
ন্যাশনাল
আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) সভাপতি, উপমহাদেশে বাম রাজনীতির অন্যতম পুরোধা ও
মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের
৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার (২৩ আগস্ট)। ২০১৯ সালের এই দিনে সন্ধ্যা ৭টা
৪৯ মিনিটে তিনি রাজধানীর অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান
তিনি। দেবিদ্বার উপজেলা ন্যাপের সভাপতি অনিল চক্রবর্তী জানান, দলের পক্ষ
থেকে ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মরহুমের গ্রামের বাড়ি দেবিদ্বার উপজেলার
এলাহাবাদে তাঁর কবরে পুস্পস্তবক অর্পণ ও স্মরণসভার আয়োজন করা হয়েছে।
আলোচনায় ন্যাপ, আওয়ামী লীগ, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ
অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশসহ বাম ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনীতিতে
কিংবদন্তি তুল্য মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লার দেবিদ্বারের
এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। নিজেকে তিনি সবসময় ‘কুঁড়েঘরের মোজাফফর’
বলে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। মোজাফফর আহমদের রাজনৈতিক জীবনের শুরু ১৯৩৭
সালে। তিনি ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
রাজনীতির পাশাপাশি তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা কলেজসহ বিভিন্ন কলেজে
শিক্ষকতা করেছেন। ১৯৫৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতির অধ্যাপনা ছেড়ে
সম্পূর্ণভাবে রাজনীতিতে যুক্ত হন। মুক্তিযুদ্ধে অবদানস্বরূপ সরকার ২০১৫
সালে তাকে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত করলেও তিনি সবিনয়ে তা ফিরিয়ে দেন।
অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ ১৯২২ সালের ১৪ এপ্রিল কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার
উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আলহাজ্ব কেয়াম
উদ্দিন ভূইয়া, মায়ের নাম আফজারুন্নেছা। বাবা ছিলেন একজন স্কুলশিক্ষক।
মোজাফফর আহমদ স্থানীয় হোসেনতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক, জাফরগঞ্জ রাজ
ইনস্টিটিউশন ও দেবিদ্বার রেয়াজউদ্দিন পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক এবং
ভিক্টোরিয়া কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি গ্রহণ করেন এবং ইউনেস্কো
থেকে ডিপ্লোমা লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকার তথা
মুজিবনগর সরকার ছয় সদস্যের যে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করেছিল তাদের মধ্যে
অন্যতম ছিলেন অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ। তিনি স্বাধীনতার পক্ষে আন্তর্জাতিক
সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে সফর করেন। সে সময় তিনি
জাতিসংঘে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ন্যাপ,
সিপিবি ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ গেরিলা বাহিনী গঠন করেন।
