সমাজে ইসলামের সত্যিকারের বার্তা পৌঁছানোর সরকারি পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সারা দেশে আরও ৫০টি মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (৩০ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে পঞ্চম পর্বে আটটি বিভাগের ৩৪টি জেলার এসব মসজিদ উদ্বোধন করেন। এর মধ্যে কুমিল্লা সদর ও নাঙ্গলকোট উপজেলা মডেল মসজিদ রয়েছে।
সারা দেশে ৯ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬৪টির মধ্যে নতুন এই ৫০টিসহ এ পর্যন্ত ২৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগে তিনি ২০২১ সালের ৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ সালের ১৬ জানুয়ারি, ১৬ মার্চ, ১৭ এপ্রিল এবং আজ ৩০ জুলাই- প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম ধাপে প্রতিটিতে ৫০টি করে মসজিদ উদ্বোধন করেন।
অবশিষ্ট মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। মডেল মসজিদ এবং ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থাসহ ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।
এছাড়া হজযাত্রীদের নিবন্ধন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, দাফনের আগে আচার ব্যবস্থা, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, হিফজাখানা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কোরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামিক কনফারেন্স রুম থাকবে। সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড এবং ইসলামী দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র, মসজিদের সাথে দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে মসজিদে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান এবং এর সচিব এমডি এ হামিদ জমাদ্দার অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া। অনুষ্ঠানে কক্সবাজার সদর উপজেলা ও খুলনা জেলার ফুলতলা উপজেলার স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, আলেম-ওলামাসহ সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং দেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা সারা দেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছেন। প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো ইসলামী ভ্রাতৃত্ব এবং এর মূল্যবোধকে প্রচার করা এবং সেইসঙ্গে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।
এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ করবে।
‘এ’ ক্যাটাগরির অধীনে ৬৪টি জেলা ও সিটি করপোরেশন এলাকায় লিফট সুবিধা এবং ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গ মিটার প্রতিটি ফ্লোর স্পেসসহ প্রায় ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে। আর ‘বি’ ক্যাটাগরির অধীনে প্রতিটি ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেস দিয়ে ৪৭৫টি মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সি ক্যাটাগরির অধীনে ১৬টি মসজিদের প্রতিটি ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গ মিটার মেঝে থাকবে।