নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লার যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার এক আসামিকে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দরে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। দুবাই থেকে
ভারত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের সময় বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে ওই আসামিকে
গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ বাদল রিয়াজ (৪৮)।
তিনি কুমিল্লার তিতাস উপজেলার আলোচিত যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪০) হত্যার
মামলার ৫ নম্বর আসামি। হত্যার পর থেকে বাদল পলাতক ছিলেন। আখাউড়া ইমিগ্রেশন
চেকপোস্টের পুলিশ তাঁকে আখাউড়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
আখাউড়া
ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. হাসান আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ওই
ব্যক্তি একটি হত্যা মামলার পলাতক আসামি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ
বিষয়ে ইমিগ্রেশন পুলিশকে জানিয়েছিলেন। তাঁর পাসপোর্টটি কালো তালিকাভুক্ত
করা ছিল। আজ বিকেলে ত্রিপুরার রাজ্যের আগরতলা হয়ে আখাউড়া ইমিগ্রেশনে এলে
তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৩ এপ্রিল রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দির
গৌরীপুর পশ্চিমবাজার ঈদগাহ এলাকায় বোরকা পরে একদল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত খুব
কাছ থেকে জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে।
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত
কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুল ইসলাম বলেন, যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার ওই আসামি
আখাউড়া থানার পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। কুমিল্লা থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল
আখাউড়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। তারা আখাউড়া পৌঁছালে আটক ওই আসামিকে
হস্তান্তর করা হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিহত জামাল হোসেন তিতাস উপজেলা
যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। তিনি তিতাসের জিয়ারকান্দি ইউনিয়নের
জিয়ারকান্দি নোয়াগাঁও গ্রামের ফজলুল হকের ছেলে। গৌরীপুর পশ্চিম বাজার
এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। চলতি বছরের গত ২৩ এপ্রিল রাত ৮টা ২০ মিনিটে
জামাল হোসেন হত্যার শিকার হন। পূর্বশত্রুতা ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের
জেরে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার গৌরীপুর পশ্চিমবাজার ঈদগাহ এলাকায় বোরকা
পরে একদল অস্ত্রধারী দুর্বৃত্ত খুব কাছ থেকে জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যা
করে। বুকে ও কপালে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। এরপর সেখানে জামালকে পড়ে থাকতে দেখে
ব্যবসায়ী ও পথচারীরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসক তাঁকে মৃত
ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ২ মে রাতে জামাল হোসেনের স্ত্রী পপি আক্তার বাদী
হয়ে দাউদকান্দি থানায় নয়জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা সাত-আটজনকে আসামি করে
হত্যা মামলা করেন। ৬ মে এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
তাঁরা হলেন তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মো. ইসমাইল (চট্টগ্রামের
আগ্রাবাদ থেকে গ্রেপ্তার), মনাইরকান্দি গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা আওয়ামী
লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান
শাহিনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার (ঢাকার রায়েরবাগ থেকে গ্রেপ্তার) এবং
দাউদকান্দি উপজেলার গোপচর গ্রামের শাহআলম (ঢাকার মিরপুর থেকে গ্রেপ্তার)। এ
ছাড়া ৯ মে রাত সাড়ে ১২টায় কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার নিমসার থেকে আরেক
আসামিকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। ওই ব্যক্তি হলেন দেবীদ্বার উপজেলা
বরকামতা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ওষুধের দোকানদার মাজহারুল
ইসলাম।
পুলিশ হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ৩টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২৪টি গুলি,
হত্যাকা-ের সময় ব্যবহৃত ৭টি মুঠোফোন, ২টি নেকাব (বোরকার) ও ১টি জিনস
প্যান্ট উদ্ধার করে।