নিজস্ব প্রতিবেদক:
কুমিল্লা আদর্শ সদরে যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে রাজমিস্ত্রীকে মধ্যযুগীয়
কায়দায় নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। সেখানে
দেখা যায় করেকজন মিলে শ্রমিককে গাছের সাথে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটাচ্ছে।
পরে পানি পানি বলে চিৎকার করলেও পাশে কেউ আসেনি। নির্যাতনের পর প্লাস দিয়ে
হাতের আঙুলের নখ তুলে ফেলা হয়। আহত রাজমিস্ত্রী আজ ৩ দিন যাবৎ কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। ঘটনার পর থেকে
নির্যাতনকারীরা এলাকা থেকে পালিয়ে যায় বলে জানান এলাকাবাসী।
গত বুধবার দুপুরে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার ৬ নং জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বারপাড়া ময়নামতি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পাশে এ ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার
শিকার শ্রমিক বারপাড়া এলাকার নিজাম উদ্দিনের ছেলে আল আমিন (৩২)। এ বিষয়ে
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী আল আমিন।
জানা
যায়, আল আমিন পেশায় দিনমজুর। বারপাড়া সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে আশিক (২৮) ও
হাফিজ (৩২) এর বাড়ির নির্মাণাধীন বিল্ডিং এর কাজ করার জন্য আল আমিনকে নিয়ে
গেলে পারিশ্রমিক বেতন ৬০০ টাকার জায়গায় ৫০০ টাকা দেয়। ৬০০ টাকা দিতে বললে
আশিক ক্ষিপ্ত হয়। পরে আল আমিন চলে গেলে আশিকের বাড়িতে কাজ করতে আবার আল
আমিনের কাছে যাওয়া হলে সে না করে দেয়। পরে টাকা ৬০০ করে দিবে বলে বাড়িতে
নেয়। বাড়িতে নেওয়ার পর নির্মাণ যন্ত্রপাতি চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে দড়ি
দিয়ে বেঁধে মারধর করে। এক পর্যায়ে আশিকের নেতৃত্বে সজল ও নয়নসহ ওই এলাকার
কয়েকজন মিলে এস এস পাইপ দিয়ে পিটিয়ে ৩টি আঙ্গুল থেতলে দেয়। হাফিজের হাতে
থাকা লোহার প্লাস দিয়ে হাতের আঙ্গুল নখ তুলে ফেলে এবং জোর করে চুরির শিকার
নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্বার করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ
হাসপাতালে ভর্তি করে।
ভুক্তভোগী আল আমিন বলেন, হাসপাতালে আসার পর তারা
আমাকে ও আমার পরিবারকে ভাড়া করা সন্ত্রাসী দিয়ে নাকি খুন করে গুম করে
ফেলবে। এসব কথা বলে হুমকী ধমকী দিয়ে আসছে। আমি প্রশাসনের কাছে আমার
নিরাপত্তা চেয়ে তাদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
কুমিল্লা কোতয়ালী
মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আহাম্মদ সঞ্জুর মোরশেদ বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর
ভিডিও দেখে আসামিদের চিহ্নিত করে আটকের জন্য চেষ্টা চলছে।