শিরোনাম দেখেই হয়ত বলে
দেওয়া যায় ঠিক কতটা একপেশে এক ম্যাচ খেলেছে ইংল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ড।
রাজসিক প্রত্যাবর্তন বলতে যা বোঝায়, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঠিক সেটাই
করেছেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক বেন স্টোকস। অবসর ভেঙে ওয়ানডে ফরম্যাটে
ফিরেই গড়েছেন নতুন রেকর্ড। আর বল হাতে তার সতীর্থরা রীতিমত গুঁড়িয়ে দিয়েছেন
প্রতিপক্ষকে। নিউজিল্যান্ডের পুরো দল মিলে স্টোকসের ইনিংস টপকাতে পেরেছে
সেটাই অবশ্য স্বান্তনা।
জস বাটলারের অনুরোধে অবসর ভেঙ্গে ইংলিশদের রঙিন
জার্সি গায়ে চাপিয়েছেন স্টোকস। প্রথম ম্যাচে ফিফটি পেয়ে জানান দিয়েছিলেন
ফুরিয়ে যাননি তিনি। মাঝের এক ম্যাচ বাদ দিয়ে গতকাল যেন বুঝিয়ে দিলেন, এখনও
সাদা বলের ক্রিকেটে রাজত্ব করার সময় আছে তার।
বেন স্টোকস যখন নামেন,
তখন ক্রিজে ছড়ি ঘোরাচ্ছেন ট্রেন্ট বোল্ট। ১৩ রানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে
ইংল্যান্ড। সেখান থেকেই ডেভিড মালানের সঙ্গে স্টোকস খেললেন অতিমানবীয়
ইনিংস। মালান নিজেও চাপে ছিলেন। বিশ্বকাপ দলে কেন জায়গা পেয়েছেন, সেই
প্রশ্ন হচ্ছিল বারবার। স্টোকসকে সঙ্গ দিয়ে গড়লেন ১৬৫ বলে ১৯৯ রানের জুটি।
স্টোকস
নিজে খেললেন রেকর্ডগড়া ইনিংস। স্টোকস করেছেন ১২৪ বলে ১৮২ রান। ৪৪ বলে
ফিফটি পূর্ণ করার পর ৭৬ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই বাঁহাতি। ইনিংসে সব
মিলিয়ে মারেন ১৫টি চার ও ৯টি ছক্কা। ইংলিশ ক্রিকেটের ইতিহাসে ওয়ানডেতে
সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে স্টোকসের এটি চতুর্থ
সেঞ্চুরি।
চারে নেমে কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ ইনিংসটি (ভিভ
রিচার্ডসের ১৮৯) অবশ্য ভাঙতে পারেননি । বেন লিস্টারের ফুলটসে ডিপ স্কয়ার
লেগে ক্যাচ দিয়ে থামেন স্টোকস। স্টোকসকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া ডেভিড মালানও
পুড়েছেন আক্ষেপে। ৫২ বলে ফিফটি করার পর এগিয়ে যাচ্ছিলেন সেঞ্চুরির দিকে। ৯৫
বলে ৯৬ করে বোল্টের দারুণ এক বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন। ৯৬ রানের
ইনিংস সাজিয়েছেন ১২ চার এবং ১ ছয় দিয়ে।
ম্যালান ফেরার পর জস বাটলারের
সঙ্গে স্টোকসের জুটি। দুজন মিলে ৪৬ বলে করেছেন ৭৮ রান। বাটলার ফেলার পর
লিয়াম লিভিংস্টোনের সঙ্গে স্টোকস যোগ করেছেন আরও ৪৬ রান। স্টোকস ফিরেছেন
৩৪৮ রানে। পরের ২০ রান যোগ করতেই শেষ ইংল্যান্ড। ৩৬৮ রানে থেমেছে ইংলিশরা। ৫
উইকেট নিয়ে কিউইদের সেরা বোলার ট্রেন্ট বোল্ট।
ম্যাচ জিততে গেলে
দারুণ কিছু করতে হতো নিউজিল্যান্ডকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এর আগে কোনো দলই
এত রান তাড়া করে জেতেনি। আর কিউইরা এদিন ছিল আরও বেশি সাদামাটা। গ্লেন
ফিলিপসের ৭৬ বলে ৭২ রানের ইনিংস সরিয়ে রাখলে পুরোপুরি ব্যর্থ নিউজিল্যান্ড।
১০০ রানের আগেই শীর্ষ ৫ ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলেছিল দলটি। ড্যারেল মিচেল,
রাচিন রবীন্দ্র ও কাইল জেমিসনকে নিয়ে ব্যবধান কমানোর চেষ্টাই করেছেন
ফিলিপস। ইংল্যান্ডের হয়ে ক্রিস ওকস ও লিয়াম লিভিংস্টোন নেন ৩টি করে উইকেট।