। আমরা অফিশিয়ালি উদ্যোগ নিয়েছি কান্দিরপাড় থেকে রানীর বাজারমুখী সড়ক, ফৌজদারি থেকে আদালত এবং রেইসকোর্স ফ্লাইওভারের সামনের অংশের কাজগুলো আমরা আগামী একমাসের মধ্যে শেষ করতে পারবো।  
জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের (কুসিক) উন্নয়নের কাজ অধিকাংশ ঠিকাদার লাপাত্তা। ৫ আগস্টের পর মাত্র ৫%-৩০% কাজ শেষ করে, বিল না নিয়ে আত্মগোপনে তারা। এমনকি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) পৃথক দু'টি প্রকল্প ৫ আগষ্টের আগে টেন্ডার আহ্বান করা হয়ে থাকলেও ঠিকাদার না মেলায়পুনঃটেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। জাইকার অপর একটি প্রকল্পও থেমে আছে বলে জানা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের একাধিক কর্মকর্তা জানান, আওয়ামী সরকার আমলে বেশির ভাগ ঠিকাদারই রাজনৈতিক ছিলেন। অনেকেই ছিলেন পদপদবীওয়ালা নেতা। এমন হওয়াটাই সেসময় রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। সর্বশেষ যেসব উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছিলো সেসব কাজের বেশির ভাগ ঠিকাদারই এখন পলাতক। ৫ আগষ্টের পর থেকে তাদেরকে দেখা যাচ্ছে না। তবে যেহেতু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নামে কাজগুলো বরাদ্দ হওয়া- তাই অনেকে অন্যান্য লোকের মাধ্যমে কিছু কিছু কাজ করছে। তবে এই কাজে গতি নেই। জানা গেছে, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের কাছে এসব কাজ হাতবদল হয়েও সম্পন্ন হবার কথা ছিলো, কিন্তু সেই প্রক্রিয়াটিও মনে হয় থেমে গেছে। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করছে। 
মাল্টিপার্টি এডভোকেসি ফোরাম কুমিল্লার সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, ঠিকাদার কে কোথায় আছে বিষয়টি মূখ্য নয়, বরং সিটি কর্পোরেশন কত দ্রুত কাজ গুলো শেষ করতে পারবে সে উদ্যোগ নিতে হবে। সেক্ষেত্রে টেন্ডারা বাতিল করে-পুণরায় টেন্ডার করে কিংবা নিজস্ব জরুরি উদ্যেগে হলেও জনগুরুত্বপূর্ণ এলাকার কাজগুলো শেষ করা উচিত। না হয় জনভোগান্তি দিন দিন বাড়বে এবং মানুষের ক্ষোভও বাড়বে। 
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ মাঈন উদ্দিন চিশতী জানান, কোন ঠিকাদার যদি সঠিক সময়ে তার কাজ শেষ করতে না পারে তাহলে তার কাজটি বাতিল হতে পারে। এছাড়া তার জামানতের টাকার বাজেয়াপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। 















সর্বশেষ সংবাদ
এক বছরে সাড়ে ৩ শ ধর্ষণের অভিযোগ কুমিল্লায়
সংস্কার কমিশনের রিপোর্ট পেলে ধারনা করা যাবে নির্বাচন কবে হবে: সিইসি
আজ কুমিল্লায় আসছেন সিইসি
চান্দিনায় মধ্য রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
এক বছরে ৯৬ বেওয়ারিশ লাশ দাফন কুমিল্লায়
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লা ইকরা মডার্ণ স্কুলের বার্ষিক ফল প্রকাশ ও কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা
জিয়া সাইবার ফোর্স- কুমিল্লা উত্তর জেলা কমিটি অনুমোদন
কুমিল্লায় বিজিবি অভিযানে ৬০ কেজি গাঁজা জব্দ
চান্দিনায় মধ্য রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড
‘সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আগে সীমানা পুনর্নির্ধারণ নয়’
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: newscomillarkagoj@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২